রাশিয়া-চীন-ভারতসহ উন্নত দেশ থেকে সমরাস্ত্র কেনা হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশ : 2024-06-26 19:34:16১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নকল্পে ফোর্সেস গোল-২০৩০ এর আলোকে রাশিয়া, চীন, তুরস্ক ও ভারতসহ সমরাস্ত্র শিল্পে উন্নত বিভিন্ন দেশ থেকে সমরাস্ত্র ক্রয় কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যা ভবিষ্যতে সশস্ত্র বাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বুধবার (২৬ জুন) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমানের এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা জানান তিনি। এ সময় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাহিনীগুলোর গঠন ও উন্নয়ন এর ক্ষেত্রে ফোর্সেস গোল-২০৩০ প্রণয়ন একটি যুগোপযোগী পদক্ষেপ। বর্তমানে ফোর্সেস গোল-২০৩০ এর বাস্তবায়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ফোর্সেস গোল-২০৩০ এর আলোকে সরকার রাশিয়া, চীন, তুরস্ক, ভারতসহ সমরাস্ত্র শিল্পে উন্নত বিভিন্ন দেশ হতে সমরাস্ত্র ক্রয় কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যা ভবিষ্যতে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নের লক্ষ্যে এ পর্যন্ত সেনাবাহিনীর জন্য যেসব উন্নত সরঞ্জামাদি ক্রয় করা হয়েছে এর মধ্যে রয়েছে, কাসা ইউটিলিটি বিমান, ডলফিন ইউরোকপ্টার, ডায়মন্ড প্রশিক্ষণ বিমান, এমবিটি-২০০০ ট্যাংক, ভিটি-ফাইভ লাইট ট্যাংক, আর্মার্ড রিকভারি ভেহিক্যাল, সেলফ প্রপেল্ড (এসপি) কামান, অ্যান্টি ট্যাংক গাইডেড উইপন, শর্ট রেঞ্জ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, মাইন-রেজিস্ট্যান্ট অ্যাম্বুশ প্রোটেক্টেড ভেহিক্যাল, আনম্যানড এরিয়াল ভেহিক্যাল, সার্ফেস টু এয়ার মিসাইল সিস্টেম, আর্মার্ড পার্সোনেল ক্যারিয়ার, রাডার কন্ট্রোল এয়ার ডিফেন্স গান সিস্টেম, নাইট ভিশন মনোকুলার, অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র, আধুনিক যোগাযোগ সরঞ্জামাদি উল্লেখযোগ্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের সমুদ্র নিরাপত্তা এবং সম্পদ রক্ষার বিষয়ে সরকারের প্রথম মেয়াদ থেকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে অত্যাধুনিক সাবমেরিন, ক্যাসল ক্লাস জাহাজ, ফ্রিগেড, করভেট, সমুদ্র জরিপ জাহাজ, লার্জ প্যাট্রোল ক্রাফট, মেরিটাইম প্যাট্রোল এয়ার ক্রাফট এবং মেরিটাইম হেলিকপ্টারসহ অত্যাধুনিক নৌযুদ্ধ সরঞ্জাম বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে সংযোজিত হয়েছে।
একই সঙ্গে নৌবাহিনীর আধুনিকায়নের জন্য ডাইভিং বোট, ল্যান্ডিং ক্রাফট ইউটিলিটি, রিমোট কন্ট্রোল গান, আনম্যানড এয়ারক্রাফট সিস্টেম ইত্যাদিসহ বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্রপাতি, নেটওয়ার্ক হাব স্টেশন, টেকটিকেল ফায়ারিং রেঞ্জ, লং রেঞ্জ এয়ার ডিফেন্স ও সার্ভিলেন্স রাডার, বিভিন্ন সরঞ্জাম ও অস্ত্র ক্রয় করা হয়েছে। এছাড়া সশস্ত্র বাহিনীর জন্য আইএফএফ সেন্টার গঠনের প্রক্রিয়া বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অধীনে পরিচালিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে আধুনিকায়ন করার লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন যুগোপযোগী কার্যক্রম অব্যাহত আছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এ পর্যন্ত বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর জন্য এমআই জি-২৯, ইয়াক-১৩০ এবং এফ-৭ বিজি-১ যুদ্ধ বিমান, সি-১৩০ জে এবং কে-৮ বিমান, এমআই১৭১ হেলিকপ্টারসহ অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্রয় করা হয়েছে। এ সকল আধুনিকায়নের ফলে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী আজ একটি আধুনিক ও চৌকস বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।
তারেক রহমানকে ফেরাতে জোর কূটনৈতিক তৎপরতা চলমান রয়েছে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলা, মানিলন্ডারিংসহ দুর্নীতির একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে জোর কূটনৈতিক তৎপরতা ও আইনী কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
তিনি আজ সংসদে টেবিলে উপস্থাপিত সরকারি দলের সদস্য ফরিদা ইয়াসমিনের টেবিলে উপস্থাপিত লিখিত প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একুশ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, মানিলন্ডারিংসহ দুর্নীতির একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামী তারেক রহমান বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছে। যুক্তরাজ্য থেকে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়েও কিছু আইনগত জটিলতা রয়েছে। তারপরও সকল জটিলতা আইনী প্রক্রিয়াতেই নিরসন করে এই অপরাধীকে দেশে ফিরিয়ে আনা ও তার প্রাপ্য সাজার মুখোমুখি করার বিষয়ে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এ উদ্দেশ্য জোর কূটনৈতিক তৎপরতা ও আইনী কার্যক্রম একইসাথে চলমান রয়েছে। যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষার মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো এ উদ্দেশ্যেই কাজ করে যাচ্ছে। আশা করা যায়, এই প্রক্রিয়ায় ফলাফল আমরা অচিরেই দেখতে সক্ষম হবো।’
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা ও একুশ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার দন্ডপ্রাপ্ত বিদেশে পলাতক আসামীদের দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তি কার্যকর করার লক্ষ্যে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করা হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পলাতক খুনীদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকর করার বিষয়ে কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র, আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠান পরস্পরের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে।