শান্তি বজায় রাখার জন্য যা-যা করার আমরা করবো: বান্দরবানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রকাশ : 2024-04-06 19:48:06১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল আজ বলেছেন, পার্বত্য তিন জেলায় অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হয়েছিল। কেউ যদি ভিন্ন উদ্দেশ্যে অন্যের প্ররোচনায় পাহাড়ে অশান্তি করে থাকে আমরা কাউকে ছাড় দেবো না। যেকোন মূল্যে এই এলাকায় শান্তি বজায় রাখার জন্য যা-যা করার আমরা করবো।
শনিবার দুপুরে বান্দরবান সার্কিট হাউসে বান্দরবান জেলার আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত এক সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এমন মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব রয়েছে। ভারত বন্ধুপ্রতিম দেশ। যারা ঘটনা ঘটাচ্ছে তারা যদি বিদেশেও আশ্রয় নেয় তাদেরকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে নিয়ে এসে বিচার করা হবে।
এসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, বান্দরবানের সংসদ সদস্য বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি, বিজিবি’র প্রধান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, আনসার ভিডিপির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম আমিনুল হক, পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, বান্দরবানের পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা, জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন, পুলিশ সুপার সৈকত শাহীনসহ সরকারী বিভিন্ন দপ্তরের উর্ধবতন কর্মকর্তা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন পদ মর্যাদার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এধরনের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আগে থেকে কোন তথ্য ছিল কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এ ঘটনায় কারও কোন গাফেলতি ছিল কি-না, কারো দুরভসন্ধি আছে কি-না, আমাদের পক্ষ থেকে কোন গাফিলতি আছে কি-না সেটাও দেখব।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পাহাড়ে সশস্ত্রগোষ্ঠী সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, একটি সশস্ত্রগোষ্ঠী নিজেদের জানান দেয়ার জন্য যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা জঘন্য অপরাধ করেছে। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। রাষ্ট্র এখানে চুপ থাকতে পারে না। এর জন্য যা-যা করণীয় আমরা সে ব্যবস্থা নেবো। র্যা ব, পুলিশ, আনসারের সদস্য এখানে বৃদ্ধি করা হবে। সীমানা দিয়ে বিজিবি’র কর্মকা- বৃদ্ধি করবো। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় যা করা প্রয়োজন সবকিছু করবো এখানে।
পাহাড়ে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হবে কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী সামরিক বাহিনীকে একটি নির্দেশনা দিয়েছেন। সবাই মিলে এখানে যেন যৌথ বাহিনীর অভিযান চালানো হয়, সেটা চলবে। তবে তার আগে সবাই মিলে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য জোর চেষ্টা করবো। মোটকথা কোন ধরনের অস্ত্রধারী, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজীকে আমাদের মূলভূখ-ে এ ধরনের অন্যায় করতে দেবো না।
এর আগে আজ সকালে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে তিনি প্রথমে বান্দরবানে রুমা উপজেলায় পৌঁছান। পরে তিনি রুমা উপজেলা পরিষদ এলাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, আনসারের ব্যারাক, ডাকাতি হওয়া সোনালী ব্যাংকের শাখা ও উপজেলা মসজিদ পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেন তিনি। পরিদর্শন শেষে এক সংক্ষিপ্ত পরিসরে সাংবাদিকদের সাথেকথা বলেনস্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। পরে দুপুর ১ টায় তিনি হেলিকপ্টারযোগে বান্দরবান সদরে পৌঁছেন। বান্দরবান সার্কিট হাউসে প্রশাসনের বিভিন্ন উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বারে মতবিনিময় করেন। শেষে বিকেল সাড়ে ৩টায় তিনি বান্দরবান সদর থেকে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করেন।
পার্বত্য জেলা বান্দরবানের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর সদস্যরা গত কয়েকদিন যাবৎ রুমা, থানচি উপজেলার সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে সশস্ত্র হামলা করে টাকা লুট করে। এছাড়াও পুলিশ ও আনসার সদস্যদের মারধর করে ১৪টি অস্ত্র ও ৩৮০ রাউন্ড গুলি ছিনতাই করে নিয়ে যায়। অপহরণ করে রুমা উপজেলার সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে। পরে তাকে বান্দরবান থেকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে র্যাডব। এদিকে কয়েকদিনের চলমান বিভিন্ন সশস্ত্র হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় বান্দরবানের রুমা ও থানচি থানায় ৭টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।