বিএনপির ‘৩০ আসন’র বক্তব্য তাদের বেলাতেই প্রযোজ্য, ইতিহাস সাক্ষী

প্রকাশ : 2022-10-01 19:14:19১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

বিএনপির ‘৩০ আসন’র বক্তব্য তাদের বেলাতেই প্রযোজ্য, ইতিহাস সাক্ষী

বিএনপির ‘৩০ আসন’র বক্তব্য তাদের বেলাতেই প্রযোজ্য, ইতিহাস এর সাক্ষী বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

শনিবার (১ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ইউল্যাব প্রাঙ্গণে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ৩০টির বেশি আসন পাবে না’-মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

ড. হাছান বলেন, ২০০৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলেন, অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ৩০টি আসনও পাবে না। ২০০৮ সালে দেশের ইতিহাসে অত্যন্ত অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছিল। ভাগ্যের এমনই নির্মম পরিহাস, বিএনপি ২৯টি আসন পেয়েছিল, ৩০টি পূর্ণ করতে পারেনি। সুতরাং মির্জা ফখরুল যে কথা বলেছেন, সেটি বিএনপির বেলাতেই প্রযোজ্য।

‘আগামীতে যে নির্বাচন হবে, আওয়ামী লীগ আবারও ধস নামানো বিজয় অর্জনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করবে ইনশাআল্লাহ।’ বলেন তিনি।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বিএনপি নির্বাচন হতে দেবে না- এমন এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ওনারা স্বপ্ন দেখতে পারেন, স্বপ্ন দেখতে দোষ নেই। তবে এই স্বপ্ন তাদের জন্য দুঃস্বপ্ন, কারণ এটি কখনো বাস্তবায়িত হবে না।

আইন অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশ যেমন ভারত, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, জাপান এবং কন্টিনেন্টাল ইউরোপের অন্যান্য দেশে যেভাবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন হয়, তখন চলতি সরকার যেমন নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে, আমাদের দেশেও সেভাবেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

বিএনপি রাজনীতিকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, বিএনপি তো সংঘাত চায়। তারা রাজনীতিকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। মুন্সিগঞ্জে নিজেদের কর্মীকে নিজেরা মেরেছে, ভবিষ্যতেও মারবে এবং সরকারের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করবে। তারা তো এই রাজনীতিই করে। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা তো তারাই করেছিল। আহসান উল্লাহ মাস্টার, কিবরিয়া সাহেবকেও তো তারাই হত্যা করেছিল।

ড. হাছান বলেন, বিএনপির তারা তো হত্যার রাজনীতিই করে। জিয়াউর রহমানও তো হত্যার মাধ্যমেই ক্ষমতা দখল করেছিলেন। আর বেগম জিয়াও কম যাননি। তারা আসলে সংঘাতময় রাজনীতি করে, সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়। কিন্তু দেশের মানুষ সেটি হতে দেবে না।

‘স্বপ্ন আর প্রচেষ্টা জীবনযুদ্ধ জয়ের চাবিকাঠি’

এর আগে ইউনিভার্সিটি অভ লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) অষ্টাদশ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক ড. হাছান মাহমুদ।

বিশ্ববিদ্যালয়কে মানুষকে পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার কারখানা হিসেবে বর্ণনা করে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, জীবন একটি যুদ্ধক্ষেত্র, উজান ঠেলে পাড়ি দেওয়া, স্রোতের বিপরীতে এগিয়ে চলা। জীবন চলার পথে অনেক প্রিয়জনকে হারাতে হতে পারে, খানিক থমকে গেলেও যুদ্ধ বন্ধ করা যাবে না।

ড. হাছান এসময় ভারতের প্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি এপিজে আবদুল কালামকে উদ্ধৃত করে বলেন, জীবনযুদ্ধে জয়ী হতে যেমন স্বপ্ন থাকতে হবে, তেমনি স্বপ্নের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে প্রচেষ্টা। ঘুমিয়ে স্বপ্ন নয়, সে স্বপ্ন ঘুমোতে দেয় না, সেই স্বপ্ন আর প্রচেষ্টা মিলে এক ধরনের ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফোর্স তৈরি হবে, যা মানুষকে জীবনে জয়ের পথে এগিয়ে নেবে।

লতা মুঙ্গেশকর, স্টিভ জবস প্রমুখের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, জীবন সংগ্রামে ধর্ম-বর্ণ-চেহারা নয়, অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর অধ্যবসায়ই বিজয়ের চাবিকাঠি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ইমরান রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ এমপি। স্বাগত বক্তার বক্তব্য দেন ট্রাস্টি বোর্ডের ভাইস প্রেসিডেন্ট কাজী আনিস আহমেদ। এসময় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে একটি কেক কাটেন তারা।

এছাড়াও এদিন দৈনিক সমকাল পত্রিকার ১৭তম এবং চ্যানেল আইয়ের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিষ্ঠান দুটির কার্যালয়ে গিয়ে সংশ্লিষ্টদের অভিনন্দন জানান তিনি।