সিরাজদিখানে জোর করে ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রি, থানায় অভিযোগ
প্রকাশ : 2021-06-28 20:31:31১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
মুন্সীগঞ্জ সিরাজদিখান উপজেলায় লতব্দী চন্ডীবর্দ্দী মৌজার খিদিরপুর এলাকায় ভূমিদস্যুর নেতৃত্বে ১০-১৫ জন কৃষকের ফসলি জমি থেকে জোর করে মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মাটি কেটে নেওয়ায় এসব জমিতে কয়েক বছর ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা। মাটি কাটার ঘটনায় জড়িত ওই ব্যক্তিদের নাম মোঃ শামীম (৩০) ও মোঃ শাহিন। তাঁদের বাড়ি লতবদী ইউনিয়নের খিদিরপুর এলাকায়।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম বলেন, ‘ফসলি জমির মাটি কাটার বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তারপরও ওই ভূমিদুস্যদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্থানীয় কয়েকজন কৃষক বলেন, ছয় মাস ধরে শামীম সরকারের নেতৃত্বে চার-পাঁচজন (ভেকু)শ্রমিক নিয়োগ করে জমির মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। তাঁরা প্রতিদিন ১০-১৫ ট্রাক মাটি বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করছেন। এসব মাটি রাস্তা ভরাট, ইটের ভাটা, বসতঘর নির্মাণসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
সোমবার দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, লতব্দী চন্ডীবর্দ্দী খিদিরপুর সংলগ্ন চক এলাকায় ২০-২৫ একর ফসলি জমি থেকে এক্সকাভেটর দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। এতে জমির বিভিন্ন স্থানে ৭-৮ ফুট গভীর গর্তের সৃস্টি হয়েছে। খিদিরপুর গ্রামের মোজ্জাম্মেল হোসেন পিন্টু অভিযোগ করেন, মৃত আওলাদ হোসেন সেন্টুর ছেলে মোঃ শামীম তাঁর ৩ একর ৫০ শতাংশ জমি থেকে মাটি কেটে নিয়েছেন। তাতে তাঁর জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জমির মধ্যে বড় বড় গর্তের সৃস্টি হয়েছে। ফলে তিনি এবার জমিতে কোনো ফসল চাষ করতে পারেননি। মাটি কাটতে অনেক নিষেধ করা হলেও শামীম ও তার ভাই শাহিন কোন কথা তার শোনেননি। বাধা দিতে গেলে তাঁর (শামীম) বাহিনী দিয়ে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে। খিদিরপুর গ্রামের মাহবুব হোসেন রন্টু বলেন, তাঁর ১ একর জমি থেকে এক্সকাভেটর দিয়ে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। মাটি তুলে বিক্রি করে দেওয়ায় শামীমসহ প্রভাবশালীরা লাভবান হলেও তাঁর জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এবার তিনি ওইসব জমিতে কোনো চাষাবাদ করতে পারেননি।
দেলোয়ার হোসেন বলেন, চন্ডীবর্দ্দী চক এলাকায় তাঁর জমি আছে। জোর করে ভূমিদস্যুরা ওইসব জমির মাটি কেটে বিক্রি করছেন। জমি তাঁর হলেও ভূমিদস্যুরা তাদের জমি দাবি করে মাটি কেটে বিক্রি করছেন। বাধা দিতে গেলে নানা ধরনের হুমকি ও হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। এতে তিনিও ওইসব জমিতে এবার কোনো চাষাবাদ করতে পারি নাই তাই আজ সোমবার দুপুরে সিরাজদিখান থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি। অন্যের জমি থেকে মাটি কাটার অভিযোগ অস্বীকার করে শামীম বলেন, ‘যেসব জমি থেকে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে, সেসব জমি আমার তা অনেক আগে কাটা হয়েছিল। জমির অনেক মালিকও মাটি বিক্রি করছেন। শুধু আমিই বিক্রি করছি, এটা ঠিক না।
সিরাজদিখান উপজেলা পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন কমিটির সভাপতি কামাল হোসেন মাদবর বলেন, কৃষিজমির উপরিভাগের মাটি কেটে ফেলায় এর উর্বরতা হারিয়ে যায়। তবে ভ’মি দস্যুরা যেভাবে মাটি কেটে বিক্রি করছে, তাতে ওই সব এলাকার কৃষক ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। এ ছাড়া বিষয়টি নতুন জেলা প্রশাসককে জানাতে হবে।