হারাগাছে মসজিদের আদায়কৃত টাকার হিসাব নিয়ে সংঘর্ষ, নিহত একজন
প্রকাশ : 2021-04-16 15:57:32১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছে মসজিদের সাহার্য্যর আদায়কৃত টাকার হিসেব নিয়ে দুইপক্ষের সংঘর্ষে নাজমুল হক নজু (৪৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ২ জন। গত বৃহস্পতিবার রাত ৮ টার দিকে হারাগাছ পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের সারাই চেয়ারম্যানটারী গ্রামে হরিণ টারী জুম্মাপাড়া জামে মসজিদের পাশে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ ৪ জনকে আটক করেছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ওই মসজিদের নতুন ও পুরাতন কমিটির সদস্যদের মধ্যে সাহার্য্যর টাকার হিসেব নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। মসজিদের উন্নয়নের লক্ষ্যে নতুন কমিটির সদস্যরা মুসল্লিসহ স্থানীয়দের কাছ থেকে সাহার্য্য আদায় করছিলেন। এরমধ্যে সাহার্য্যর ২৫ শতাংশ টাকা আদায়কারীরা নিতেন। এই ২৫ শতাংশ টাকা নেয়াকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার জোহরের নামাজের পর নতুন কমিটির সদস্য আব্দুল বারী ভেল্টুর (৫০) সঙ্গে পুরাতন কমিটির সদস্য নুর আলমের ভাই দয়ালের মাঝে কথাকাটাকাটি হয়। পরে এরেই জের ধরে মাগরিবের নামাজ শেষে আবারও এ বিষয় নিয়ে দুইপক্ষের মাঝে কথা কাটাকাটি হয়।
এসময় সাধারণ মুসল্লিরা তাদেরকে শান্ত করেন। পরে মসজিদ থেকে বাড়িতে ফেরার পথে আব্দুল বারী ভেল্টুর দুই ছেলে রিপন ও জীবন সহ কয়েকজন মিলে নুর আলমের ভাই দয়াল ও তার পক্ষের লোকজনের ওপর দেশীয়ে অস্ত্র ও লাঠিসোটা সহ হামলা চালায়। এতে দুইপক্ষের সংঘর্ষে দয়ালের ভগ্নিপতি হারাগাছ পৌরসভার সৎবাজার এলাকার মৃত আব্দুল হকের ছেলে নাজমুল হক নজু (৪৫) সহ নূর আলম ও দয়াল আহত হন। পরে নাজমুল ও দয়ালকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ৯টার দিকে নাজমুল হক নজু মারা যান। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত জনতা ভেল্টুর বাড়িতে হামলা চালানোর চেষ্টা চালায়। পুলিশ দ্রুত ঘটনা স্থলে পৌঁছায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। হারাগাছ মেট্রো থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে অভিযান চালিয়ে আব্দুল বারী ভেল্টু, তার স্ত্রী স্বপ্না এবং দুই ছেলে রিপন (১৮) এবং জীবন মিয়া (১৬) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
সংশ্লিষ্ট ৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাইদুল ইসলাম সবুজ বলেন, নিহত নাজমুলের বাড়ি গঙ্গাচড়া উপজেলার সৎবাজার হলেও হারাগাছে একটি বিড়ি ফ্যাক্টরীতে চাকুরী করার কারণে তিনি হারাগাছ পৌর সভার সারাই চেয়ারম্যানটারী এলাকায় তার শ্বশুর বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন। মসজিদের টাকা নিয়ে এ ধরনের সংঘাত দুঃখজনক বলে ওই কাউন্সিলর মন্তব্য করেন। হারাগাছ মেট্রো থানার ওসি রেজাউল করিম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার পর পরেই পুলিশ ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষ আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।