সঙ্গীত শিল্পী হিসেবেই ছিলেন পরোক্ষ মুক্তিযোদ্ধা কিংবদন্তী আব্দুল জব্বার
প্রকাশ : 2023-08-30 14:17:01১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র হতে প্রচারিত সালাম সালাম হাজার সালাম, জয় বাংলা বাংলার জয় গানগুলো প্রচারিত হয়। গানে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছিলেন। এইসব গানের কন্ঠদাতা আব্দুল জব্বার এর আজ প্রয়াণ দিবস।
তিনি যুুদ্ধের সময়কালে তিনি প্রখ্যাত ভারতীয় কণ্ঠশিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে মুম্বাইয়ের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পক্ষে জনমত তৈরিতে কাজ করেন। তৎকালীন সময়ে কলকাতাতে অবস্থিত বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প ঘুরে হারমোনিয়াম বাজিয়ে গণসঙ্গীত পরিবেশন করেছেন যা মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরণা যুগিয়েছে। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের ত্রাণ তহবিলে সেসময় বিভিন্ন সময় গণসঙ্গীত গেয়ে প্রাপ্ত ১২ লাখ রুপি দান করেছিলেন।
তার গাওয়া গান শুনেনি এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। 'তুমি কি দেখেছ কভু জীবনের পরাজয়' ২০০৬ সালে মার্চ মাস জুড়ে অনুষ্ঠিত বিবিসি বাংলার শ্রোতাদের বিচারে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ২০টি বাংলা গানের তালিকায় স্থান করে নেয়। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত দুটি সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার একুশে পদক (১৯৮০) ও স্বাধীনতা পুরস্কারে (১৯৯৬) ভূষিত হন।
জব্বার ১৯৫৮ সাল থেকে তৎকালীন পাকিস্তান বেতারে তালিকাভুক্ত হন। তিনি ১৯৬২ সালে প্রথম চলচ্চিত্রের জন্য গান করেন। ১৯৬৪ সাল থেকে তিনি বিটিভির নিয়মিত গায়ক হিসেবে পরিচিতি পান। ১৯৬৪ সালে জহির রায়হান পরিচালিত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম রঙ্গিন চলচ্চিত্র সংগমের গানে কণ্ঠ দেন। ১৯৬৮ সালে এতটুকু আশা ছবিতে সত্য সাহার সুরে তার গাওয়া "তুমি কি দেখেছ কভু" গানটি জনপ্রিয়তা অর্জন করে। একই বছর ঢেউয়ের পর ঢেউ ছবিতে রাজা হোসেন খানের সুরে "সুচরিতা যেওনাকো আর কিছুক্ষণ থাকো" গানে কণ্ঠ দেন। রবীন ঘোষের সুরে তিনি পীচ ঢালা পথ (১৯৭০) ছবিতে "পীচ ঢালা এই পথটারে ভালবেসেছি" এবং নাচের পুতুল (১৯৭১) ছবির শিরোনাম গান "নাচের পুতুল"-এ কণ্ঠ দেন।
১৯৭৮ সালে সারেং বৌ চলচ্চিত্রে আলম খানের সুরে "ও..রে নীল দরিয়া" গানটি দর্শকপ্রিয়তা পায়।
২০১৭ সালে এই সঙ্গীত শিল্পীর প্রথম মৌলিক গানের অ্যালবাম কোথায় আমার নীল দরিয়া মুক্তি পায়। অ্যালবামটির গীতিকার মোঃ আমিরুল ইসলাম, সুরকার গোলাম সারোয়ার। একই বছরে তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে লেখা গানের অ্যালবামের কাজ শুরু করেন। গীতিকার আমিরুল ইসলাম রচিত " বঙ্গবন্ধু দেখেছি তোমায় দেখেছি মুক্তিযুদ্ধ " শিরোনামের গানটিতে কণ্ঠ দেয়ার আগেই তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে অ্যালবামের কাজ বন্ধ হয়ে যায়।