মিশা সওদাগরের বিরুদ্ধে খেপেছেন অনন্ত জলিল ও বর্ষা
প্রকাশ : 2022-08-14 20:21:55১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
ঢালিউডের খল চরিত্রের অভিনেতা মিশা সওদাগরের বিরুদ্ধে খেপেছেন অনন্ত জলিল ও বর্ষা। ছবি দেখা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা দুজনেই এই ক্ষোভ ঝাড়েন। এমনকি তিন দশকের বেশি সময় ধরে চলচ্চিত্রে অভিনয় করা মিশার উদ্দেশে বললেন, চলচ্চিত্রের উন্নয়নে তাঁর কোনো অবদানই নেই। আজ রোববার বিকেল পর্যন্ত এ বিষয়ে মিশা সওদাগর পাল্টা কিছু বলেননি। জানা গেছে, অনন্ত জলিল ও বর্ষার ক্ষিপ্ত হওয়ার কারণ কয়েক দিন আগে মিশার দেওয়ার একটি সাক্ষাৎকার ঘিরে, যেখানে তিনি অনন্ত জলিল ও তাঁর ছবি প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছেন।
মিশা সওদাগর তাঁর দেওয়া সেই সাক্ষাৎকারে অনন্ত জলিলের দাবি করা শতকোটি টাকা দিয়ে নির্মিত সিনেমা ‘দিন: দ্য ডে’ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির তো কোনো লাভ হয়নি বলে মন্তব্য করেছিলেন। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই খল অভিনেতার মন্তব্যের জেরে পাল্টা মন্তব্যে অনন্ত জলিল বললেন, মিশা সওদাগর একজন শিল্পী। পারিশ্রমিক নিয়ে অভিনয় করেন। চলচ্চিত্রের উন্নয়নে আসলে তাঁর কোনো অবদানই নেই। গতকাল শনিবার ঢাকার ব্লকবাস্টার সিনেমাসে সিনেমা দেখতে এসে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মিশা সওদাগরের মন্তব্যের জবাব দেন ব্যবসায়ী ও চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী এই দম্পতি।
অনন্ত জলিল সংবাদমাধ্যমকে বলেন, মিশা সওদাগর একজন পুরোনো আর্টিস্ট। তিনি যেটা ভেবেছেন, সেটা বলেছেন। তিনি প্রযোজকও নন, ক্রিয়েটিভ পারসনও নন। তাঁর দ্বারা সিনেমার উন্নতি হয় না। যাঁর কোনো ধরনের ইনভেস্টমেন্ট নেই, যাঁর নতুন ক্রিয়েটিভিটি নেই, তাঁর দ্বারা চলচ্চিত্রের উন্নতি হবে কীভাবে? অনন্ত জলিলের দাবি, দেশের সিনেমার ডিজিটাল যাত্রা তিনিই শুরু করেছেন। দেশীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে টেকনিক্যাল দিক থেকে শুরু করে অনেক কিছুই তিনি দেখিয়েছেন। গত ঈদে মুক্তি পাওয়া ‘দিন: দ্য ডে’ তাঁর সর্বশেষ সংযোজন। যে ‘দিন: দ্য ডে’ নিয়ে মিশা সওদাগর সমালোচনা করেছেন, সেই ছবিতে তিনি নিজেও অভিনয় করেছেন।
এর আগে সাক্ষাৎকারে মিশা সওদাগর অনন্ত জলিলকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, অনন্ত জলিলের দাবি, শতকোটি টাকা দিয়ে ‘দিন: দ্য ডে’ নির্মাণ করা হয়েছে। এতে দর্শক হয়তো বিনোদন পেয়েছেন, কিন্তু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির তো কোনো লাভ হয়নি। এত বড় অঙ্কের টাকা দিয়ে তিনি -অনন্ত জলিল] ফিল্ম স্টুডিও, প্রোডাকশন হাউস, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বানালে অভিজ্ঞ, প্রবীণ ও এই সময়ের মেধাবী নির্মাতা, যোগ্য শিল্পী কলাকুশলীরা কাজ করতে পারবেন। এতে চলচ্চিত্রশিল্পের প্রভূত উন্নতি হবে। শতকোটি টাকা দিয়ে একটি সিনেমা না বানিয়ে এই অর্থে বছরে কমপক্ষে অর্ধশত সিনেমা নির্মাণ করলে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির চেহারা পাল্টে যেতে বাধ্য। এতে অনন্ত জলিল ‘কালচারাল ইম্পর্ট্যান্ট পারসন’ এবং চলচ্চিত্রের জীবন্ত কিংবদন্তি হয়ে উঠতে পারবেন।
এসব বিষয় নজরে এসেছে অনন্ত জলিলের। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘কথা বলার আগে চিন্তা করতে হবে, কী ব্যাপারে আমি কথা বলছি। মিশা সাহেবের যদি এতই যোগ্যতা হয়, তাহলে আজ পর্যন্ত “দিন: দ্য ডে”র মতো একটা সিনেমা বানাতে পারলেন না কেন? একটা বানিয়ে দেখাতেন। তিনি তো আমেরিকাতে থাকেন, তাঁকে আমেরিকান সিনেমা দেখতে বলেন। বাংলাদেশ থেকে টাকা নিয়ে আমেরিকায় বাড়ি-গাড়ি করেছেন। সেখানের সিনেমাও দেখেন। “দিন: দ্য ডে”র সঙ্গে সেখানকার সিনেমার তুলনা করেন। আমার একটাই কথা, মিশা সাহেবের কথাগুলো আপত্তিকর। তাঁর মুখে এসব মানায় না। তাঁর মুখে এ ধরনের কথা বলার যোগ্যতা নেই।’
সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন বর্ষাও। তিনি মিশা সওদাগরের উদ্দেশে বলেছেন, ‘অনন্ত জলিলের সিনেমা মানেই মিশা সওদাগর ভিলেন থাকবেন। আমরা মিশা ভাই ছাড়া অন্য কাউকে কখনোই চিন্তা করতে পারতাম না। আমি বলব, “দিন: দ্য ডে” মিশা ভাইয়ের একটি সন্তান। তিনি এটাতে অভিনয় করেছেন। কিন্তু তাঁর এভাবে কথা বলা ঠিক হয়নি। ক্ষোভ ক্লিয়ার, একটা বিষয় স্পষ্ট, “নেত্রী দ্য লিডার”-এ আমরা তাঁকে [মিশা সওদাগর] কাস্ট করিনি। এবারের ঈদে তিনটি ছবি (“পরাণ”, “দিন: দ্য ডে”, “সাইকো”) মুক্তি পেয়েছে। তিনটি ছবিই সুপারহিট হয়েছে। অথচ কোনোটিতে মিশা সওদাগর নেই। আমার মনে হয়, মিশা ভাই ভয়ে আছেন। তিনি হয়তো ভাবছেন, তাঁর হাতে কাজ নেই। আমেরিকায় থাকুন আর যেখানেই থাকুন, টাকা তো লাগবে। আর তাঁর ইনকামের সোর্স তো বাংলাদেশ। তাই তাঁকে কিছু না কিছু করতে হবে।’
বর্ষা এ-ও বলেন, ‘আমরা সবাই চলচ্চিত্রের শিল্পী। বিপদে-আপদে একে অপরের পাশে এগিয়ে আসব। কিন্তু আমি দেখছি, কেউ কেউ তাঁদের অবস্থান থেকে নিজেদের ক্ষমতা দেখাতে চাচ্ছেন। চলচ্চিত্রের মানুষ কিন্তু কেউ বোকা নন।’