শিক্ষকের মর্যাদা রক্ষায় তাঁকে মুক্তি দিন!
প্রকাশ : 2022-04-02 12:31:39১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
মুন্সিগঞ্জ সদরের বিনোদপুর রাম কুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের বিদ্যালয়ের সিনিয়র বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় বণিক এখনো জেলে৷ তার কথিত নিরাপত্তার কথা বলে আটকে রাখা হয়েছে মূলত মৌলবাদীগোষ্ঠীকে খুশি করতেই৷ তাঁকে মুক্তি দিন এবং যেসব প্রতারক শিক্ষার্থী শিক্ষককে প্রশ্ন করে তা রেকর্ড করে ঘৃণা ছড়িয়ে তাঁকে বিতাড়িত করতে চেয়েছে তাদের শাস্তি দিন৷ তাদের অভিভাবকদের নিয়ে সভা করুন৷
শিক্ষক হৃদয় বণিক দশম শ্রেণিতে বিজ্ঞানের ক্লাস নিচ্ছিলেন। প্রসঙ্গক্রমে ছাত্ররা দাবি করছিল- স্যার বিজ্ঞান তো কোরাণ থেকে উৎপত্তি হয়েছে আর সর্বকালের সেরা বিজ্ঞানী হলো আমাদের পেয়ারে নবী মোহাম্মদ সা. যদি এ বিষয়ে কিছু বলতেন?
তখন স্যার বললেন, "দেখ ধর্ম আর বিজ্ঞান আলাদা বিষয়। কোন ধর্ম থেকেই বিজ্ঞান উৎপত্তি হয়নি৷ ধর্ম হলো বিশ্বাস আর বিজ্ঞান প্রমাণিত বিষয়৷ আর বর্তমান যুগের ৯০% বিজ্ঞানী ইহুদি, খ্রিস্টান। তারাতো কোরান পড়ে না।"
আর যায় কোথায়! এতেই শিক্ষার্থীদের অনুভূতিতে আঘাত লাগলো। স্যারের বক্তব্য একজন আগেই গোপনে রেকর্ড করে ফেলেছিল। সবাই প্রধান শিক্ষকের কাছে নালিশ করলো, 'স্যার আমাদের ধর্ম আর নবীর বিরুদ্ধে অবমাননাকর কথা বলছে, আমাদের ধর্মীয় অনুভূতি মারাত্মক আহত হয়েছে'। প্রধান শিক্ষক বললেন, উনাকে কারণ দর্শাও নোটিশ দেয়া হবে এবং তিন দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হবে।
না না তিন দিন সহ্য করা হবে না। শুরু হয়ে গেলো বিক্ষোভ। বহিরাগত লোকজনদের খবর দেয়া হলো। ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, মালাউনের ফাঁসি চাই। শিক্ষকের দুই গালে জুতা মার তালে তালে৷' সেই বিক্ষোভের ছবি ও ভিডিও ঘুরে বেড়াচ্ছে ফেসবুকে, ইউটিউবে৷ তাতে ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে না৷ কিন্তু এতোবড় অন্যায়ের প্রতিবাদ করে পোস্ট দেয়াতে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ আমাকেই ব্যান করলো! তাই ব্যান হওয়ার ঝুঁকি নিয়েই আবারো পোস্টটি দিলাম- শিক্ষকের মর্যাদা রক্ষার জন্য৷
বুঝতে অসুবিধা হয় না এই বয়সেই এদের মগজ এমনভাবে ধোলাই করা হয়েছে এবং বিশ্বাসের ভাইরাস এদের শরীরে প্রবেশ করিয়ে দেয়া হয়েছে। হৃদয় বণিক ভাল গণিত পড়াতেন৷ তার বাড়ি স্কুল থেকে অনেকটা দূরে সিরাজদিখানের কুচিয়ামোড়া এলাকায়৷ অন্য শিক্ষকরাও ঈর্ষান্বিত ছিলেন৷ মৌলবাদিরাও জানতেন ওনি প্রগতিশীল শিক্ষক৷ তাই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে ওই শিক্ষককে বিপদে ফেলেছেন৷ প্রতারক চক্র স্বার্থসিদ্ধির জন্যই শিক্ষার্থীদের মগজধোলাই করে ব্যবহার করেছে৷