সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে রাজধানীতে তীব্র যানজট, পথে পথে ভোগান্তি

প্রকাশ : 2023-10-12 16:00:47১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে রাজধানীতে তীব্র যানজট, পথে পথে ভোগান্তি

প্তাহের শেষ কর্মদিবসে তীব্র যানজটের মুখোমুখি হচ্ছেন রাজধানীবাসী। এ দিন সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট। এতে দুর্ভোগে পড়েছে নগরবাসী। তীব্র যানজটের ফলে নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেননি চাকরিজীবী, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার পর থেকে সরেজমিনে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট দেখা যায়, রাজধানীর শাহবাগ, বাংলামোটর, মগবাজার, পল্টনসহ আশেপাশের এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। একই চিত্র দেখে গেছে ফার্মগেট হয়ে বিজয় সরণির দিকে। তবে গুলিস্তান, বাংলামোটর, কাওরান বাজার, ফার্মগেট, আসাদগেট, খামার বাড়ি, বিজয় সরণির দিকে সবচেয়ে বেশি যানজট সৃষ্টি হয়। সকাল থেকেই এ দিকের সড়কগুলোতে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। গাড়ি এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকে অনেক সময় ধরে। দীর্ঘক্ষণ গাড়িতে বসে থেকে অনেকে হেঁটে গন্তব্যের দিকে রওনা দেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, সকালে শেরেবাংলা নগর এলাকায় ভিভিআইপি মুভমেন্ট ছিল। এ কারণে মিরপুর রোডের কল্যাণপুর, শ্যামলী, আসাদগেট, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার এলাকায় যানজট ছড়িয়ে পড়ে। পরে সকাল ১০টার দিকে এসব এলাকায় যানজট কিছুটা কমে আসে। তবে বেলা ১১টার পর থেকে মিরপুর রোড, মহাখালী, শাহবাগে যানজট বেড়ে যায়।

বেসরকারি চাকরিজীবী হুমায়ন কবির মিরপুরের ৬০ ফিট সড়ক থেকে সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হন। আড়াই ঘণ্টা পর তিনি সাড়ে ১২টার দিকে গন্তব্যে পৌঁছান। অন্যান্য দিন তার এই পথে এক ঘণ্টা থেকে দেড় ঘণ্টা সময় লাগে।

এদিকে শহরের মতিঝিল থেকে গুলিস্তান হয়ে শাহবাগের রাস্তায় যেখানে যাতায়াত করতে ২০ মিনিটের বেশি লাগে না, সেখানে যানজটের কারণে এক ঘণ্টার ওপরে লাগছে। বিশেষ করে গুলিস্তান মোড়, শাহবাগ সিগন্যাল পার হতে যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে ঠেকেছে। এর বাইরে শান্তিনগর সিগন্যালের কাছেও দেখা দিয়েছে বড় রকমের জটলা।

শাহবাগের পর থেকে বাংলামোটর অবধি দেখা দিয়েছে মাঝারি রকমের যানজট। কিন্তু বাংলামোটর সিগন্যাল এবং কাওরানবাজার সিগন্যাল পার হতে আধঘণ্টার ওপরে সময় লাগছে বলে জানান যাত্রীরা।

ফলে এসব এলাকার অনেক যাত্রী যানবাহন ছেড়ে হেঁটে নিজেদের গন্তব্যের দিকে আগাচ্ছেন। এমন একজন হাবিবুর রহমান বলেন, বাসা থেকে বের হয়ে প্রচণ্ড যানজট দেখে বাসে না উঠে হাতিরঝিলের ওয়াটার বাসে উঠলাম। সেখান থেকে আবার হেঁটে এফডিসি পার হয়ে কারওয়ান বাজার এসে দেখি যানজটের বেহাল দশা। অফিস কলাবাগান হওয়ায় ভাবছি বাকিটুকু রাস্তা হেঁটেই যাবো।

গুলশান-১ সিগন্যাল থেকে মহাখালী রেলগেট পর্যন্ত থেমে থেমে গাড়ি চলছে। ক্রসিং পয়েন্টগুলোতে বড় রকমের জটলা দেখা দিয়েছে। বনানী চেয়ারম্যান বাড়ি থেকে মহাখালীর দিকেও দেখা দিয়েছে যানজট। এসব এলাকার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা বলছেন, সপ্তাহের শেষদিন হওয়ায় গাড়ির চাপ অনেক বেশি। তারা চাপ কমাতে সর্বাত্মক চেষ্টা করছেন।

মূল রাস্তা ছাড়াও ঢাকার অলিগলিতে পড়েছে যানজটের প্রভাব। যানজট এড়াতে রিকশা এবং বাইক অলিগলি হয়ে সামনে আগাতে চাইলে সেখানে বড় রকমের জটলা বাধে। বিশেষ করে হাতিরপুল, পরিবাগ, কলাবাগানের রাস্তায় রিকশা এবং বাইকের বড় রকমের জটলা সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে যানবাহনে থাকা যাত্রীর পাশাপাশি ভোগান্তিতে পড়েছেন পথচারীরাও।

এদের মধ্যে মাহমুদ নামের একজন বলেন, অবস্থা এমন হাঁটার জায়গা অবধি নেই। রাস্তাজুড়ে রিকশার জটলা, ফুটপাত দিয়ে চলছে বাইক। আজকে রাস্তার খুবই বাজে অবস্থা।

কয়েকটি জোনের ট্রাফিক বিভাগের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকালে কিছুটা চাপ ছিল। দুপুরে চাপ বেড়েছে। দুপুর তিনটার পর সন্ধ্যা অবধি চাপ আরও বাড়তে পারে। মূলত শেষ কর্মদিবসে অনেকে ঢাকা ছাড়েন বলে ঢাকার এক্সিট পয়েন্টগুলোতে সন্ধ্যার দিকে আরও যানজট বাড়তে পারে, যার প্রভাব কমবেশি পড়বে রাজধানীর সড়কে।