শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেলকে ডিআরইউ’তে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
প্রকাশ : 2021-05-20 19:50:06১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে হেনস্তার আংশিক ভিডিও প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অবমাননাকর বক্তব্য দেওয়ার কারণে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)। বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটি দায়িত্বে থাকা অবস্থায় তিনি ডিআরইউতে প্রবেশ করতে পারবেন না।
সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে নির্যাতন ও গ্রেপ্তারের ঘটনায় ডিআরইউর প্রতিবাদ সমাবেশে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে এমন ঘোষণা দেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান খান। ডিআরইউ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত সমাবেশে তিনি বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে গণমাধ্যমের শত্রু হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়ার বিষয়ে প্রয়াস অব্যাহত থাকবে। যদিও স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিজেই নিজেকে গণমাধ্যমের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
এর আগে আওয়ামী লীগের নেতা মহিবুল হাসানের বক্তব্য নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন একাধিক সাংবাদিক নেতা। তাঁরা বলেন, উত্তরাধিকার সূত্রে নেতা বনে গিয়ে কাউকে পাত্তা দিচ্ছেন না। মাঠের রাজনীতি করলে পরিস্থিতি বুঝতে পারতেন।
সাংবাদিক নেতারা বলেন, শুধু রোজিনার মুক্তি নয়, মামলা প্রত্যাহারের পাশাপাশি তাঁকে নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। আন্দোলন বেগবান করতে সাংবাদিকদের সব সংগঠন নিয়ে একটি মোর্চা গঠন করে সমন্বিত কর্মসূচির তাগিদ দেন অনেকে।
আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেন ডিআরইউর সভাপতি মুরসালিন নোমানী। তিনি বলেন, সাংবাদিক রোজিনার মুক্তির দাবিতে কাল শুক্রবার সকাল ১০টায় ডিআরইউ প্রাঙ্গণে মুখে কালো কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ সমাবেশ করা হবে। ধাপে ধাপে কর্মসূচি চলবে। রোজিনার মুক্তির আগ পর্যন্ত কোনোভাবেই আন্দোলন থামবে না।
রোজিনা ইস্যু: ফেসবুক স্ট্যাটাসে যা বললেন শিক্ষা উপমন্ত্রী
তথ্য অধিকার আইনের প্রয়োগ না করে, ন্যুনতম সাক্ষাৎকার চেয়ে, তথ্য না চেয়ে, বেআইনিভাবে সরকারি নথিপত্রের ছবি তুলে সংবাদ সৃষ্টি করা অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা নয়, পরিকল্পিতভাবে চমক সৃষ্টি করা। বস্তুনিষ্ঠতা, নিরপেক্ষতা, সবই গৌন হয়ে যায় যখন বড়সড় মিডিয়া হাউসের নাম সামনে আসে। অন্ধের মতো অনেকে মনে করে উনারা যাই বলবেন, তাই সত্য।
বাস্তবতা হচ্ছে বড় বড় অনেক প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষের কর্ম অপকর্মের সংবাদ এঁরা অনেকেই ছাপান না বা দেখান না। এটি আসলে এক প্রকার অলিখিত সমঝোতা। সত্যিকারের জনস্বার্থ চাইলে, প্রভাবশালী কর্পোরেট স্বার্থকে কেনো ছাড় দেয়া হয়? আমরা চাই সরকার প্রশাসন, রাজনৈতিক দলের অনিয়ম, দূর্নীতি, যেমনি স্বচ্ছতার প্রয়োজনে গণমাধ্যমের মাধ্যমে প্রকাশিত হবে, তেমনি গণমাধ্যমের মালিক পক্ষ কর্পোরেট গ্রুপ সমূহ, কর্তব্যরত সাংবাদিক ভাই বোন, এঁদেরও সবার জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠিত হবে। এঁরাও সর্বসাধারনের স্বার্থে প্রাতিষ্ঠানিক তথ্য প্রাপ্তি, কিভাবে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায় তা সাধারণের কাছে তুলে ধরবেন। আমরা জানি দূর্নীতি বাংলাদেশে একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ, এই চ্যালেঞ্জে গণমাধ্যমের একটি টেকসই ভূমিকা দরকার, শুধুই সেন্সেশন দিয়ে টেকশই ভুমিকা তৈরি হবেনা। স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়কে নিয়ে বা বাংলাদেশ সরকারের যেকোনো প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে দেশের অনেকের অভিযোগ থাকতে পারে। আবার পাশাপাশি দেশের অনেক বৃহৎ বেসরকারি ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর মালিকানাধীন অনেক গনমাধ্যম প্রতিষ্ঠানকে নিয়েও জনগণের অনেক অভিযোগ আছে। কিন্তু আমরা তা প্রকাশিত হতে দেখি খুবই কম। আসলে পক্ষ বিপক্ষ নয়, পরিস্কার হোক মূল ঘটনা।
লেখক: মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল উপমন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়।