ভারতের সঙ্গে যে সমস্ত চুক্তি ও সমঝোতা কোনোটাই বাংলাদেশের পক্ষে নয়

প্রকাশ : 2024-06-27 18:02:48১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

ভারতের সঙ্গে যে সমস্ত চুক্তি ও সমঝোতা কোনোটাই বাংলাদেশের পক্ষে নয়

বাংলাদেশের অস্তিত্ব এখন বিপন্ন হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ভারতের সঙ্গে যে সমস্ত চুক্তি ও সমঝোতা করা হচ্ছে, এর কোনোটাই বাংলাদেশের পক্ষে নয়।

 বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের উদ্যোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফখরুল এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, একজন পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিয়োগ করা হয়েছে, তিনি আবার আমাদের ছবক দেন যে, আমরা নাকি চুক্তি আর সমঝোতার মাঝে পার্থক্য বুঝি না। আমাদের তিনি পড়াশোনা করার জন্য পরামর্শ দেন। আমি ওনার কথার উত্তর দিতে চাই না। আমি শুধু একটা কথাই বলতে চাই, দেশের সঙ্গে বেঈমানি করবেন না। মানুষকে বোকা বানিয়ে তাদের ভুল বুঝিয়ে এমন চুক্তি ও সমাঝোতা সই করবেন না, যেগুলো আমার জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে।

সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কী এনেছেন এবার ভারত থেকে? পানির কথা কোথাও নেই। যেটা আছে সেটা ভয়াবহ, সেটা হচ্ছে তিস্তা চুক্তির জন্য ভারত ভালো প্রস্তাব দিয়েছে, চীনও দিয়েছে। শেখ হাসিনা বলেছেন, দুটোর মধ্যে দেখবো কোনটা ভালো হয়। আবার এ-ও বলেছেন, ভারত যে প্রস্তাব দিয়েছে ভারতকে যদি কাজটা দেই, তাহলে পানির সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। আমরা তো সব বোকা মানুষ এই দেশে বাস করি? পক্ষান্তরে আপনি যেটা করেছেন তিস্তার পানিবণ্টন সমস্যা, সেটা বাতিল করে দিলেন। অভিন্ন নদীগুলোর পানিবণ্টন সমস্যা, সমস্যা রইলো না। এবার বাংলাদেশকে পুরোপুরি ভারতের কাছে জিম্মি করে দিচ্ছেন।

সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে ফখরুল বলেন, প্রতিদিন সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা করা হয়। গতকালও হত্যা হয়েছে। এই বিষয়ে আপনারা (সরকার) একটা কথাও বলেননি। আমাদের সরাসরি প্রশ্ন আপনাদের কাছে, পৃথিবীতে কোন দেশ আছে, বন্ধু দেশ, একেবারে এতো বন্ধু যে সম্পর্ক নাকি স্বামী-স্ত্রীর মতো, তাহলে কোন দেশ আছে তার সীমান্তে বন্ধু দেশের নাগরিকদের গুলি করে হত্যা করে। এই বিষয়গুলোর জবাব দিতে হবে। আপনারা (সরকার) আত্মরক্ষার্থে যেসব কথা বলেন, এসব কথা বলে জনগণকে বোকা বানাতে পারবেন না।

বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে কেন বন্দি করে রেখেছেন? কোনো সমস্যা যদি না থাকে তাহলে মুক্তি দিন। সেদিকে তো আপনারা যাচ্ছেন না। আমরা এ-ও বলেছি, আমরা ক্ষমতায় যেতে চাই না। আমরা শুধু চাই, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। সেই নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন। সেই নির্বাচনে যারা আসবে তাদের আমরা ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করে নেব। আপনারা শুধু আপনাদের রাখার জন্য সমস্ত নির্বাচন ব্যবস্থা দখল করে নেবেন, সাধারণ মানুষের কথা একবারও চিন্তা করবেন না, সেটা আমরা হতে দেব না।

ফখরুল আরও বলেন, আমাকে অনেকে বলেন- আপনারা শুধু খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্যই আন্দোলন করেন? আমি বলি না। আমরা গত দুই বছর আন্দোলন করছি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে, মানুষকে অন্যায়ভাবে হত্যার প্রতিবাদে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে, ব্যাংক লুটের বিরুদ্ধে ও টাকা পাচারের বিরুদ্ধে। আমরা এখন খালেদা জিয়ার মুুক্তির জন্য যে আন্দোলন করছি এটা সামগ্রিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, বেগম খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্রকে আলাদা করে দেখা যাবে না। এই আন্দোলন শুধু বিএনপির আন্দোলন হওয়া উচিত নয়। এই আন্দোলন সমগ্র দেশের মানুষের।

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে ও ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরীর পরিচালনায় মানববন্ধন আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি প্রমুখ।