শেষ ওভারে জিতে সেমিতে দক্ষিণ আফ্রিকা
প্রকাশ : 2024-06-24 12:30:57১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
বড় টুর্নামেন্টে শেষ দিকে খেই হারানোর জন্য বিখ্যাত দক্ষিণ আফ্রিকা। এই কারণেই তো চোকার্স তকমাটা তাদের গায়ে সেঁটে আছে। কিন্তু চলতি আসরে সেই বদনাম মুছে ফেলতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে তারা। গ্রুপ পর্বে শেষ ওভারে থ্রিলারের জন্ম দিয়ে দুটি ম্যাচ জয়ের নজির রেখেছে। সুপার এইটে সেমিফাইনাল নিশ্চিতের ম্যাচেও ব্যতিক্রম হলো না। ওয়েস্ট ইন্ডিজ জয়ের আশা জাগালেও স্নায়ু ধরে রেখে বৃষ্টি আইনে ৩ উইকেটের জয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে প্রোটিয়া দল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ অবশ্য সুপার এইট থেকেই বিদায় নিচ্ছে।
শুরুতে ক্যারিবিয়ানদের ৮ উইকেটে ১৩৫ রানে বেঁধে ফেলে দক্ষিণ আফ্রিকা। বৃষ্টির হানায় ১৭ ওভারে নতুন সেই লক্ষ্য নির্ধারিত হয় ১২৩ রানের।
শুরুতে ১৫ রানের মধ্যে রিজা হেন্ড্রিকস ও ডি কককে ফিরিয়ে প্রোটিয়াদের কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন আন্দ্রে রাসেল। তখনই একরকম চাপে ছিল তারা। বৃষ্টি বিরতির পর নতুন লক্ষ্য নিয়ে নামলে হাল ধরার চেষ্টা করেন অধিনায়ক এইডেন মারক্রাম ও ত্রিস্টান স্টাবস। দলের ৪২ রানে ফেরেন মারক্রাম (১৮)। তার পর ক্লাসেন ও স্টাবস মিলে মেরে খেলা শুরু করেন। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ১৬ বলে ৩৫ রান যোগ করেন তারা।
তাদের ব্যাটে সুবিধাজনক অবস্থাতেই ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ৭৭ রানে ছিল ৩ উইকেট। অষ্টম ওভারের শেষ বলে আলজারি জোসেফের বলে ক্লাসেনের আউটে ভাঙে জুটি। তার পরেও সমস্যা ছিল না। ক্রিজে ছিলেন ডেভিড মিলার ও ত্রিস্টান স্টাবস। এই জুটিতে আঘাত হেনেই প্রোটিয়াদের বিপদে ফেলেছেন অফস্পিনার রোস্টন চেজ। ৭ রানের ব্যবধানে ডেভিড মিলার (৪) ও স্টাবসকে (২৯) ফিরিয়ে ম্যাচে প্রাণ ফেরান তিনি।
দ্রুত দুই উ্ইকেট হারিয়ে তখন স্কোর ১৩ ওভারে ৫ উইকেটে ১০০। ২৪ বলে প্রয়োজন ২৩ রান। এর পরেই তাদের চাপে ফেলতে পেরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ ১২ বলে সমীকরণ দাঁড়ায় ১৩ রানে। ঠিক এমন সময় ১৬তম ওভারে কেশব মহারাজ (২) দ্রুত ফিরলে প্রোটিয়া শিবিরে শঙ্কা জাগে। কিন্তু পেসার কাগিসো রাবাদা ও মার্কো ইয়ানসেন কোনও বিপদ হতে দেননি। ১৬তম ওভারের শেষ বলে একটি চার মেরে ৬ বলে সমীকরণ নিয়ে আসেন ৫ রানে। তার পর শেষ ওভারের প্রথম বলে ছক্কা মেরে দলকে সেমিতে নিতে অবদান রাখেন ইয়ানসেন। কঠিন সময়ে স্নায়ু ধরে রেখে ১৪ বলে ১ চার ও ১ ছক্কায় অপরাজিত ছিলেন ইয়ানসেন।
গতকালকেই এই গ্রুপ-২ থেকে ইংল্যান্ডের সেমি নিশ্চিত হয়েছে। এই ম্যাচের ওপর নির্ভর করছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ-দক্ষিণ আফ্রিকার ভাগ্য। সেই লড়াইয়ে জিতে প্রোটিয়ারা টুর্নামেন্টে অপরাজিতই থাকলো। শীর্ষে থেকে সেমি নিশ্চিত হওয়ায় খুব সম্ভবত তারা জায়ান্ট ভারতকে শেষ চারে এড়াতে পেরেছে।
নর্থ সাউন্ডে ব্যাটিংটা খুব বেশি আহামরি ছিল না ওয়েস্ট স্বাগতিকদের। ৫ রানের ব্যবধানে ফিরে যান শাই হোপ (০) ও নিকোলাস পুরান (১)। তার পর কাইল মেয়ার্স ও রোস্টন চেজের ব্যাটিংয়েই ওয়েস্ট ইন্ডিজ এগিয়েছে। ৮১ রান যোগ করেন তারা। মেয়ার্স ৩৪ বলে শ্লথ গতির ইনিংস খেলে ফিরলে ভাঙে জুটি। তাতে ঘটে ছন্দপতন। দ্রুত তিন উইকেট হারালে দিশা হারায় ক্যারিবীয়দের ইনিংস। হাফসেঞ্চুরি করা রোস্টন চেজ দলকে শত রানের কাছে পৌঁছে দিয়ে ৪২ বলে ৫২ রানে ফিরেছেন। তার ইনিংসে ছিল ৩টি চার ও ২টি ছয়। এর পর আর সেভাবে রান পায়নি তারা। প্রোটিয়াদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৮ উইকেটে ১৩৫ রানে থেমেছে। ২৭ রানে ৩ উইকেট নিয়ে সেরা বোলার ছিলেন তাবরাইজ শামসি। ম্যাচসেরাও তিনি। একটি করে নিয়েছেন মার্কো ইয়ানসেন, এইডেন মারক্রাম, কেশব মহারাজ ও কাগিসো রাবাদা।
কা/আ