রোজা রেখে ২৮০ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে বাড়ি পৌঁছাল মৌসুমি!

প্রকাশ : 2021-05-12 15:14:07১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

রোজা রেখে ২৮০ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে বাড়ি পৌঁছাল মৌসুমি!

দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। আর ঈদ মানেই ঘরে ফেরার উৎসব। দৈনন্দিন ব্যস্ততা ভুলে ঈদ আনন্দ উদযাপন করতে কয়েক দিনের জন্য বাড়ি ফেরেন সবাই। আপনজনের সান্নিধ্য পেতে বিভিন্ন উপায়ে বাড়ি ফেরেন মানুষ। এবারের ঈদযাত্রায় সবাই তাক লাগিয়ে দিয়েছে মৌসুমি আক্তার এপি নামের এক তরুণী। রোজা রেখে বাইসাইকেলে ২৮০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছেন তিনি। সময় লেগেছে ১৪ ঘণ্টা।

সে নওগাঁর সান্তাহার পৌর শহরের রথবাড়ি মহল্লার বাসিন্দা আব্দুল হাকিম তালুকদারের মেয়ে। গ্রামের বাড়ি নওগাঁয় হলেও রাজধানী ঢাকার গোলাপবাগে থাকেন তিনি। বনানীর ‘চিটাগাং গ্রামার স্কুল, ঢাকা’ নামের একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন।

জানা গেছে, সোমবার (১০ মে) বিকেল ৪টায় ঢাকার গোলাপবাগ থেকে বাইসাইকেলে তিনি রওনা দেন। সান্তাহারে পৌঁছান মঙ্গলবার (১১ মে) সকালে। এমন দুঃসাহসীক কাজের জন্য সহকর্মী, বন্ধু-বান্ধব, পরিবারের লোকজন ও স্বজনদের প্রশংসায় ভাসছেন তিনি।

মৌসুমি আক্তার এপি বলেন, ‘লকডাউনের কারণে ট্রেন ও দূরপাল্লার বাস বন্ধ ছিল। অন্য কোনো যানবাহনে যেতে চাইলে গাদাগাদি করে বাড়ি ফিরতে হতো। কিন্তু এমনটা আমি চাইনি। তাই করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করে বাড়ি ফিরতে এমন উদ্যোগ নেই। তাছাড়া, বাইসাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফেরা অনেক দিনের শখও ছিল। মনের শক্তির কারণে রোজা রেখে বাইসাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফেরা সম্ভব হয়েছে।’

এপি জানান, সোমবার বিকেল ৪টায় ঢাকার গোলাপবাগ থেকে বাইসাইকেলে তিনি বাড়ির পথে রওনা দেন। এরপর জাহাঙ্গীর নগরে তার সঙ্গে যোগ দেন সিরাজগঞ্জের মীর রাসেল নামের অনার্সের তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী। সেখান থেকে তারা দু’জনে একটানা বাইসাইকেল চালিয়ে রাসেলের বাড়ি সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার ভুইয়াগাতি এলাকায় পৌঁছান। রাসেল বাড়ি ফিরলে এপি সেখানে একা হয়ে যান। এবার তিনি একাই বাইসাইকেল চালিয়ে পৌঁছে যান বগুড়ায়। বগুড়াতে এসে যাত্রা বিরতির পর তার বান্ধবি মালার বাসায় সেহরি শেষ করেন। এরপর আবার সকাল ৬টায় তিনি সান্তাহারের উদ্দেশ্যে রওনা হন। কিন্তু বৃষ্টির কারণে এযাত্রায় কিছুটা বিঘ্ন ঘটলেও থেমে যাননি তিনি। ১৪ ঘণ্টা চালিয়ে পরের দিন মঙ্গলবার সকালে পৌঁছে যান সান্তাহারে। এভাবেই তিনি বাইসাইকেলে বাড়ি ফেরার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেন।

সান্তাহার পৌরসভার প্যানেল মেয়র জার্জিস আলম রতন জানান, এপি একজন নারী হয়ে যে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে তা সত‌্যি অসাধারণ।  তার এমন সাহসিকতা অন্য নারীদের জন্য অনুপ্রেরণাও হয়ে থাকবে।