শাহরিয়ার আদনান শান্তনু
কাহলিল জিবরান তাঁর কবরস্থানে শুইয়ে আছেন। লেবাননের বাশারি গ্রামে। ১৯৩১ সালের ১০ এপ্রিল তারিখে বরেণ্য এই দার্শনিক এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। তাঁর কবরস্থানের দেওয়ালে তাঁরই ইচ্ছে অনুযায়ী লেখা আছে তাঁরই লেখা -‘ আমি তোমাদের মত বেঁচে আছি এবং তোমাদের পাশেই দাঁড়িয়ে আছি। চোখ বন্ধ করে চারদিকে অনুভব করার চেষ্টা করো, আমাকে খুঁজে পাবে।’ কি চরম সত্যি কথা। যাঁরা জিবরান ভক্ত, একটু চোখ বন্ধ করলেই অনুভব করতে পারবেন।
জিবরানের সাহিত্য আর আঁকা ছবি যাদের জীবনে প্রভাব কিংবা দাগ কেটেছে, তাঁরা আজও পড়ছেন তাঁকে। স্মরণ করছেন।
১৮৮৩ সালের ৬ জানুয়ারি লেবাননের জাবাল প্রদেশের জাবাল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর বাবার নাম কাহলিল জিবরান সিনিয়র। মা কামিলেহ রাহমি। বাবাকে নিয়ে জিবরান স্মৃতিচারণ করেছেন -‘ বাবাকে মনে পড়ে কেবল তাঁর সততা, সাহস ও বিশুদ্ধতার জন্য। ‘ মা ছিলেন জিবরানের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।
জিবরানের মা-ই একদিন তাঁকে লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চির ছবির সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। ছোটবেলা থেকে ছবি আঁকা ছিল তার নেশা। ভিঞ্চির ছবি জিবরানকে দারুণ প্রভাবিত করেছিল। মা গান গাইতেন। এমন মা- কে নিয়ে জিবরান লিখেছেন – ‘ মানুষের ঠোঁটে সবচেয়ে মধুর শব্দটি হচ্ছে মা’।
মাত্র ৪৮ বছরের জীবন কালে জিবরান আরবি ও ইংরেজি ভাষায় ৫০টিরও বেশি বই, প্রবন্ধ লিখেছেন। দ্যা প্রফেট(১৯২৩) তাঁকে খ্যাতি এনে দেয় বিশ্বজুড়ে। অন্যান্য গ্রন্থের মধ্যে আছে -The Wanderer, Sand and Foam, The Madman, The Broken Wings, The Forerunner, The Earth Gods, Tears and Laughter, Secrets of the Heart, Between Night and Morn.
১৯৭১ সালে জিবরান স্মরণে লেবানন সরকার ডাকটিকেট প্রকাশ করে। কানাডার মন্ট্রিয়েলে জিবরানের নামে একটি সড়ক আছে। তাঁর আঁকা ছবি নিয়ে আর্ট গ্যালারি আছে বোস্টন ও মেক্সিকোতে। তাঁকে নিয়ে প্রচুর গবেষণা হয়েছে। আজও হচ্ছে। সকল গোঁড়ামিকে তিনি বৃদ্ধাংগুলি দেখিয়ে মানবতাকে তুলে ধরেছিলেন তাঁর সকল সৃষ্টিতে।
কাহলিল জিবরানকে জানাই গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।