যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা প্রভাব পড়বে না জাতীয় নির্বাচনে: কাদের

প্রকাশ : 2021-12-13 15:01:18১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা প্রভাব পড়বে না জাতীয় নির্বাচনে: কাদের

মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‍্যাব) এবং এর সাবেক ও বর্তমান ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপে ‘ষড়যন্ত্র রয়েছে’ বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

সোমবার (১২ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
 
মহান মুক্তিযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র বিরোধিতা করেছিল, আবার বিজয়ের এ মাসে সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা নতুন করে কোনও ষড়যন্ত্রের অংশ কিনা— এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ষড়যন্ত্রের বিষয় তো অবশ্যই আছে। আমি বলেছি, আমাদের এই বিজয়ের মাসে যুক্তরাষ্ট্রের যে বক্তব্য; সেটা আমাদের দেশের জঙ্গিবাদ ও তাদের পৃষ্ঠপোষক এবং সন্ত্রাসীদের উৎসাহী করবে। মূল কথা হচ্ছে এটা।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, র‌্যাব নিয়ে যুক্তরাষ্ট যে বক্তব্য দিয়েছে তা নিয়ে গতকাল (রবিবার) দলের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছি। এ নিয়ে আমরা ঘাঁটাঘাঁটি করতে চাই না। এ নিয়ে দেশটির সঙ্গে আমাদের সম্পর্কেও কোনও প্রভাব ফেলবে না। আমাদের নির্বাচনে তার প্রভাব পড়ার কোনও কারণ নেই। আমাদের নির্বাচন আমরাই করবো, এখানে কি আমরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবে নির্বাচন করবো?’


গত রবিবার ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের দ্বারপ্রান্তে এসে র‍্যাব ও সাত কর্মকর্তাকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের এমন একটি সিদ্ধান্তে (নিষেধাজ্ঞা আরোপ) আমরা বিস্মিত এবং ব্যথিত হয়েছি।’

আজকের বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের দলীয় মেয়র প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচার পরিচালনা জন্য একটি সমন্বয় কমিটি করারে কথা জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, এ কমিটির সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করবেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মির্জা আজম। আমরা যারা সংসদ সদস্য, তারা যেতে পারবো না। কিন্তু নন-এমাপিদের (সংসদ সদস্য নন) সুবিধা। এই কমিটিতে আরও কয়েকজন থাকবেন।

‘পদত্যাগ করা প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের মুখের ভাষা আওয়ামী লীগের আসল চেহারা’ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কাদের বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেবকে আমি পাল্টা প্রশ্ন করতে চাই। মুরাদ যা বলেছে, তার চেয়েও ঘৃণ্য ও জঘন্য কথা বলার পরে আলালকে তিনি সমর্থন করেছে। এটা হলো আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাদের পার্থক্য। এত অশ্রাব্য ও অশোভন বক্তব্য কী করে মির্জা ফখরুল সমর্থন করেন। আমরাতো মুরাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছি। কিন্তু তারা আলালকে বহিষ্কারতো দূরের কথা, বরং নৈতিক সমর্থন দিয়েছেন।’

মুজিববর্ষে প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতাদের সংবর্ধনা কর্মসূচির বাস্তবায়ন সম্পর্কে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মুজিববর্ষ শেষ হয়ে যায়নি, আগামী মার্চ পর্যন্ত চলবে। এর মধ্যে আমাদের অনেক কাজ হয়ে গেছে। লেখা সংগ্রহ করা, জেলা পর্যায় থেকে প্রবীণ তালিকা নেওয়া হয়ে গেছে। এখন আমাদের সুবিধামতো সময়ে মার্চের মধ্যে আয়োজন করবো।’

১৬ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর পরিচালনায় যে শপথ অনুষ্ঠান হবে তাতে সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে অংশগ্রহণ করার আহ্বান করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘শুধু ঢাকায় নয়, একই সঙ্গে সারাদেশে এই চেতনা ছড়িয়ে দিতে চাই। শুধু আমাদের নেতাকর্মীরা নয়, মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের, অসাম্প্রদায়িক চেতনার সকল শ্রেণি-পেশার জনগণকেও আমরা এতে অংশগ্রহণে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর শপথ অনুষ্ঠান— এটি জাতির অনুষ্ঠান।’

তিনি বলেন, এ বিষয়ে দলীয়ভাবে বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকরা সমন্বয় করবেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘১৮ ডিসেম্বর আমরা একটি বিজয় শোভাযাত্রার আয়োজন করেছি। এ শোভাযাত্রা কীভাবে সুসংগঠিত ও সুশৃঙ্খল করা যায় সেই ব্যাপারে আমরা আলোচনা করেছি। শিখা চিরন্তন থেকে বঙ্গবন্ধু ভবন পর্যন্ত এই শোভাযাত্রাটি হবে।’

১১ ও ১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়ায় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘১৩ জানুয়ারি থেকে সপ্তাহব্যাপী লোকজ উৎসব হবে। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমকে আহ্বায়ক ও ফারুক খানকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে একটি কমিটি করা হয়েছে।’ 

সভায় উপস্থিত ছিলেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, মাহবুব-উল আলম হানিফ, হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, ওয়াসিকা আয়শা খান, ফরিদুন্নাহার লাইলী, অসীম কুমার উকিল, দেলোয়ার হোসেন, বিপ্লব বড়ুয়া, আবদুস সবুর, সুজিত রায় নন্দী, আমিনুল ইসলাম, সায়েম খান প্রমুখ।