নিউজ ডেস্ক: গত ১৫ মে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রচারিত হয় করোনা কাল ও পরবর্তী বাংলাদেশ অনলাইন আলোচনা অনুষ্ঠান- BEYOND THE PANDEMIC। অনুষ্ঠানে আলোচ্য বিষয় ছিল- করোনা মহামারী মোকাবিলায় জনসচেতনতা। আলোচনাটি সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদ।
এ বিষয়ে আলোচনা করতে সাথে যুক্ত হয়েছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় তথ্যমন্ত্রী ডঃ হাছান মাহমুদ। আরো যুক্ত হয়েছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। ছিলেন কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম ; মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এডুকেশন অ্যান্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক মেহতাব খানম; স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক প্রফেসর ডা. শাহনীলা ফেরদৌসী, একাত্তর টিভি’র সাংবাদিক ফারজানা রুপা, আন্তর্জাতিক বিজ্ঞাপন নির্মাতা সংস্থা গ্রে ইন্টারন্যাশনাল এর ঢাকা অফিসের ম্যানেজিং পার্টনার এবং ক্রিয়েটিভ চীফ সৈয়দ গাউসুল আলম শাওন এবং স্বনামধন্য অভিনেতা রিয়াজ আহমেদ। পাশাপাশি অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ১০ জন শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই করোনা মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কি কি জনসচেতনতামূলক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে উপস্থাপকের এমন প্রশ্নের জবাবে মাননীয় তথ্যমন্ত্রী ডঃ হাসান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ টেলিভিশনে আমরা বিভিন্ন সচেতনতামূলক ভিডিও নির্মাণ করে প্রচার করি এবং বিভিন্ন ডাক্তারদের নিয়ে করোনা সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করি যা এখনো চলমান রয়েছে। বাংলাদেশ বেতারেও আমরা সমানতালে সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান প্রচার করেছি।
উপস্থাপকের করোনা মোকাবেলায় গণমাধ্যম কি সঠিক ভূমিকা পালন করতে পেরেছে কিনা সে ব্যাপারে সাংবাদিক ফারজানা রূপার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান- কোটি কোটি শিশুরা কিন্তু ঘরে আছে। তার মানে গণমাধ্যম তাদের ভূমিকা পালন করতে পেরেছে বলেই এটি সম্ভব হয়েছে। একাত্তর টিভির এ সাংবাদিকের কাছে আরো জানতে চাওয়া হয়, করোনাকালীন সময়ে টকশোর নামে দুই-চারটি রাজনৈতিক দলের ঝগড়া কি খুব জরুরী? জবাবে তিনি বলেন, সব টিভি চ্যানেল যেমন টকশোর আলোচনার ধারা পরিবর্তন করেছে তেমনি সবাই এখন রাজনৈতিক আলোচনার পরিবর্তে করোনা মোকাবেলায় আমাদের কি করণীয় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করছে।
করোনা মোকাবেলায় প্রচারণার দিকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচারণার জন্য তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে সেই ব্যাপারে উপস্থাপক জানতে চাইলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন- মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের ভাবনার কারণেই করোনা ভাইরাসের এই সময়ে দেশের ১৭ কোটি মানুষ এতো অল্প সময়ে স্বাস্থ্য সেবা, নিত্য খাদ্য সহায়তা, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে নগদ অর্থ এতো সহজে মানুষের কাছে পৌছানো যেতোনা।
করোনা ভাইরাসে পার্সোনাল প্রটেকশন ব্যবহার না করার কারণে অনেক পুলিশ আক্রান্ত হয়েছে। পুলিশের নীতি নির্ধারকরা কি এই ব্যাপারটা শুরুতে মাথায় নেননি? লাইভে প্রশ্ন করা এক দর্শকের এই প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম বলেন, মুজিববর্ষের অঙ্গিকার, পুলিশ হবে জনতার- এই স্লোগানকে সামনে রেখে করোনা মোকাবেলায় মানুষকে ঘরে রাখতে তৎপর হয়ে উঠে বাংলাদেশ পুলিশ। করোনার শুরতে এ মহামারী সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা না থাকা ও কাজের পরিধি বেড়ে যাওয়ায় পুলিশের আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ে প্রতিনিয়ত। এবং যারা আক্রান্ত হয়নি তারা যাতে মনোবল হারিয়ে না ফেলে সেজন্যে পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা সে বিয়য়ে তাদের পরামর্শ দিয়ে নতুন উদ্যমে কাজ করা নিশ্চিত করছি।
করোনা মোকাবেলায় সরকারের যে স্বাস্থ্যবিধি তা জনগণকে মানাতে আমরা কি কৌশল অবলম্বন করতে পারি উপস্থাপকের এমন প্রশ্নের জবাবে মেহতাব খানব বলেন, মানুষকে তার ভাষায়, সে যেভাবে বুঝে তাকে সেভাবে সচেতন করতে হবে।
গাউসুল আযম শাওনের কাছে জানতে চাওয়া হয়, এই মহামারী পরিস্থিতিতে সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্বদের অনেক দায়িত্ব রয়েছে। তাদের করণীয় কি আছে এবং তারা সে ভূমিকাটা রাখছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা নিজেদের জায়গা থেকে মানুষকে সচতন করার জন্য যা যা করনীয় তা করোনা শুরুর পর থেকেই করছি।
বাংলাদেশে যারা জনপ্রিয় ব্যক্তি আছে করোনা মোকাবেলায় বর্তমানে তাদের করণীয় কি হতে পারে উপস্থাপকের এমন প্রশ্নের জবাবে অভিনেতা রিয়াজ বলেন, কি করতে গিয়ে কি করে ফেলি এতে যেহেতু বড় ক্ষতির সম্ভাবনা আছে সেহেতু সরকারী একটা নির্দেশনা ঠিক করে দিলে হয়তো আমাদের জন্য কাজ করতে সুবিধা হতো। আগামী দিনগুলোতে হয়তো করোনার সাথে আমাদের সহাবস্থানে থাকতে হবে, তাই এখন করোনা নিয়েই কীভাবে বাঁচতে পারবো সেই ব্যাপারে এখন ডিটেইল কমিউনেকশনের দরকার হয়ে পড়েছে এখন।
এ অনলাইন অনুষ্ঠান নিয়ে আমরা একটি সার্ভে করেছিলাম। সে সার্ভে থেকে পাওয়া প্রশ্ন, সামনে ঈদ আসছে, মানুষের যাতায়াত এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বেড়ে যাবে। এই ঈদে বাড়ি ফেরা মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি যাতে আর না বাড়ে সেজন্যে আমরা কি করতে পারি? জবাবে প্রফেসর ডঃ শাহনিলা ফেরদৌসি বলেন, আপনারা যে যে যেখানে আছেন সেখানেই অবস্থান করুন। বাড়িতে গিয়ে পরিবারের বয়স্ক সদস্যকে মৃত্যু ঝুকিতে ফেলবেন না।
করোনা প্রাদুর্ভাব নিয়ে অনলাইন আলোচনার এই আয়োজনটির নতুন (২য়) পর্ব ১৯ মে আবারো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে রাত ১০টায় সরাসরি প্রচার করা হবে।