শ্যামল কুমার রায়
দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে বাতিঘর খ্যাত বরেণ্য শিক্ষাবিদ, লেখক, গবেষক, জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান গত কয়েকদিন যাবৎ মৃত্যুর সাথে পাঞ্জালড়ে আজ বিকেল ৪-৫৫মিঃ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। মহান এই শিক্ষাবিদ অবিভক্ত ভারতবর্ষের কোলকাতায় ১৯৩৭ খ্রিঃ ১৮ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পরে সপরিবারে খুলনায় চলে আসেন। তার এই মৃত্যুতে দেশ ও জাতির অপুরণীয় ক্ষতি হলো। অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালে গণ অভ্যুত্থান ও ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ ও মুজিবনগর সরকারের প্ল্যানিং কমিশনের সদস্য ছিলেন। স্বাধীনতার পরে ড. কুদরাত ই খুদা জাতীয় শিক্ষা কমিশনের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

অধ্যাপক আনিসুজ্জামান শিক্ষা ও সাহিত্যে অবদান রাখার জন্য একাধিকবার পুরস্কার পেয়েছেন। প্রবন্ধ গবেষণায় অবদানের জন্য ১৯৭০ সালে বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার ও ১৯৮৫ সালে একুশে পদকে ভুষিত হয়েছেন। শিক্ষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্য ভারত সরকার কর্তৃক পদ্মভুষণ পদক লাভ ছাড়াও দুইবার আনন্দ বাজার পত্রিকার আনন্দ পুরস্কার লাভ করেছেন। ২০০৫ সালে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি. লিট ডিগ্রী ও ২০১৮ সালে কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জগত্তারিণী পদক প্রদান করা হয়। একই বছর ১৯ জুন বাংলাদেশ সরকার এই গুণী শিক্ষাবিদকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেন। তিনি নজরুল ইনিষ্টিটিউটের ট্রাষ্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও বাংলা একাডেমীর প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ ষাটের দশকের কিংবদন্তি ছাত্রনেতাদের প্রায় সকলেরই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ছিলেন। মহান এই শিক্ষাবিদের প্রয়াত আত্মার চিরশান্তি কামনাসহ শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
শ্যামল কুমার রায়
সাবেক ছাত্রনেতা ও রাজনীতি বিশ্লেষক।