শ্রীলঙ্কায় পেট্রোল বিক্রিতে বিধিনিষেধ
প্রকাশ : 2022-06-28 13:44:48১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে নিমজ্জিত শ্রীলঙ্কায় দুই সপ্তাহের জন্য পেট্রোল বিক্রিতে বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এ সময়ে শুধু আপদকালীন বা জরুরি পরিষেবায় যুক্ত গাড়িগুলোতে পেট্রোল ও ডিজেল সরবরাহ করা হবে। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘অপ্রয়োজনীয়’ যানবাহনের জন্য জ্বালানি বিক্রি স্থগিত করা হয়েছে। তবে শুধু বাস, ট্রেন এবং চিকিৎসা সেবা ও খাদ্য পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত যানবাহনে জ্বালানি সরবরাহ করা হবে। আগামী ১০ জুলাই পর্যন্ত ব্যক্তিগত গাড়িতে কোনও পেট্রোল ও ডিজেল বিক্রি করা হবে না।
গত এক সপ্তাহ ধরে কলম্বো ও এর আশপাশের এলাকার স্কুলগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। লোকজনকে বাইরে না গিয়ে ঘরে বসে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তলানিতে ঠেকেছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। ফলে খাদ্যসামগ্রী, ওষুধ, জ্বালানিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী আমদানি করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। মন্ত্রিসভার মুখপাত্র বন্দুলা গুনেওয়ার্দেনা বলেছেন, শ্রীলঙ্কা তার ইতিহাসে আর কখনও এতো বড় অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়েনি।
ব্যাংকিং ইস্যুতে গত সপ্তাহে পূর্ব নির্ধারিত শিডিউল অনুযায়ী জাহাজে পণ্য লোড না হওয়ায় পরের সপ্তাহেও তেল শ্রীলঙ্কায় পৌঁছাবে না বলেও জানিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার জ্বালানিমন্ত্রী কাঞ্চনা উইজেসকেরা। ফলে তেলের নতুন চালান পেতে অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত বিলম্ব হবে বলে জানান তিনি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গাড়ি চালকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন লঙ্কান জ্বালানিমন্ত্রী।
জ্বালানির পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় বিপুল সংখ্যক মানুষ জ্বালানি স্টেশনের বাইরে তাদের গাড়িগুলো সারিবদ্ধভাবে রেখে দিয়েছেন। নতুন করে সরবরাহ শুরু হলে যাতে জ্বালানি নিতে পারেন সেজন্যই এভাবে স্টেশনের বাইরে গাড়ি রেখে দিয়েছেন তারা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সোমবার লাইনে অপেক্ষমাণ মানুষকে টোকেন দিতে দেখা গেছে সেনা সদস্যদের। এর মধ্যেই দুই সপ্তাহের জন্য পেট্রোল বিক্রিতে বিধিনিষেধ জারির খবর এলো।
জ্বালানি চাহিদা মোকাবিলায় সস্তায় তেল কিনতে মন্ত্রীদের কাতার ও রাশিয়া পাঠানোর কথা জানিয়েছে সরকার। সরকার এখন বিদেশি সাহায্যের ওপর ভরসা করে আছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ৩০০ কোটি ডলারের একটি বেইলআউট প্যাকেজ নিয়ে আশাবাদী হলেও তাৎক্ষণিকভাবে এর কিছুটাও পাওয়া যাবে, এমন নিশ্চয়তা নেই। কলম্বোতে নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি এবং স্টেট বিভাগের একটি প্রতিনিধি দল ‘লঙ্কানদের সহায়তার জন্য সবচেয়ে কার্যকর উপায়গুলো অনুসন্ধানের’ বিষয়ে আলোচনার জন্য শ্রীলঙ্কা পৌঁছেছে।
প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে এই মাসের শুরুতে বলেছিলেন, খাদ্য, জ্বালানি ও সারের মতো প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর জন্য আগামী ছয় মাসে দেশটির কমপক্ষে পাঁচ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সরকার কৃষকদের আরও ধান চাষের আহ্বান জানিয়েছে।