মাহি ভাই ও ব্রাভোর পরামর্শ খুব কাজে লেগেছে: মুস্তাফিজ
প্রকাশ : 2024-04-27 10:32:54১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
আইপিএলে এবারের আসরে স্বপ্নের মতো সময় কাটাচ্ছেন বাংলাদেশি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। কয়েকটি ফ্র্যাঞ্চাইজি ঘুরে এবার চেন্নাইয়ে যোগ দিয়ে শুরু থেকেই বেশ ফুরফুরে মেজাজে দেখা গেছে তাকে। অধিনায়ক ধোনির ক্ষুরধার মস্তিষ্কে সাফল্য মোড়ানো পারফরম্যান্স করছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) চেন্নাইয়ের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে পোস্ট করা হয় কাটার মাস্টারের সাক্ষাৎকারের ভিডিও। সেখানে আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসে খেলার অভিজ্ঞতার গল্প শোনালেন মুস্তাফিজ। চেন্নাই দলে ডাক পাওয়ার রোমাঞ্চে নিলামের ওই রাতে ঘুমাতে পারেননি বলে এক সাক্ষাৎকারে জানান তিনি।
ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শুরুর গল্প প্রসঙ্গে মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমার গ্রাম সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ। আমরা চার ভাই। সবাই ক্রিকেট পাগল। এলাকার টুর্নামেন্টগুলোতে ভাইয়েরা খেলায় নিয়ে যেতো। আমিতো সে সময় ছোট ছিলাম। বাইরে থেকে যেসব খেলোয়াড় আসতো, যাদের হায়ার (টাকা দিয়ে খেলোয়াড় নিয়ে আসা) করে আনতাম তাদের সে সময় বল করতাম। বাঁহাতে বল করতাম। এক বড় ভাই আমার বড় ভাইকে বলছে তোর ভাইতো ভালো বোলিং করে। ওভাবেই আসলে আসা আস্তে আস্তে ক্রিকেটে।
নিজের ক্ষুরধার কাটার ও স্লোয়ার আয়ত্ত করা নিয়ে তিনি বলেন, সহজাতই বললেই চলে। আমাকে কেউ ওটা শেখায় নাই কাটারটা। এক সময় আমি জাতীয় দলের নেটে বল করছিলাম। একদিন বিজয় ভাই (এনামুল হক বিজয়) জিজ্ঞেস করছিলো, ‘তুই কি স্লোয়ার করতে পারিস না?’ আমি সে সময় খুব জোরে বল করতাম। তখন আমি নরমালি স্লোয়ার বল ট্রাই করছিলাম। সে থেকেই দেখি বল ভালোই ঘুরছিল। খুব সম্ভবত ভাইকেও (আউট করেছি)...মনে পড়ছে না। অনেকেই আউট হয়েছে। সেই থেকে আমার… কাটার বলটা।
চেন্নাই সুপার কিংসের দলে সুযোগ পাওয়ার অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে কাটার মাস্টার বলেন, এটা চেন্নাইয়ে আমার প্রথম মৌসুম। যখন আমি খেলা শুরু করেছি, বিশেষ করে আইপিএলে ২০১৬ সালে, তার পর থেকেই চেন্নাই দলে খেলা আমার স্বপ্ন ছিল। আমি যখন কল পাই ওই রাতে আমার ঘুম আসছিল না। আমার পরদিন খেলা ছিল, আমি তখন নিউজিল্যান্ডে। রাতে আমি ঘন্টা খানেকের মতো ঘুমিয়েছিলাম। দেখি শুধু ম্যাসেজ আসছেই। ওখানকার রাত ৮ টায় নিলাম শুরু হয়েছে। দেখি শুধু ম্যাসেজ আসছে। সবাই অভিনন্দন জানাচ্ছে যে তুমি চেন্নাই দলে নির্বাচিত হয়েছ।
চেন্নাইর পরিবেশ কেমন এমন প্রশ্নে মুস্তাফিজ বলেন, এখানে সবাই বন্ধুসুলভ। আমি প্রথম দিন থেকেই এখানে ভালো পরিবেশ পাচ্ছি, কোনো অস্বস্তি কাজ করেনি। মাহি (মাহেন্দ্র সিং ধোনি) ভাই কিছু ফিল্ড সেটাপ দেখিয়েছে, ব্রাভো ডেথ ওভারে কীভাবে বোলিং করতে হয়...এসব ইনপুট খুব মূল্যবান। বোলিং নিয়েই বেশিরভাগ কথা। আমারতো এর বাইরে কম কথা হয়। মাঠে কথা হয় টুকটাক, কোনটা করলে কি হয়। মাহি ভাই এসেই আমাকে বলে। এটা এই করলে ভালো হয়।
আইপিএলের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে বিশ্বসেরা এই পেসার বলেন, অন্য যেকোনো টুর্নামেন্টের চেয়ে আইপিএলে সব স্টাররা থাকে। সব দেশের। এখানে সফল হলে অন্য জায়গায় আমার জন্য সহজ হবে। আমার কাছে মনে হয়। বেশ ভালোলাগা কাজ করে যখন আমি বড় দলের বিপক্ষে খেলি। আর বড় দলের বিপক্ষে আপনি যখন পারফর্ম করবেন তখন সেটা হাইলাইটও হয় বেশি। এটা নরমালি, আমার সসসময়ই বড় দলের বিপক্ষে খেলতে ভালো লাগে। অনেক দর্শক থাকে, সবকিছুই।
মুস্তাফিজ বলেন, বরাবরই আমি একটু খেলা কম দেখি। খেলতে পছন্দ করি। আমি এমনিতে খেলা দেখি কম। আমার মনে হয় এই সময়টা দেখলে ভালো হয়। টি-টোয়েন্টি খেলা দেখলে আমি শেষের ৪ ওভার...শেষদিকে দেখি। ব্যাটসম্যানরা কোনদিকে মারতেছে, কি করে। এগুলো একটু দেখি বেশি। এমনি আমি পুরো ২০-২০ ৪০ ওভার শেষ করি খুব কম।
ক্রিকেটার হওয়ার আগের জীবন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ওটা একরকম লাইফ ছিল এটা আরেক রকম লাইফ। যখন ক্রিকেটার ছিলাম না তখন সব জায়গায় যেতে পারতাম। এখন যাইতে পারি না। একটু কষ্ট হয়। সবাই ছবি তুলতে চায়। অস্বস্তি লাগে এই আরকি।
ক্রিকেটে আগামীতে নিজের লক্ষ্য নিয়ে মুস্তাফিজ বলেন, যেকোনো স্পোর্টসে দেখবেন ভালোর শেষ নাই। যেটা পেছনে চলে গেছে সেটা চলে গেছে। ওটাতো আমি ফেরাতে পারবো না। যে আমি এই ম্যাচে এই উইকেট পেয়েছিলাম এটা। ওটা দেখে বসে থাকলে হবে না, সামনে আরও খেলা আছে। আমি কি করলে ভালো করতে পারবো সবসময় এটা ভাবি।