মাদারীপুরে প্রতিবন্ধী বি.কম শিক্ষার্থীর আর্তনাদ
প্রকাশ : 2023-05-15 16:56:57১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
মাদারীপুরে বি.কম শিক্ষার্থী প্রতিবন্ধী যুবক সুদীপ্ত দে‘র আর্তি; তিনি কারও করুণার পাত্র হয়ে নয়, সহযোগিতা নিয়ে বেঁচে থাকতে চায়। গরীর ঘরের সন্তান হলেও ছোট বেলা থেকে লেখাপড়ার প্রতি তিনি অদমনীয়। শারীরিক প্রতিবন্ধী সুদীপ্ত বি.কম শেষবর্ষের শিক্ষার্থী এবং মিষ্টভাষী, সদালাপী ও সুন্দর মনের অধিকারী। শুধু তাই নয় তিনি একজন অভিজ্ঞ ইলেক্ট্রিশিয়ান ও কম্পিউটারে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। তার বিনয়ী মনোভাব ও গুরুজনদের প্রতি শ্রদ্ধার কারণে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ তাকে ভালোবাসে।
শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেও সুদীপ্ত সামাজিক নানা কর্মকান্ডে জড়িত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বুকে ধারণ করে সুদীপ্ত ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রিয়ভাজন হয়ে উঠেছে। কিন্তু আত্মপ্রচারবিমুখ হওয়ায় তার জীবন জীবিকার ব্যাপারে কারও কাছে মুখ ফুটে কিছু বলতে পারছে না। অথচ দারিদ্রতার মাঝে মানবেতর জীবন যাপন করছে সুদীপ্ত’র পরিবার। তার যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রতিবন্ধী কোটায় একটা সরকারী চাকুরির প্রত্যাশা দীর্ঘদিনের।
খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, মাদারীপুর পৌর শহরের মন্টু ভূঁইয়া সড়ক, বাদামতলার বাসিন্দা শ্যামল চন্দ্র দে‘র দুই ছেলের মধ্যে সুদীপ্ত দে বড় সন্তান। সংসারে অভাব অনটন তাদের নিত্য সঙ্গী। পিতা শ্যামল চন্দ্র দে একজন হার্টের রোগী। তেমন কোন কাজকর্ম করতে পারেন না। তিনি বর্তমানে শহরের শহীদ বাচ্চু সড়কের একটি টাইলস‘র দোকানে সামান্য বেতনের কর্মচারী। তার নিজের সামান্য উপার্জনের উপর নির্ভর করে অভাবী সংসার। সুদীপ্ত‘র ছোট ভাই প্রাইভেট টিউশনী করে নিজে চলে আর কলেজের খরচ চালায়। যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রতিবন্ধী কোটায় সুদীপ্ত‘র একটা সরকারী চাকুরি হলে অনিবার্য ধ্বংসের মুখ থেকে পরিবারটি বাঁচতে পারে।
এ ব্যাপারে সুদীপ্ত দে‘র কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আমি সংসারের বড় ছেলে হয়েও শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধি হওয়ার কারণে মা-বাবা ও ছোট ভাইয়ের জন্য কিছুই করতে পারছি না। খুব কাছ থেকে সংসারের অভাব-অনটন দেখি আর নিরবে সব সহ্য করি। পত্র-পত্রিকায় ও টিভিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনেক বক্তব্য শুনি ও দেখি তিনি প্রতিবন্ধী বান্ধব। ইচ্ছে করলে আমার জন্য তিনি কিছু একটা করতে পারেন। কিন্তু আমার আর্তি তাঁর কাছে পৌছাবে কে?’ সুদীপ্ত‘র পিতা শ্যামল চন্দ্র দে বলেন, ‘আমরা এমন একটি পরিবার; না পারি কারো কাছে কিছু চাইতে, না পারি কিছু বলতে। আমার ছেলেটার সাথে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের স্থানীয় নেতাকর্মীদের সখ্যতা আছে। সে সামাজিক ও ছাত্রলীগের রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। তারা আমার ছেলেকে ভালোবাসেন, স্নেহ করেন। চক্ষুলজ্জার কারণে তাদের কাছেও মুখ ফুটে কিছু বলতে পারি না। শুনেছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রতিবন্ধীদের প্রতি অত্যন্ত আন্তরিক। তিনি ইচ্ছা করলে আমার ছেলের যোগ্যতা অনুযায়ী প্রতিবন্ধী কোটায় একটা সরকারী চাকুরির ব্যবস্থা করে দিতে
পারেন। তিনি ছাড়া কিছু চাওয়ার মতো আমাদের আর কেউ নেই।’