জয়পুরহাট প্রতিনিধি ঃ জয়পুরহাট জেলায় এ পর্যন্ত করোনা সন্দেহে ৩৪৯ জনের নমুনা সংগ্রহ করে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের ল্যাবরেটারীতে পাঠানো হলে ১৫০ জনের টেষ্ট রেজাল্ট পাওয়া যায়। তার মেধ্য ১৪৬ জনের নমুনা নেগেটিভ পাওয়া গেলেও ৪ জনে করোনা পজেটিভ পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত জেলায় মোট ৯০৪ জনকে সেফ কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছিলো তাদের মধ্যে ৪১৪ জন অবমুক্ত হয়েছেন, বর্তমানে ৪৯০ জন কোয়ারেন্টাইনে আছেন। জেলায় কোভিড-১৯ চিকিৎসার প্রস্তুতি হিসাবে সরকারী ভাবে ২৪০ টি বেড, ১৪ জন ডাক্টার ও ১৪ জন নার্স প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তাড়াও চিকাৎসায় ব্যাক্তিগত সুরক্ষায় ২৯১২ সেট পিপিই মজুদ রাখা হয়েছে। জেলার ৫ টি উপজেলা ও পৌর এলাকায় এ পর্যন্ত সরকারী ভাবে ৬৭৯১০টি পরিবারের মধ্যে ৬৭৯.১০০ মেট্রিক টন চাল বিতরণে করা হয়েছে, এছাড়াও ৭৩৮৫ টি পরিবারের মাঝে নগদ ৩৪,২০,০০০ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন ও পৌরসভার উদ্যোগে পৌর শহরের মাছ বাজার, হাটসহ কাচাবাজার বৃহৎ পরিসরে নিকটস্থ কলেজের মাঠে ও কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে স্থানান্তর করা হয়েছে। বিশ্ব মহামারী করোনাভাইরাস এর সংক্রমণ প্রতিরোধে জয়পুরহাট সদর উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক গৃহীত কর্মসূচি কার্যক্রমে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা পরিষদের হলরুমে একটি প্রেস কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রেস কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাকীর হোসেন। প্রেস কনফারেন্সে জেলার পাঁচটি উপজেলার প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার শতাধিক সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া সভায় যে কোনো মূল্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং ত্রাণ বিতরণে যে কোনো ধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। অন্য দিকে জয়পুরহাটে পোল্ট্রি ভিলেজ খ্যাত আক্কেলপুর উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন পোল্ট্রি খামারীরা করোনা পরিস্থিতিতে ব্যবসা বাণিজ্যে চরম বিপাকে পড়েছে। তাদের কোটি কোটি টাকার ব্যবসায়ীক ক্ষতি হচ্ছে। আক্কেলপুর উপজেলার মেসার্স সিনহা পোল্ট্রি এ্যান্ড হ্যাচারীর বড় ব্যবসায়ী খামারী হারুনুর রশিদ রাজা, একই উপজেলার জামালগঞ্জের আদিল পোল্ট্রি এ্যান্ড হ্যাচারীর আরিফ ইফতেখার আহমেদ রানা, এস.বি পোল্ট্রি এ্যান্ড হ্যাচারীর ইসমাইল হোসেন টুকু, জয়পুরহাট সদরের মেহেদী পোল্ট্রি এ্যান্ড হ্যাচারীর আব্দুল মান্নান, পাঁচবিবি উপজেলার মেসার্স আশা পোল্ট্রি এ্যান্ড হ্যাচারীর বেলাল চৌধুরী গন জানান, তাদের কারো ৫০ হাজার, কারো ১ লক্ষ, কারো ৪০ হাজার ডিম ও মাংসের রেডি মুরগী রয়েছে। ১টি ডিম তৈরি করতে উৎপাদন খরচ পড়ছে ৭-৮ টাকা, ডিম ও সোনালী বাচ্চা তৈরি করতে খরচ পরছে ১২ টাকা। তাদের বিক্রি করতে হচ্ছে ৪-৫ টাকায়। মাংসের মুরগী তৈরি করতে খরচ পড়ছে প্রতি কেজিতে ১৫০-১৬০ টাকা। বিক্রি করতে হচ্ছে ১১০-১২০ টাকায়। এছাড়াও বিভিন্ন রোগেও অনেক অনেক মুরগী মারা যাচ্ছে। এভাবে তাদের প্রত্যেকে খামারীকে এখুনি ৫০-৬০ লক্ষ টাকার ক্ষতি গুনতে হচ্ছে। সামগ্রীক ভাবে তাদের প্রান্তিক খামারীগণ ইতিমধ্যেই নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। তারাও ধুকতে ধূকতে দিন পার করছে। সার্বিকভাবে জেলার প্রায় ১০ হাজারের মতো খামারীরা শত শত কোটি টাকার লোকসান গুনছে। এ ব্যাপারে জেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মাহফুজুর রহমান জানান, জেলার প্রান্তিক চাষীসহ বড় খামারী ১০ হাজারের মতো। প্রান্তিক চাষীদের বাচিয়ে রাখতে যত দ্রুত সম্ভব আর্থিক সাহায্য দিতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। বড় খামারীদের সরকার ঘোষিত প্রণোদনা অনুযায়ী কম সুদের ঋণের আর্থিক সহায়তা দ্রুত আমাদের জেলায় পৌছাতেও অনুরোধ করেছি। জেলা প্রশাসক মোঃ জাকির হোসেন জানান, একই মতের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ উর্ধ্বতন পক্ষকে অবহিত করেছেন।