যুক্তরাষ্ট্রে ৩ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনকারীদের গ্রেপ্তার
প্রকাশ : 2024-04-23 13:27:35১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের তিন বিখ্যাত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় ও নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদেরকে গ্রেপ্তার করেছে মার্কিন পুলিশ। বিশ্ববিদ্যালয়ে সার্বক্ষণিক অবস্থানের জন্য ক্যাম্পাসে যে অস্থায়ী তাঁবু খাটিয়েছিলেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা, সেসবও তছনছ করে ফেলা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের আরেক বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির নিউ ইয়র্ক ক্যাম্পাসে গত এক সপ্তাহ ধরে তাঁবু গেড়ে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এর প্রতিক্রিয়ায় সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্লাস কর্মসূচি বন্ধ ঘোষণা করে। ওই দিনই কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউইয়র্ক ক্যাম্পাস, ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের কানেকটিকাট ক্যাম্পাস এবং নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানহাটান ক্যাম্পাসে অভিযান চালিয়ে আন্দোলনরত কয়েক ডজন শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ঠিক কত জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তা প্রকাশ করেনি পুলিশ। তবে শিক্ষার্থীদের পরিচালিত ও প্রকাশিত ইয়েল ডেইলি নিউজের দাবি, মোট সোমবার রাতে মোট ৪৫ জন শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। উচ্ছেদ অভিযানে কেউ আহত হননি বলে জানা গেছে। এদিকে নিউইয়র্ক পুলিশের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুরোধে এই অভিযান পরিচালিত করেছে পুলিশ।
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট (উপাচার্য) অধ্যাপক নেমাত মিনুষ শাফিকসহ অন্য দুই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের তাঁবু গেড়ে সার্বক্ষণিক অবস্থানের অনুমোদন দেয় না। কিন্তু শিক্ষার্থীদের এই অবস্থান ও আন্দোলন শান্তিপূর্ণ ছিল বলে কর্তৃপক্ষ এত দিন বাধা দেয়নি। তবে সম্প্রতি এই আন্দোলনে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বহিরাগতের উপস্থিতি পরিলক্ষিত হওয়ার পর তারা বাধ্য হয়ে পুলিশের সহায়তা চেয়েছেন।
অধ্যাপক শাফিক বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে আমাদের বড় কোনো সমস্যা হচ্ছিল না। তবে সম্প্রতি আমরা এমন কিছু মুখ দেখছি, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নয়। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটুক— তা আমরা চাই না। এ কারণেই পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
এদিকে রোববার এক বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ফিলিস্তিনপন্থিদের আন্দোলনের মাত্রা বাড়তে থাকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেছিলেন, ‘তারা যা করছে, সেটি একদম খোলাখুলিভাবে ইহুদিবিদ্বেষের প্রদর্শন এবং যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা দেশের কোনো স্থানে এ ধরনের বিদ্বেষের জায়গা নেই।’
বাইডেনের এই বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থী সংগঠনগুলোর জোটের পক্ষ থেকে এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা যে কোনো প্রকার ঘৃণা ও গোঁড়ামির বিরুদ্ধে। আমাদের আন্দোনৈ শান্তিপূর্ণ এবং এখানে ঘৃণার কোনো জায়গা নেই।’ ‘আমরা শুধু চাই, গাজায় সহিংসতা বন্ধ হোক এবং ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের মর্যাদা দেওয়া হোক। এই আন্দোলনে ফিলিস্তিনি, মুসলিম, আরব, ইহুদি, কৃষ্ণাঙ্গসহ সব সমাজের শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা রয়েছেন।’
সূত্র : রয়টার্স
সা/ই