মুন্সীগঞ্জের ৩টি আসনে নৌকার মাঝি হলেন যারা

প্রকাশ : 2023-11-26 23:58:49১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

মুন্সীগঞ্জের ৩টি আসনে নৌকার মাঝি হলেন যারা

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কারা নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে যাচ্ছেন সেই তালিকা প্রকাশ করেছে আওয়ামী লীগ। সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আজ ( রবিবার)  দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের নামের তালিকা ঘোষণা করেছেন। 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুন্সীগঞ্জের তিনটি আসনে নৌকা প্রতীকে যারা নির্বাচন করতে যাচ্ছেন তারা হলেন, 

মুন্সীগঞ্জ-১ [ লৌহজং-টঙ্গিবাড়ী ] আসন
সিরাজদিখান উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজদিখান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ।

মুন্সীগঞ্জ-২ [ লৌহজং-টঙ্গিবাড়ী ] আসন
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বর্তমান সংসদ সদস্য অধ্যাপিকা সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি।

মুন্সীগঞ্জ-৩ [ শ্রীনগর-সিরাজদিখান ]  আসন
আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক বর্তমান সংসদ সদস্য এডভোকেট মৃনাল কান্তি দাস।

মুন্সীগঞ্জ-১ আসনটিতে নতুন মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। ওই আসনটিতে বর্তমানে আওয়ামী লীগের জোট সঙ্গী বিকল্পধারার মাহি বি.চৌধুরী সংসদ সদস্য হিসাবে রয়েছেন। কিন্তু এ বছর ওই আসনে নতুন করে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দেওয়া হলো মহিউদ্দিন আহমেদকে। 

মুন্সীগঞ্জে-১ [শ্রীনগর-সিরাজদিখান] আসনের মহিউদ্দিন আহমেদ সিরাজদিখান উপজেলা পরিষদের ৩ বার নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান ও সিরাজদিখান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। এছাড়া তিনি সিরাজদিখান উপজেলার মালখানগর ইউনিয়নের পাঁচবারের নির্বাচিত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান।  তরুণ বয়স হতেই তার এলাকায় জনপ্রিয়তা তুঙ্গে উঠে। যার কারণে তিনি পাঁচবার একটানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৯৮ সাল থেকে সিরাজদিখান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তার সহধর্মিনী সানজিদা আক্তারও মালখানগর ইউনিয়ন পরিষদের দুইবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান। মহিউদ্দিন আহমেদ ১৯৯৫-৯৬ অর্থবছরে মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদক পেয়েছিলেন।

মুন্সীগঞ্জ ২ আসন [লৌহজং-টঙ্গিবাড়ী] আসনটিতে টানা ষষ্ঠবারের মত দলিয় মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সংদস্য সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি । তিনি ২০০৮ সালের প্রতিদ্বন্দীতাপূর্ণ নির্বাচনে বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী মিজানুর রহমান সিনহাকে হারিয়ে মুন্সীগঞ্জ-২ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালেও শক্ত কোন প্রতিদ্বন্দ্বী ছাড়াই আওয়ামী লীগের টিকিট পেয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হন এমিলি। টানা ৩ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকায় এলাকায় বাড়তি জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পেরেছেন তিনি। এমিলি প্রথম ১৯৯৬ সালে প্রথম সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য মনোনীত হয়েছিলেন। ২০০১ সালে মুন্সীগঞ্জ-২ আসন থেকে এমিলিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত করলেও বিএনপির প্রার্থী মিজানুর রহমান সিনহার বিরুদ্ধে নির্বাচন করে হেরে যান তিনি। ২০০৮ সালে মোট ভোটের ৫৩ শতাংশ ভোট পেয়ে বিএনপির প্রার্থী মিজানুর রহমান সিনহাকে হারিয়ে আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এমিলি। ২০১৪ সালে বিএনপি ভোট বর্জন করলে স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুব উদ্দিন আহমেদকে হারিয়ে প্রায় ৯৪ শতাংশ ভোট পেয়ে আওয়ামী লীগ থেকে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এমিলি। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃতীয়বারের মত আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে বিএনপির প্রার্থী মিজানুর রহমান সিনহার সাথে ৭০.৩৯% শতাংশ বেশি ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি।

মুন্সীগঞ্জ-৩ [মুন্সীগঞ্জ সদরগজারিয়া] আসনে  টানা তৃতীয়বারের মত মনোনয়ন পেয়েছেন এডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস। ২০১৪ সালে বিএনপি ভোট বর্জন করলে ওই বছর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস। এরপর ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দ্বিতীয় য়বারের মত আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে বিএনপির প্রার্থী আব্দুল হাইয়ের বিপরীতে ৭৫.২৩% শতাংশ ভোটের ব্যবধানে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মৃণাল কান্তি দাস। এর আগে, ২০০৮ সালে এই আসনে বিএনপির প্রার্থী এম শামসুল ইসলামকে হারিয়ে আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন এম ইদ্রিস আলী। ১৯৯১, ১৯৯৬  ও ২০০১ সালের নির্বাচনে আসনটি বিএনপির দখলে ছিলো। মৃণাল কান্তি দাস সংসদ সদস্য হওয়া ছাড়াও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে টানা ১৩ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক। দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভক্তি থাকলেও বিএনপির ঘাটি হিসেবে পরিচিত আসনটিতে সাধারণ ভোটারদের মন জয় করতে পেরেছেন ‘ক্লিন ইমেজের’ মৃণাল কান্তি দাস। অনিয়ম- দুর্নীতি বা স্বজনপ্রীতির অভিযোগ নেই তার বিরুদ্ধে। 

উল্লেখ্য, মুন্সীগঞ্জ জেলার ৬টি উপজেলা, ৬৮টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভায় সর্বমোট ভোটারের সংখ্যা ১৩ লাখ ৪৩ হাজার ৬৯৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ লাখ ৯৪ হাজার ২৫৫ জন ও মহিলা ভোটার ৬ লাখ ৪৯ হাজার ৪৪১ জন।

 

কা/আ