নিউজ ডেস্ক: কোভিড-১৯ মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প এবং মাঝারি শিল্পকে (সিএমএসএমই) ‘পুনরুজ্জীবন’ দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত তিনটি পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের আকার বাড়ানো হয়েছে। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প খাতে পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের আকার ৮৫০ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে দেড় হাজার কোট টাকা করা হয়েছে।
কৃষিজাত পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য মফস্বলভিত্তিক শিল্প স্থাপনের তহবিল ৭০০ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে এক হাজার ৪০০ কোটি টাকা। নতুন উদ্যোক্তা পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের আকারও ৫০ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে দ্বিগুণ, অর্থাৎ ১০০ কোটি টাকা হয়েছে।
এই তিন তহবিলের ঋণের গ্রাহক পর্যায়ে সর্বোচ্চ সুদহার হবে ৭ শতাংশ। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে সুদহার হবে ৩ শতাংশ। অর্থাৎ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই তিন তহবিল থেকে ৩ শতাংশ সুদে ঋণ নিয়ে গ্রাহকদের ৭ শতাংশ সুদে বিতরণ করবে।
শনিবার এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা এক সার্কুলারে বলা হয়েছে, “করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প এবং মাঝারি শিল্পের (সিএমএসএমই) পুনরুজ্জীবন প্রক্রিয়া আরও গতিশীল এবং টেকসই করতে চলতি মূলধনের পাশাপাশি মেয়াদি ঋণ/বিনিয়োগের যথাযথ প্রবাহ নিশ্চিতকল্পে এই তিনটি তহবিলের আকার বাড়ানো হয়েছে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক কাজী ছাইদুর রহমান বলেন, চলমান লকডাউনের কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ছোট ও মাঝারি শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সে ক্ষতি পুষিয়ে দিতেই এই তিন তহবিলের আকার বাড়ানো হয়েছে।
করোনাভাইরাস সঙ্কট মোকাবেলায় সরকার প্রায় এক লাখ কোটি টাকার যে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, তার মধ্যে ২০ হাজার কোটি টাকা সিএমএসএমই খাতের জন্য। এই প্রণোদনার অর্ধেক, অর্থ্যাৎ ১০ হাজার কোটি টাকার জোগান দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
শর্ত শিথিল
সার্কুলারে এই তিন তহবিল থেকে পুনঃঅর্থায়ন পেতে যে সব শর্ত ছিল তা থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। ২০১৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বরের সার্কুলারে বলা হয়েছিল, এই তিন তহবিলের আওতায় পুনঃঅর্থায়ন পেতে হলে অংশগ্রহণকারী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণের হার ১০ শতাংশের বেশি হতে পারবে না।
এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত হারে মূলধন পর্যাপ্ততা- নগদ সংরক্ষেণের হার (সিআরআর) এবং বিধিবদ্ধ তরল সম্পদ সংরক্ষণের হার (এসএলআর) সংরক্ষণ করতে হবে। শনিবারের নতুন সার্কুলারে এই দুটি শর্ত রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর জন্য প্রযোজ্য হবে না বলে জানানো হয়েছে।
একইসঙ্গে গ্রাহকদের ঋণ পাওয়ার শর্তও শিথিল করা হয়েছে। আগের সার্কুলারে শর্ত ছিল, এই তিন তহবিল থেকে ঋণ নিতে হলে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা ন্যূনতম পাঁচ বছর হতে হবে। নতুন সার্কুলারে তা কমিয়ে তিন বছর করা হয়েছে। ২০১৪ সালে এই তহবিল তিনটি গঠন করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।