শুভ জন্মদিন রুনা লায়লা
প্রকাশ : 2022-11-17 10:01:20১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
বাঙালী প্রখ্যাত শিল্পীদের নাম বলতে গেলে প্রথম শ্রেণীর শিল্পীদের মধ্যে যিনি থাকেন, তিনি আর কেউ নন রুনা লায়লা (১৭ নভেম্বর ১৯৫২)। তিনি একজন খ্যাতনামা বাংলাদেশী কণ্ঠশিল্পী। তিনি বাংলাদেশে চলচ্চিত্র, পপ ও আধুনিক সংগীতের জন্য বিখ্যাত। তবে বাংলাদেশের বাইরে গজল শিল্পী হিসাবে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশে তার সুনাম আছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে থেকেই তিনি চলচ্চিত্রের গায়িকা হিসাবে কাজ শুরু করেন। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতীয় এবং পাকিস্তানি চলচ্চিত্রের অনেক গানে তিনি কণ্ঠ দিয়েছেন। রুনা লায়লা ছিলটি, বাংলা, উর্দু, পাঞ্জাবি, হিন্দি, সিন্ধি, গুজরাটি, বেলুচি, পশতু, ফার্সি, আরবি, মালয়, নেপালি, জাপানি, স্পেনীয়, ফরাসি, লাতিন ও ইংরেজি ভাষাসহ মোট ১৮টি ভাষায় ১০ হাজারেরও বেশি গান করেছেন। পাকিস্তানে তার গান দমাদম মাস্ত কালান্দার অত্যন্ত জনপ্রিয়।
গানের প্রতিভা তিনি নিজের পরিবার থেকেই পেয়েছেন। রুনা লায়লা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের [বর্তমান বাংলাদেশ] সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা সৈয়দ মোহাম্মদ এমদাদ আলী ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা এবং মা আনিতা সেন ওরফে আমেনা লায়লা ছিলেন সংগীত শিল্পী। তার মামা সুবীর সেন ভারতের বিখ্যাত সংগীত শিল্পী। তার যখন আড়াই বছর বয়স তার বাবা রাজশাহী থেকে বদলি হয়ে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের মুলতানে যান। সে সূত্রে তার শৈশব কাটে পাকিস্তানের লাহোরে,তার বাবার বাড়ী রাজশাহীতে।
১৯৬৬ সালে লায়লা উর্দু ভাষার হাম দোনো চলচ্চিত্রে "উনকি নাজরোঁ সে মোহাব্বত কা জো পয়গম মিলা" গান দিয়ে সংগীতাঙ্গনে আলোচনায় আসেন। ১৯৬০-এর দশকে তিনি নিয়মিত পাকিস্তান টেলিভিশনে পরিবেশনা করতে থাকেন। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৪ সালে তিনি জিয়া মহিউদ্দিন শো-তে গান পরিবেশন করতেন এবং ১৯৭০-এর দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দেওয়া শুরু করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি কলকাতায় "সাধের লাউ" [সিলেটি গান] এর রেকর্ড করেন। একই বছর মুম্বাইয়ে তিনি প্রথমবারের মত কনসার্টে সঙ্গীত পরিবেশন করেন। এসময়ে দিল্লিতে তার পরিচালক জয়দেবের সাথে পরিচয় হয়, যিনি তাকে বলিউড চলচ্চিত্রে এবং দূরদর্শনের উদ্বোধনী আয়োজনে গান পরিবেশনের সুযোগ করে দেন। এক সে বাড়কার এক চলচ্চিত্রের শীর্ষ গানের মাধ্যমে তিনি সংগীত পরিচালক কল্যাণজি-আনন্দজির সাথে প্রথম কাজ করেন। এই গানের রেকর্ডিংয়ের সময় প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী লতা মুঙ্গেশকর তাকে আশীর্বাদ করেন। তিনি "ও মেরা বাবু চেল চাবিলা" ও "দামা দম মাস্ত কালান্দার" গান দিয়ে ভারত জুড়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।
রুনা লায়লা চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত শিল্পী নামক চলচ্চিত্রে চিত্রনায়ক আলমগীরের বিপরীতে মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন। শিল্পী চলচ্চিত্রটি ইংরেজি চলচ্চিত্র দ্য বডিগার্ড-এর ছায়া অবলম্বনে চিত্রিত হয়েছে।
সঙ্গীত জগতে অসামান্য অবদানের জন্য তার ঝুলিতে রয়েছে অসংখ্য পুরস্কার।
বাংলাদেশ
স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার
বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ নারী কণ্ঠশিল্পী - দি রেইন
বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ নারী কণ্ঠশিল্পী - যাদুর বাঁশি
বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ নারী কণ্ঠশিল্পী - অ্যাক্সিডেন্ট
বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ নারী কণ্ঠশিল্পী - অন্তরে অন্তরে
বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ নারী কণ্ঠশিল্পী - তুমি আসবে বলে
বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ নারী কণ্ঠশিল্পী - দেবদাস
বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ নারী কণ্ঠশিল্পী - প্রিয়া তুমি সুখী হও
টেলিভিশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ [ট্রাব] পুরস্কার - আজীবন সম্মাননা।
জয়া আলোকিত নারী সম্মাননা
দ্য ডেইলি স্টার-স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড জীবনের জয়গান - আজীবন সম্মাননা
মেরিল-প্রথম আলো আজীবন সম্মাননা পুরস্কার ২০২২
ভারত
সায়গল পুরস্কার
সংগীত মহাসম্মান পুরস্কার - ২০১৩
তুমি অনন্যা সম্মাননা - ২০১৩
দাদা সাহেব ফালকে সম্মাননা - ২০১৬
আজীবন সম্মাননা - টেলিসিনে অ্যাওয়ার্ড - ২০২২, কলকাতা।
পাকিস্তান
নিগার পুরস্কার
ক্রিটিক্স পুরস্কার
গ্র্যাজুয়েট পুরস্কার [২ বার]
জাতীয় সংগীত পরিষদ স্বর্ণপদক
ভক্তগণ তার দীর্ঘজীবনের প্রত্যাশা করে।