ম্যাড়মেড়ে ড্রতে শেষ বাংলাদেশের পরীক্ষা–নিরীক্ষা
প্রকাশ : 2021-03-27 20:54:59১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের বসার জন্য আলাদা কোনো প্রেসবক্স নেই। গ্যালারির নির্দিষ্ট একটি জায়গায় চেয়ারই সম্বল। দুই পাশ থেকে আসা স্বাগতিক দর্শকদের ‘নেপাল...নেপাল...’ চিৎকারে কান পাতা দায়। ঘরের মাঠে নিজেদের টুর্নামেন্টে নেপালকে ফাইনালে তুলতে সমর্থকেরা কোনো কমতি রাখেননি আজ। ১৫ হাজার আসন ক্ষমতার স্টেডিয়ামে টিকিট ছাড়া হয়েছিল ১২ হাজার। গ্যালারির দিকে তাকিয়ে মনে হলো তার অধিকাংশই বিক্রি হয়ে গিয়েছে।
বাংলাদেশের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে ফাইনালে উঠে সে প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে সমর্থকদের। কিন্তু ড্র ম্যাচে মানসিকভাবে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। পুরোপুরি নতুন একাদশ নিয়ে মাঠে নেমে প্রতিপক্ষের ঘরে গোলশূন্য ড্র করা তো বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে জয়ই। ফাইনাল আগেই নিশ্চিত ছিল, এই ড্রতে তিন জাতির টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বেশি পয়েন্ট নিয়ে ফাইনালে জামাল ভূঁইয়ারা। দুই ম্যাচে দুই পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ স্বাগতিক নেপাল। ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে টুর্নামেন্টের ফাইনাল।
২৩ মার্চ প্রথম ম্যাচে কিরগিজস্তান অনূর্ধ্ব–২৩ দলের বিপক্ষে আত্মঘাতী গোলে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। আজ সে দলের একাদশটি বদলে নতুন একাদশ মাঠে নামান জেমি ডে। অভিষেক হয় সেন্টারব্যাক মেহেদী হাসান ও রাইটব্যাক মোহাম্মদ ঈমনের। পুরো ম্যাচেই আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন তাঁরা। প্রায় দুই বছর পর জাতীয় দলের একাদশে ফেরা গোলরক্ষক শহিদুল আলমও দিয়েছেন আস্থার প্রতিদান। নেপালের বিপক্ষে আগে দুবার বড় দুটি ভুল করা শহিদুলকে নিয়ে যে আতঙ্ক ছিল, সেটি দূর করে দিয়েছেন দীর্ঘদেহী এই গোলরক্ষক। শুরুর কয়েক মিনিটের ঝড় ভালোভাবেই সামলে দিয়েছেন তিনি। একবার বল পোস্ট ছেড়ে বের হয়ে এসে পাঞ্চ করে বিপদমুক্ত করেছেন আর একবার ‘কমন বল’ ক্লিয়ার করেছেন পায়ে। দ্বিতীয়ার্ধেও শহিদুল বুঝিয়ে দিয়েছেন, ভুল শুধরে তৈরি হয়েই মাঠে নেমেছেন তিনি।
নেপাল ও কিরগিজস্তান ম্যাচটি ড্র হওয়ায় এক ম্যাচ হাতে রেখেই ফাইনাল নিশ্চিত করেছিল বাংলাদেশ। আজ জামাল ভূঁইয়াদের জন্য এ ছিল নিয়ম রক্ষার ম্যাচ। ২৯ মার্চ ফাইনালের ড্রেস রিহার্সেল হয়ে গেল আজ। তবে বদলি একাদশই স্বাগতিকদের থামিয়ে দেওয়ার যথেষ্ট ছিল।
সন্দেহ নেই আক্রমণে এগিয়ে ছিল নেপাল। কিন্তু গোল করার মতো পরিষ্কার সুযোগ তেমন তৈরি করতে পারেননি অঞ্জন বিস্তা, অভিষেক রাইজালরা। দ্বিতীয়ার্ধে দিনেশ রাজবংশীর থ্রো ইনে দর্শন গুরুংয়ের ফ্লিক হেড ক্রসবারে লেগে বাইরে গিয়েছে। এ ছাড়া অঞ্জন, অভিষেকের একটি করে হেড পোস্টের আশপাশ দিয়ে বাইরে চলে যাওয়া ছাড়া আর তো কিছুই নেই।
শুধু ২০ মিনিটে পরিষ্কারভাবে একটি সুযোগ পেয়েছিল নেপাল। বাঁ প্রান্ত থেকে তিরদেখ গুরুংয়ের কাটক্যাকে আনামার্কড থেকে অবস্থায় হেড করেছিলেন নেপাল লিগে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া ফুটবলার অঞ্জন। তাঁর নেওয়া হেড ক্রসবারের ওপর দিয়ে বাইরে। ২ মিনিট পরেই অভিষিক্ত মেহেদী হাসানের ভুলের সুযোগে লেফট উইঙ্গার তিরদেভ গুরুং গোলের সুযোগ পেলেও আরেক অভিষিক্ত মোহাম্মদ ঈমন সেটি ক্লিয়ার করেন। দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশের ওপর চাপের সৃষ্টি করতে পারলেও গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি নেপাল। উল্টো দ্বিতীয়ার্ধে পাঁচটি বদল এনে পরীক্ষা–নিরীক্ষা আরও ভালোভাবে নিয়েছেন জেমি ডে।