রেহানা পারভীন
আজ মহাবিচ্ছেদের দিন
আজ থেকেই অনন্তকালের চাওয়া শুরু
চলো হারিয়ে যাওয়ার আগে
একটা প্রতিশ্রুতি দেই,দেহ পুড়ে পুড়ুক
তথাকথিত সমাজ সংস্কারকের হাতে
মনুষ্যত্বের দাহ যেন না হয়।
ভালো থাকুক ভালোবাসারা
গোত্র, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে নির্বিঘ্নে
তোমার আমার আত্মচিৎকার
চুপিসারে নয়, সোল্লাসে কর্ষিত হোক মগজে মগজে।
একেবারে হারিয়ে যাওয়ার আগে আরো একবার আকুতি রাখলাম….
যদি পুনঃজন্ম বলে সত্যিই বিধাতার কোনো পুরষ্কার থেকে থাকে,
সে জনমে তিরষ্কার ভুলবো
সে জনমে হারিয়ে যাবোনা দুজন দুকূলে।
এ জনমের কঠিন সময়
সে জনমে শক্ত হাতের বাঁধনে,
পায়ে পা মিলিয়ে হেঁটে যাবো বহু বহু দূর।
আজকের ফিকে হয়ে যাওয়া সত্তাটাকে উন্মুক্ত ছেড়ে দেবো পাখির ডানায়।
প্রকৃতির মতো বার বার বেঁচে উঠবো সমস্ত প্রাকৃতিক তাণ্ডব উপেক্ষা করেই।
স্রষ্ঠার কাছে করজোড়ে চেয়ে নেবো
একই জীবন
তা যদি হয় মশার আয়ুষ্কাল!
ক্ষতি নেই।
পরের জন্মে না হয় সৃষ্টিকর্তাকে বলবো,
হে প্রতিপালক
জলের তলে মাছ কিংবা যে কোনো
জলপোকার গোত্রস্থ করুন আমাদের
এ জনমের সুখ সাঁতারের সাধ
ইচ্ছেমতো পুষিয়ে নেবো ডুব সাঁতারে!
একি! তোমার চোখের কোনে জল!
আমিও কি কাঁদছি তবে?
পরজনমে কান্না হবো বেশ!
সে আদ্রতায় নিশ্চয়ই
জাত বেজাতের বালাই নেই!
কি বলো!
চোখের জলেও জাত খোয়ানোর ভয়?
তাহলে আমরা ফটিক হবো
ফুটুক জলের আওয়াজ তুলে
বুক শুকানো আর্তনাদ!
চলো আমরা শালিক হই,
দুই শালিকের মিলন বেলায়
ভুবন ভরা প্রেমের মেলায় ভাগ্য হবো।
ফুল!
প্রজাপতি!
মৌমাছির গুনগুন!
স্বর্ণলতা!
অথবা আগাছা।
কিছু তো একটা হবোই হবো!
তোমায় নিয়ে একটা শুধু পুনঃজন্ম চাই
যে জনমে জনম জনম তোমার হওয়া যায়।
যে জনমে পথভ্রষ্টার কলঙ্ক নেই!
যে জনমে সন্তান ধর্মান্তরিত হওয়ার অপরাধে
বাবাদের সমাজচ্যুত হওয়ার হুমকি নেই
যে জনমে প্রেমের মৃত্যু নেই
যে জনমে পাঁজর ছিড়ে
হারিয়ে যেতে হয়না ভালোবাসাদের।
আজ কেউ দীর্ঘশ্বাস ফেলে
আমাদের ফাঁসির দড়িটা
ঢিলা করে দিলেই,
বারবার ফিরবো প্রেমিক প্রেমিকা হয়েই…..
অনন্তকালের পথে….