বিএসএমএইউর ট্রেজারার ডাঃ আতিকের খুঁটির জোর কোথায়?
প্রকাশ : 2024-07-01 14:25:39১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ট্রেজারার প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমানের দুর্নীতির অভিযোগ সহ নানা অনিয়মের তদন্তে কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এছাড়াও ট্রেজারার প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমানের বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ হয়েছে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয় ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বাংলাদেশ ও আমেরিকার দ্বৈত নাগরিক। তার সন্তানরা সবাই আমেরিকায় থাকেন। ডা. আতিক মেডিক্যাল অফিসার থেকে নিজ বেতনে সহকারী অধ্যাপক এবং পরবর্তীতে সহযোগী এবং সর্বশেষ অধ্যাপক হওয়ার ক্ষেত্রে একাধিক অনিয়ম করেছেন। এমনকি নিজের চাকরি স্থায়ীকরণে নিয়েছেন জালিয়াতির আশ্রয়। পাশাপাশি ডাক্তার হয়েও তিনি প্রভাব খাটিয়ে পূর্ত কমিটির সভাপতি ও দুই মেয়াদে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ (ট্রেজারার) হিসাবে দায়িত্ব পালনের সুবাদে তার বিরুদ্ধে অর্থ লোপাটের অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে দুদকের প্রাপ্তি শাখাও। তিনি গাজীপুর শ্রীপুর উপজেলায় একশ সতেরো শতাংশ জমি ক্রয়সহ কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। সন্তান-সন্তাদি আমেরিকায় রেখে তিনি তার দুর্নীতির অর্থ গুলোর সিংহ ভাগই আমেরিকাতে পাচার করছেন বলে অনেকের ধারণা। তিনি দশ লাখ টাকায় একটি স্পাইরোমেট্রি মেশিন পিজি হাসপাতালের জন্য ক্রয় না করে ব্যক্তিগত স্বার্থে হাতিরপুলের অ্যাজমা কিউয়র সেন্টারের সাথে যোগসাজশে প্রতিদিন তিন লাখ টাকা করে ক্লিনিকের মাধ্যমে বাগিয়ে নিচ্ছেন। এবং ঢাকা মেডিকেলের এই জাতীয় রোগীগুলোকে তিনি উল্লেখিত ক্লিনিকে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। উক্ত মেশিনটি দশ লাখ টাকায় ক্রয় করলে পিজি হাসপাতালের যে আয় হতো তা জেনেও তিনি নিজ স্বার্থের জন্যে মেশিনটি ক্রয় করছেন না।
তিনি নারী কেলেঙ্কারির সাথেও জড়িত আছেন বলে তাঁর বিরুদ্ধে নানা মহলের অভিযোগ রয়েছে। বিশ্বস্ত সূত্র থেকে জানা যায় যে, উপ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বিপ্লবী রোমাকে উপ-পত্নী হিসেবে দীর্ঘদিন যাবত তাকে ভোগ করে আসছেন। এই জন্যই বিপ্লবী রোমাকে সবাই ফাষ্ট লেডি হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকেন। তার দুর্নীতির ব্যাপারে দৈনিক ইনকিলাব, দৈনিক যুগান্তর, দৈনিক সংবাদ, দি ফাইন্যান্স টুডে ও দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ সহ অন্যান্য বেশকিছু অনলাইন ও দৈনিক পত্রিকায় একাধিক বার খবর প্রকাশ হওয়ার পরেও তিনি তার চাকরীতে এখনও বহাল রয়েছেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ট্রেজারার প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমানের রন্ধে রন্ধে দুর্নীতি সহ নানা অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কশিমন (ইউজিসি)।
এছাড়াও ট্রেজারার প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমানের বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ হয়েছে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বাংলাদেশ ও আমেরিকার দ্বৈত নাগরিক। তার সন্তানরা সবাই আমেরিকায় থাকেন। ডা. আতিক মেডিক্যাল অফিসার থেকে নিজ বেতনে সহকারী অধ্যাপক এবং পরবর্তীতে সহযোগী এবং সর্বশেষ অধ্যাপক হওয়ার ক্ষেত্রে একাধিক অনিয়ম করেছেন। এমনকি নিজের চাকরি স্থায়ীকরণে নিয়েছেন জালিয়াতির আশ্রয়। পাশাপাশি ডাক্তার হয়েও তিনি প্রভাব খাটিয়ে পূর্ত কমিটির সভাপতি ও দুই মেয়াদে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ (ট্রেজারার) হিসাবে দায়িত্ব পালনের সুবাদে তার বিরুদ্ধে অর্থ লোপাটের অভিযোগ আনা হয়েছে।
তদন্ত আদেশে বলা হয় বিএসএমএমইউ’র ট্রেজারার অধ্যাপক ডা. আতিকের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মাধ্যমে পদোন্নতি গ্রহণ, মেডিকেল অফিসার পদের চাকরি নিয়মবহির্ভূতভাবে স্থায়ীকরণ, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ও সিন্ডিকেটের অনুমোদন ব্যতিরেকে সহকারী অধ্যাপক পদে নিয়োগ ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে সহকারী অধ্যাপক থেকে সহযোগী অধ্যাপক পদে ভূতাপেক্ষভাবে পদোন্নতি গ্রহণ, ব্যক্তিগত নথি গায়েব, বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্তকাজ ও ডি-ব্লকে ক্যাপসুল লিফট স্থাপন কাজ থেকে অর্থ লোপাট এবং হাসপাতালের রোগী নিজ ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ সম্বলিত একটি পত্র ইউজিসি বরাবর দাখিল করা হয়েছে।
বিশ্বস্ত সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান ১৯৯৯ সালের ৪ জুলাই ৩১ বছর ১ মাস ১৯ দিন বয়সে ২ বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত হন। স্মারক নং বিএসএমএমইউ-৯৯/২৩২৭ মোতাবেক অতিরিক্ত বয়সের কারণে তাকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয়। তখন থেকে ছিলেন মেডিক্যাল অফিসার। সেখান থেকে সবেতনে সহকারী অধ্যাপক হন। পরে অতিরিক্ত রেজিস্ট্রারের চিঠিতে পদোন্নতি পেয়ে হয়ে যান নিয়মিত সহকারী অধ্যাপক। সহকারী অধ্যাপক পদে নিয়মিত হওয়ার ৯ মাস ২৫ দিন পর আগের রেজিস্ট্রারের এক চিঠিতে সহযোগী অধ্যাপক পদেও পদোন্নতি পান। সর্বশেষ পদোন্নতির পর তিনি বর্তমানে অধ্যাপক এবং বক্ষব্যাধি বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এদিকে অভিযোগ উঠেছে তার সহকারী অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতিতে মানা হয়নি কোনো নিয়ম। হয়নি সিন্ডিকেট সভাও।
বিএসএমএমইউ’র সিনিয়র শিক্ষকরা বলেছেন, তিনি জালিয়াতির মাধ্যমে সহকারী অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক হলে তার বর্তমানের অধ্যাপক পদটিও অবৈধ। সহকারী অধ্যাপক পদে স্থায়ী না হয়েই মেডিক্যাল অফিসার থেকে তিনি কীভাবে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি নিলেন, সেই প্রশ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকের।
নিয়ম বহির্ভূতভাবে চাকরি স্থায়ীকরণ
অভিযোগ উঠেছে, বর্তমানে গ্রেড-২ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান ১৯৯৯ সালের ৪ জুলাই ৩১ বছর ১ মাস ১৯ দিন বয়সে ২ বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত হন। স্মারক নং বিএসএমএমইউ-৯৯/২৩২৭ মোতাবেক অতিরিক্ত বয়সের কারণে তাকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয়। গত ৩০-০৮-২০০০ তারিখে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের দশম সভার ৯ (ঘ) ধারা মোতাবেক ‘কোর্সে থাকা ও চুক্তিভিত্তিক রেসিডেন্টদের নিয়মিত করা হবে না’। এবং ৩০-০৬-২০০২ তারিখে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ১২তম সভায় ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমানকে নিয়মিত না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
উপাচার্য তার নেয়া অতিরিক্ত বেতন ফেরত নিয়ে চাকরি স্থায়ীকরণের বিষয়টি সিন্ডিকেটে উপস্থাপনের নির্দেশ দেন। কিন্তু ০৪-০৫-২০০৩ তারিখে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ১৪তম সভায় ডা. আতিকের বিষয়ে আলোচ্য সূচি সুকৌশলে বাদ দেয়া হয়। কিন্তু সব বিধি ভঙ্গ করে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত প্রশাসন কোনো এক অদৃশ্য ক্ষমতাবলে তাকে নিয়মিত (স্থায়ী) করে।
পদোন্নতির ক্ষেত্রে জালিয়াতি
পদন্নোতি ও নিয়োগ বিধির ৫(খ) ধারা অনুযায়ী মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ প্রদান করার জন্য সিন্ডিকেট সভার অনুমোদনের বিধান থাকলেও ডা. আতিকুর রহমানের বেলায় তা মানা হয়নি।
নিয়মানুযায়ী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের ক্ষেত্রে বহুল প্রচারিত পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ও নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ডের সুপারিশ সিন্ডিকেট থেকে অনুমোদন নিতে হয় এবং সিন্ডিকেটে অনুমোদনের তারিখ থেকে এই নিয়োগ কার্যকর হয়। অথচ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডেকেট সভার ধারাবাহিক তারিখ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ডা. মো. আতিকুর রহমানের সহকারী ও সহযোগী অধ্যাপক পদে নিয়োগ কার্যকরের ২০০৪ সালের ১ জানুয়ারী ও ২০০৮ সালের ১ জানুয়ারি সিন্ডিকেট কোনো সভা অনুষ্ঠিত হয়নি। এছাড়া ওই তারিখের পরের সিন্ডিকেট সভায়ও তার নিয়োগ সংক্রান্ত কোনো আলোচ্যসূচিও ছিল না। ফলে তার এই নিয়োগের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
গত ০১-০১-২০০৪ তারিখ থেকে তাকে সবেতনে সহকারী অধ্যাপক হিসাবে রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগে নিয়োগ দেয়া হয়। অপরদিকে তিনি সহকারী অধ্যাপক পদে নিয়মিত হন ২৫-০৯-২০০৮ তারিখে। স্মারক নং- বিএসএমএমইউ ২০০৮/৮০৩০। এবং যোগদান করেন ০৭-১০-২০০৮, স্মারক নং-বিএসএমএমইউ ২০০৮/৮২৮১(৬)।
ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমানের নিয়মিত সহকারী অধ্যাপক পদে নিয়োগ পত্রটি (স্মারক নং-২০০৮/৮০৩০, তাং ২৫-০৯-২০০৮) এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে স্বাক্ষর করেন অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার কাজী এবাদুল্লাহ। বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরির শর্তাবলী-সংবিধির ৫ (ছ) ধারা অনুযায়ী ‘সকল শিক্ষক/কর্মকর্তা/কর্মচারীর নিয়োগপত্র/চুক্তি [সিন্ডিকেট কর্তৃক অনুমোদিত] রেজিস্ট্রার কতৃক স্বাক্ষরিত হইবে’। এই নিয়োগপত্রে তাকে ০১/০১/২০০৪ থেকে নিয়মিত করা হয়েছে। উক্ত ০১-০১-২০০৪ তারিখে কোনো সিন্ডিকেট মিটিং অনুষ্ঠিত হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় ও চাকরি বিধি অনুযায়ী ভূতাপেক্ষ নিয়োগ/পদোন্নতির সুযোগ নেই।
আবার ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান সহযোগী অধ্যাপক [পি পি] হন ০১-০১-২০০৮ তারিখে। সহকারী অধ্যাপক পদে নিয়মিত না হয়েই সহযোগী অধ্যাপকের পদোন্নতি বাগিয়ে নেন এমন অভিযোগও উঠেছে। আইন অনুযায়ী এটা কখনোই হতে পারে না বলছেন সংশ্লিষ্টরা। মেডিক্যাল অফিসার [সবেতনে সহকারী অধ্যাপক বা মেডিকেল অফিসার] থেকে সরাসরি সহযোগী অধ্যাপক! অথচ সহকারী অধ্যাপক পদে নিয়মিত হওয়ার পর নির্দিষ্ট মেয়াদে (সহকারী অধ্যাপক হিসেবে নিয়মিত পদে ৩ বছর ও পিপি এর জন্য ৪ বছর) চাকরি করার পর সহযোগী অধ্যাপকের জন্য বিবেচিত হওয়ার কথা। কিন্তু ০১-০১-২০০৮ তারিখেও সিন্ডিকেটের কোনো মিটিং অনুষ্ঠিত হয়নি।
২৬-০৬-২০০৮ তারিখে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ২৮তম সভার আলোচ্যসূচি-৫ এর সিদ্ধান্ত-৫ অনুযায়ী ‘ব্যক্তিগত পদোন্নতির ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত পদোন্নতির সময়কালকে অভিজ্ঞতা হিসেবে গণনা করা হবে।’ এটি সাধারণত অধ্যাপক হওয়ার জন্য প্রযোজ্য। এখানেও ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির কোনো উল্লেখ নেই।
বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী, সবেতনে সহকারী অধ্যাপক মানে মেডিক্যাল অফিসার সমমান এবং সবেতনে সহকারী অধ্যাপকের মেয়াদকাল কখনোই সহযোগী অধ্যাপক হওয়ার জন্য শিক্ষকতার সময় হিসাবে বিবেচিত হবে না। শুধুমাত্র নিয়মিত সহকারী অধ্যাপকের মেয়াদকালই সহযোগী অধ্যাপকের পদোন্নতিতে বিবেচনায় আনা হয়। এভাবে তিনি বিধি বহির্ভূতভাবে, ০১-১-২০০৪ ও ০১-০১-২০০৮ সিন্ডিকেটের অনুমোদন ছাড়াই সহকারী ও সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতিতে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন।
নিয়ম বহির্ভূতভাবে পারসোনাল সার্ভিস ফাইল গায়েব করা
বিএসএমএমইউ সূত্র জানায়, তিনি তার ব্যক্তিগত মূল ফাইল বাসায় নিয়ে রাখেন। বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট তার পার্ট ফাইল আছে ।
শিক্ষকদের সেকশনে তার ব্যক্তিগত ফাইলের বিষয়টি জানতে চাইলে কর্মকর্তারা বলেন তার মূল ফাইল নাই, পার্ট ফাইল আছে । এর বেশী কিছু বললে তাদের চাকুরী থাকবে না এবং এই পার্ট ফাইলে ২০১৩ সালের আগের কোন ডকুমেন্ট নাই বলে জানা গেছে।
আর্থিক অনিয়ম
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডি ব্লকের পশ্চিম পাশের ক্যাপসুল লিফটটি কর্তৃপক্ষ উপহার হিসেবে পাওয়ার পরও সেখান থেকে ডাঃ আতিকুর রহমান ২৩ লক্ষ টাকা লোপাট করেছেন বলে অভিযোগ আছে।
কথিত আছে যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ত কমিটির সভাপতি ও ট্রেজারার হওয়ার কারনে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ বিভাগ ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে কোটি কোটি টাকা লোপাট করেছেন।
রোগী বাগিয়ে ক্লিনিক ব্যবসা
ডাঃ আতিকুর রহমান প্রতিদিন তার পিয়ন উজ্জ্বলের মাধ্যমে বক্ষব্যাধি বর্হি-বিভাগ থেকে কমপক্ষে ৫০-৬০ জন রোগী এলিফ্যান্ট রোড, বাটার সিগনালে অবস্থিত তার ক্লিনিকে নিয়ে ভ্যাক্সিন দেন। উজ্জ্বল পরিবাগের মডিউল হাসপাতালের সামনে রোগীদেরকে জড়ো করে। তারপর একের পর এক ভ্যানে করে রোগীদেরকে তার নির্ধারিত হাসপাতালে প্রেরন করেন। প্রতি ভ্যাক্সিন দিতে ১৮০০/ টাকা নেয়া হয়। এর মধ্যে ডাঃ আতিক পান ১৫০০/ আর দালাল পান ৩০০/ টাকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক শিক্ষক হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভ্যাক্সিনের ব্যবস্থা না করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অসাধু দালাল চক্রের মাধ্যমে অনৈতিক ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন।
বিএসএমএমইউ ছাত্র হোস্টেল অবৈধ মাদক ও নারী
ডা: আতিকুর রহমানের ডান হাত বলে পরিচিত অনকোলজি বিভাগের মেডিকেল অফিসার, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ জাহান শামস নিটোল দীর্ঘদিন এ ব্লকের ৭১৮ নাম্বার রুমটি দখল করে সেখানে প্রকাশ্যে মাদকের ব্যাবসা করে আসছেন।
গত ২০/৭/২২ তারিখে ডা: নিটোলের এ ব্লকের ৭১৮ নাম্বার রুমে মেজর ডাঃ হামিদ এনজিওর এক দেহব্যবসায়ীর সাথে বিএসএমএমইউ এর প্রক্টোরিয়াল বডি, সদস্য ও শাহবাগ থানার পুলিশের কাছে হাতে-নাতে আটক হয়।
বিএনপি-জামায়াত সমর্থক ড্যাবের সদস্য : অভিযোগ রয়েছে ডা. আতিক ২০০২ সালে ড্যাবের (ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশান অব বাংলাদেশ) আজীবন সদস্য হন। যখন আওয়ামীপন্থি চিকিৎসকরা চাকরিচ্যুৎ হয় ও তাদের বিরুদ্ধে মামলা-হামলা হয় তখন ডা. আতিকের প্রোমোশন হয়। ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ সূত্রেও এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের [বিএসএমএমইউ] উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, আমিও এমন অভিযোগ জানতে পারেছি। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো পদক্ষেপ বা উদ্যোগ নিয়েছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ভিসি বলেন, এখনো কোনো পদক্ষেপ নেইনি। তবে উদ্যোগ নেব বলে ভাবছি।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত নাম্বারে ফোন দিলে বন্ধ পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কশিমন [ইউজিসি] তদন্ত আদেশে তিনটি কার্যপরিধি নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। তা হলো- কমিটি বর্ণিত বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো নথি, সিন্ডিকেট ও অন্যান্য পর্ষদে বিভিন্ন সময়ে গৃহীত সিদ্ধান্ত কার্যবিবরণীসহ আনুষঙ্গিক কাগজপত্রাদি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারবেন। তদন্তের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট যেকোনো ব্যক্তির বক্তব্য গ্রহণ করতে পারবেন এবং কমিটি এতদ্বিষয়ে বিধি-বিধান পর্যালোচনাপূর্বক যথাশীঘ্র একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন কমিশন কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিল করবেন।
কার্যত: অদৃশ্য কোন শক্তিবলে ডাঃ আতিকুরের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থাই গ্রহণ করা হয়নি, তিনি আছেন বহাল তবিয়তে স্বগৌরবে।
এতেকরে অভিজ্ঞ মহলের মনে প্রশ্ন জেগেছে যে আসলে তার খুঁটির জোর কোথায়? অনুসন্ধান ও গোপন সূত্রে খবর পাওয়া যায় যে, তিনি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের একজন সৎ ও ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিকে ভুল-ভাল বুঝিয়ে এবং বিশ্বস্ত সম্পর্ক স্থাপনের পরিপ্রেক্ষিতে ধারাবাহিক ঐ দুর্নীতিগুলি চালিয়ে যাচ্ছেন।