মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে যোগ দিতে জার্মান যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশ : 2024-02-13 16:23:59১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে যোগ দেওয়ার জন্য ১৫ ফেব্রুয়ারি জার্মানি যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নতুন সরকার গঠনের পর এটিই তার প্রথম বিদেশ সফর। এর আগে ২০১৭ ও ২০১৯ সালে এই সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। মিউনিখ সম্মেলনে এটি হবে শেখ হাসিনার তৃতীয়বার অংশগ্রহণ। সরকারের একটি সূত্র জানায়, এবারের সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবে বাংলাদেশ।
এ সফরে কনফারেন্স ডিপ্লোম্যাসির সুযোগও তৈরি হবে। ঐতিহ্যবাহী মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরার পাশাপাশি বেশ কয়েকজন সরকারপ্রধানসহ অন্যদের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। এর মধ্যে জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ, ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেট ফ্রেডেরিকসেন ও নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। এছাড়া ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং মেটা গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের প্রেসিডেন্ট নিক ক্লেগের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ হবে প্রধানমন্ত্রীর।
প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন যাবেন। এছাড়া পৃথক আমন্ত্রণে পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী এবং প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকও মিউনিখে যাবেন।
কনফারেন্সে সরকারের পক্ষ থেকে জলবায়ু পরিবর্তন ও শান্তিরক্ষা কার্যক্রম নিয়ে মতামত প্রদান করা হবে। এছাড়া দ্বিপক্ষীয় বৈঠকগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তন, নিরাপত্তা সহযোগিতাসহ অন্যান্য বিষয় প্রাধান্য পেতে পারে।
এ বিষয়ে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো এবং সেটির প্রতিফলন জানুয়ারির (দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন) নির্বাচনের পর তাদের দেওয়া বিবৃতিতে পরিষ্কার দেখা গেছে।’
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রফতানি বাজার হচ্ছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এবং তারা আমাদের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নতুন সরকার গঠনের পর ইউরোপে প্রধানমন্ত্রীর সফর তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, এর মাধ্যমে ইউরোপকে আমরা যে অত্যন্ত গুরুত্ব দেই, সেটির প্রতিফলন দেখা যায়।’
তিনি বলেন, ‘মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে ইউরোপ, এশিয়া ও আমেরিকার সব দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করেন এবং তাদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনার মাধ্যমে কনফারেন্স ডিপ্লোম্যাসির সুযোগ নেওয়া সম্ভব হয়।’
মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী ক্লাইমেট ফাইন্যান্সিং সংক্রান্ত সেশনে অংশগ্রহণ করবেন। জলবায়ু পরিবর্তনে অর্থায়নের গুরুত্ব এবং ধনী দেশগুলোর দায়িত্ব সম্পর্কে তার কথা বলার সম্ভাবনা আছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ‘কজ অ্যান্ড ইফেক্ট: টু ফ্রন্ট এগেনেস্ট ক্লাইমেট চেঞ্জ’ শীর্ষক সেশনে অংশগ্রহণ করবেন। পররাষ্ট্র সচিব ‘পিস অপারেশন’ সংক্রান্ত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র।
বিভিন্ন দেশের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বিভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র।
সূত্র জানায়, জার্মানি বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রফতানি বাজার এবং উন্নয়ন সহযোগী। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে জার্মানির অবস্থান রয়েছে এবং ওই অবস্থানের সঙ্গে বাংলাদেশের মিলগুলো খুঁজে বের করে সহযোগিতার মাত্রা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। এছাড়া জার্মানির ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি এবং বাংলাদেশের ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুকের মধ্যে অনেক মিল আছে। এসব বিষয়ে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ আছে।
আরেকটি সূত্র জানায়, নেদারল্যান্ডস পানিসম্পদে অত্যন্ত দক্ষ। দেশটি বাংলাদেশের ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নের সহযোগী। কৃষি উৎপাদনে অত্যন্ত দক্ষ নেদারল্যান্ডস এবং তাদের কৃষি প্রযুক্তি বাংলাদেশে ব্যবহার, সার্কুলার ইকোনমিতে সহযোগিতা, যেমন- তৈরি পোশাকশিল্পে ঝুট কীভাবে পুনর্ব্যবহার করা যায়, সে বিষয়ে সহযোগিতার সুযোগ আছে। এছাড়া বাংলাদেশে অনেক ডাচ বিনিয়োগও রয়েছে।
বাংলাদেশে বন্দর ব্যবস্থাপনায় আগ্রহী ডেনমার্ক। এ বিষয়ে একটি প্রস্তাবও দিয়েছে তারা। কৃষি উৎপাদন ও পোল্ট্রি খাতেও তাদের দক্ষতা ও প্রযুক্তি রয়েছে এবং সেগুলো বাংলাদেশে ব্যবহার করা সম্ভব বলে জানায় সরকারি সূত্র।
সান