নিউজ ডেস্ক: করোনার প্রকোপে গোটা দেশের কাজ-কারবার লাটে ওঠার জোগাড় হয়ে গিয়েছে। সেখানে একমাত্র সক্রিয় কারবার চলছে সীমান্ত এলাকায়। করোনা আতঙ্কের চাদরের আড়ালে সোনা পাচারের কারবার থেমে নেই। এই সময়টার ফায়দা তুলতে তৎপর হয়ে উঠেছে পাচারকারীরা। খাতায়-কলমে সিল করে দেওয়া হয়েছে সীমান্ত। কিন্তু, কাঁটাতারের বেড়ার ফাঁক গলে প্রতিনিয়ত আসছে সোনা। এই খবর আসছে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থার অফিসারদের কাছে। অথচ, পাচারকারী যদি করোনা আক্রান্ত হয়, তাহলে তাঁরাও সংক্রমিত হবেন। এই ভয়ে কেউ ঝুঁকি নিয়ে এগনোর সাহস দেখাচ্ছেন না। তাই পাচারের খবর জেনেও বসে বসে হাত কামড়াতে হচ্ছে গোয়েন্দাদের।
শোনা যাচ্ছে, লকডাউনপর্ব শেষ হলেই বাড়বে সোনার দাম। বাড়তি মুনাফা পাওয়া যাবে। তাই এখন এই সোনা এনে জমিয়ে রাখতে চাইছে চোরাকারবারিরা। সূত্রের খবর, বাংলাদেশে লকডাউনের আগে বিপুল পরিমাণ সোনা এসেছে বিদেশ থেকে। যা সীমান্ত পার করে এখানকার এজেন্টদের হাতে দিতে চাইছে সেদেশে অবৈধ কারবারে যুক্ত ব্যবসায়ীরা।
শুল্ক দপ্তর বা ডিআরআই কর্তাদের কাছে খবর আসছে, প্রতিদিন বিএসএফের নজর এড়িয়ে ভালো পরিমাণ সোনা এরাজ্যে ঢুকছে। যার বেশিরভাগটাই আসছে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট ও মালদহ সীমান্ত দিয়ে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার এক অফিসারের কথায়, এখন ট্রেন-বাস দুই-ই বন্ধ। তাই অ্যাম্বুলেন্সকে ব্যবহার করছে সোনা পাচারে যুক্ত ব্যক্তিরা। এজেন্টদের মধ্যে কেউ একজন রোগী সাজছে। লাগানো থাকছে অক্সিজেনের নল। অ্যাম্বুলেন্সের সিটের নীচে লুকোনো থাকছে চোরাই সোনা। পুলিস রাস্তায় ধরলেও রোগী দেখে ছেড়ে দিচ্ছে। রোগী নিয়ে যাওয়া অ্যাম্বুলেন্সে উঠে তল্লাশি করলে প্রশ্ন উঠবে বলে পুলিস কর্মীরা ছেড়েই দিচ্ছেন।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসারদের বক্তব্য, দিনে গড়ে দু তিনটি খবর আসছে এই কায়দায় সোনা পাচারের। তাঁদের কথায়, এক্ষেত্রে করোনা বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রোগী সেজে যে বা যারা বসে থাকছে, তারা সত্যিই এই রোগে আক্রান্ত কি না কারও জানা নেই। তাই কাউকে ধরার পর যদি দেখা যায়, তিনি প্রকৃতই করোনা আক্রান্ত, তাহলে তাঁকে রাখা হবে কোথায়! আর টহলদারি পুলিসের দলটির সদস্যেরও সংক্রমণের আশঙ্কা থাকবে। এতে বিপদ আরও বাড়বে। যে কারণে খবর এলেও ভয়ে তাঁরা এগোতে পারছেন না। তাই নজরদারির মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে হচ্ছে কাজ।