মুন্সীগঞ্জের লৌহজং টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের ফের পরীক্ষা দিতে হচ্ছে
প্রকাশ : 2024-12-11 10:35:00১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
দশম শ্রেণির টেস্ট পরীক্ষায় তিন বিষয় পর্যন্ত অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের ফের পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। তাও আবার পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে। ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২৬৪ জন শিক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। এমন ঘটনা ঘটেছে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলায়। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা দুটোই চলছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গত নভেম্বরে উপজেলার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা উপজেলা মাধ্যমিক অফিস মনোনীত অভিন্ন প্রশ্নপত্রে টেস্ট পরীক্ষায় অংশ নেয়। এ পরীক্ষায় উপজেলার কোনো বিদ্যালয়ে ১০ জন আবার কোনো বিদ্যালয়ে ১০-২০ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়। কিন্তু ব্রাহ্মণগাঁও বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০৪ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫১ জনই অকৃতকার্য হয়। প্রায় ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করায় উপজেলা ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা বিস্মিত হন। টেস্ট পরীক্ষায় এক বিষয়ে ফেল করা শিক্ষার্থীদের এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করার অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু দুই কিংবা ততধিক বিষয়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণের অনুমতি দেওয়া হয়নি। এর প্রতিবাদে গত ১ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণগাঁও বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ফেল করা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা বিক্ষোভ করেন। চাপে পড়ে প্রধান শিক্ষক মো. হোসেন খসরু বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের নিয়ে মিটিংয়ে বসেন। মিটিংয়ে শুধু গণিত বিষয়ে ফের পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, গণিতে পাশ করলে ইংরেজিতে ফেল করা শিক্ষার্থীদের পাশ বলে ধরে নেওয়া হবে।
ব্রাহ্মণগাঁও বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করা শিক্ষার্থীদের পুনরায় পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি অন্যান্য বিদ্যালয়ের ফেল করা শিক্ষার্থীদের কাছে ছড়িয়ে পড়ে। তারা নিজ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের কাছে ব্রাহ্মণগাঁও স্কুলের ন্যায় ফেল করা বিষয়ে পুনরায় তাদের পরীক্ষা নেওয়ার দাবি করেন। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে প্রধান শিক্ষকেরা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাকসুদুর রহমানের দ্বারস্থ হন। শেষে ইউএনও জাকির হোসেন মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ ১০টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের নিয়ে মিটিংয়ে বসে অকৃতকার্যদের গণিত, ইংরেজি ও এক গ্রুপ বিষয়সহ তিনটি বিষয়ে ফের পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। লৌহজং মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়কে কেন্দ্র হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে গত রবিবার গণিত, সোমবার ইংরেজি প্রথম পত্র, গতকাল মঙ্গলবার ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা হয়েছে। আজ বুধবার হবে ফেল করা গ্রুপের সর্বশেষ একটি বিষয়ে পরীক্ষা।
উপরোক্ত তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাকসুদুর রহমান বলেন, ব্রাহ্মণগাঁও বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় টেস্ট পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি করে। সবকিছু বিবেচনা করে অংক, ইংরেজি ও গ্রুপভিত্তিক একটি বিষয়সহ তিনটি বিষয়ে পুনরায় পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ পরীক্ষায় সব বিষয়ে পাশ করা শিক্ষার্থীদের এসএসসি ফরম পূরণের অনুমতি দেওয়া হবে আর অকৃতকার্যদের অনুমতি দেওয়া হবে না। এটা টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্যদের জন্য ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়ার শেষ সুযোগ।
লৌহজংয়ে কেন্দ্র বসিয়ে দশম শ্রেণির টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করা শিক্ষার্থীদের পুনরায় পরীক্ষা নেওয়ার নজির নেই বলে স্বীকার করেন যশলদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান খান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রধান শিক্ষক জানান, সব বিদ্যালয়েই ৩-৪ বিষয়ে ফেল করা শিক্ষার্থীদের পাশ দেখিয়ে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ব্রাহ্মণগাঁওয়ের প্রধান শিক্ষক হোসেন খসরু কেন এমনটা করলেন জানি না।