শ্রীনগরে ড্রেজার বাণিজ্যে ভোগান্তি, কৃষি জমি ও জলাশয় ভরাট

প্রকাশ : 2023-04-11 15:41:08১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

শ্রীনগরে ড্রেজার বাণিজ্যে ভোগান্তি, কৃষি জমি ও জলাশয় ভরাট

শ্রীনগর উপজেলার বিভিন্ন  সড়কের পাশে চলছে মাটি খেকোদের অবৈধ ড্রেজার বাণিজ্য। উপজেলার শ্রীনগর-বাড়ৈগাঁও-তন্তর সড়কের বাড়ৈগাঁও থেকে তন্তর ৯নং রাস্তার মোড় পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটারের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির উত্তর পাশে অবৈধভাবে ৪টি ড্রেজারের সাব-স্টেশন স্থাপন করে মাটি ভরাট কর্মযজ্ঞ চালানো হচ্ছে।  এর মধ্যে সড়কটির বাড়ৈগাঁও স -মিলের পাশে বাতেনের ১টি, তারাটিয়া ফকির বাড়ি (সাঁচাই ফকির) পাশে মিজানের ১টি, পাড়াগাঁও বাজারের সামনে তোফাজ্জলের ১টি, তন্তর পাল বাড়ির সামনে ৯নং রোডের মোড়ে আনাছ উদ্দিনের ১টি ড্রেজার স্থাপন করা হয়েছে। 

দূর থেকে ড্রাম ট্রাকে বালু এনে এসব ড্রেজার স্টেশনে ভরাট বাণিজ্য করার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে।  স্থানীয়রা বলছেন, সড়কের পাশে ড্রেজার স্টেশন স্থাপনের ফলে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এসব স্থানে ড্রাম ট্রাক আনলোডের কারণে সড়ক জুড়ে বালুর স্তর জমে থাকায় অন্যান্য যান চলাচলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। 

এতে ব্যস্ততম সড়কে মোটরসাইকেল ও অটোরিক্সার চাকা ফেটে মাঝে মধ্যেই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন পথচারীরা। এলাকার সচেতন মহল বলছেন, বেপরোয়া ড্রেজার সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যদের দৌরাত্ব কোন ভাবেই থামানো যাচ্ছেনা।  উপজেলা প্রশাসন অবৈধ ড্রেজার উচ্ছেদ অভিযান ও কৃষি জমি কাটা ও ভরাটের অপরাধে আর্থিক জরিমানা আদায় করছেন। তার পরেও মাটি খেকো সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যদের আটকানো যাচ্ছেনা। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির বেশ কয়েক স্থানে অবৈধভাবে ড্রেজার স্থাপন করে অসংখ্য ধানী জমির ওপর দিয়ে দীর্ঘ পাইপলাইনের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নের প্রধান প্রধান সড়কের চিত্র প্রায়ই একই রকম। যেখানে সেখানে ড্রেজার ব্যবসায়ীরা সড়কের পাশে অবৈধভাবে ড্রেজার স্থাপন করে ভোগান্তির সৃষ্টি করছে। ড্রেজার ব্যবসায়ীরা একদিকে যেমন সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত সড়কের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করছে। অপরদিকে সরকারের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে শতশত বিঘা কৃষি জমি ভরাট করছে। লক্ষ্য করা যাচ্ছে যত্রতত্রভাবে কৃষি জমি কাটা ও ভরাটের ফলে এই অঞ্চলে দিনদিন ফসলি জমির পরিমাণ অনেকাংশে কমতে শুরু করেছে। খাদ্য-শস্য উৎপাদণ সংকটে পড়ার শঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়া জলাধার ও খাল ভরাটের ফলে পানি নিস্কাষনের ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বাড়ছে জলাবদ্ধতা। অভিযুক্ত ড্রেজার সিন্ডিকেট চক্রের অন্যতম সদস্য মো. আনাছউদ্দিনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জমির মালিক আমাকে অনুমতি দিয়েছে। তাই ড্রেজারের সংযোগ দিয়ে ভরাট করছি। আর কারও অনুমতির দরকার নেই। এ চক্রের অন্য সদস্যরা সড়কের পাশে ড্রেজার স্থাপনের বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি।

তন্তর ইউনিয়নের উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা কৃষ্ণ কুমার পালের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব ড্রেজার ও ভরাটের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। এ ব্যাপারে উপজেলা  কৃষি অফিসার মোহসিনা জাহান তোরণ জানান, বিনা অনুমতিতে কৃষি জমির রকম পরিবর্তণ ও ভরাট করা অন্যায়। এখনই খোঁজ নিয়ে দেখছি। শ্রীনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আবু বকর সিদ্দিক জানান, খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।