পরলোক গমন করেছেন আলোকিত মানুষ জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। গত বৃহস্পতিবার ঢাকার সিএমএইচে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইহলোক ত্যাগ করেছেন বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী এই কৃতিপুরুষ। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তারঁ মৃত্যু সংবাদ প্রচারিত হওয়ার সাথে সাথে দেশজুড়ে নেমে এসেছে শোকের কালো ছায়া। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অপরাপর রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। ৮৩ বছরের পরিণত বয়সে তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। মহামারী করোনা তাকে ছিনিয়ে নিল। না হালে হয়তো তিনি আরো কিছুদিন আমাদের এ দেশ এ সমাজকে আলোকিত করে রাখতে পারতেন।
ড. আনিসুজ্জামানের জীবনপঞ্জীর দিকে দৃষ্টিপাত করলে দেখা যায়, তিনি তার শিক্ষা, কর্ম, চিন্তা, চেতনাকে নিবদ্ধ করেছিলেন দেশ ও মানুষের কল্যাণচিন্তায়। শিক্ষার জন্য নিবেদিতপ্রাণ এই মহান ব্যক্তিটির দেশাত্মবোধ ছিল প্রবল। তাই বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, উনসত্তুরের গণআন্দোলন এবং আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন অকুতোভয়ে। তাঁর চেতনাজুড়ে ছিল দেশ ও জাতি। তাই যখন সুযোগ এসেছে জাতির জন্য অবদান রাখার, তিনি তাঁর সদ্ব্যবহার করেছেন। পরিণত হয়েছিলেন মহীরুহে। মৃত্যু সে মহীরুহকে আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গেল।
বড় দুঃসময়ে তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। যে মহামারীর কারণে আজ আমরা দিশেহারা, সেই মহামারী করোনাই কেড়ে নিল তাঁর প্রাণ। তবে, তিনি যে করোনায় আক্রান্ত ছিলেন তা জানা গেল তাঁর মৃত্যুর পরে। প্রশ্ন হলো, মাসাধিককাল তিনি বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও পূর্বাহ্নে কেন তাঁর করোনা টেস্ট করা হলো না? তাহলে তো তাঁকে সে অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়া যেত। এ দায়িত্বহীনতার দায় কার? তিনি আর কোনোদিন ফিরে আসবেন না। তবে জাতির এ অভিভাবকের চিকিৎসার ক্ষেত্রে এ অমার্জনীয় অবহেলার বিষয়টি তদন্ত করে দেখা দরকার। যাতে ভবিষ্যতে কারো ক্ষেত্রে এমনটি না হয়।
আমরা অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করি।