বহিষ্কার প্রত্যাহার দাবিতে মানববন্ধন-চলছে বিতর্ক
প্রকাশ : 2024-01-23 13:30:38১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
‘শরীফ থেকে শরীফা’ গল্পের পাতা ছিঁড়ে চাকরিচ্যুত হওয়া শিক্ষক আসিফ মাহতাবকে স্বপদে বহাল রাখার দাবি জানিয়েছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। একইসঙ্গে টান্সজেন্ডার বা সমকামিতা ইস্যুতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান জানতে চান তারা। শিক্ষকের চাকরিতে পুনর্বহাল এবং সমকামিতা ইস্যুতে বক্তব্য পরিষ্কার না করলে সব ধরনের ক্লাস, পরীক্ষা এবং টিউশন ফি দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় মেরুল বাড্ডায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসের সামনে মানববন্ধন করে এসব কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্নবর্ষের শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীদের ‘শরীফ থেকে শরীফা মানি না মানব না, এক দুই তিন চার টান্সজেন্ডার বাংলা ছাড়। হই হই রই রই টান্সজেন্ডার গেলি কই, মস্তিষ্কের বিকৃতি কারীদের ঠাঁই নেই’ বলে টান্সজেন্ডারের বিপক্ষে নানান স্লোগান দিতে দেখা যায়।
তারা বলেন, দেশের নতুন শিক্ষাক্রমের ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুতে সমালোচনা করায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলোসফির খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাবকে চাকরিচ্যুত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের পক্ষে কথা বলা শিক্ষক মহতাবের দোষ কিনা প্রশ্ন রেখে শিক্ষার্থীরা বলেন, এদেশে কিছু মানুষ মানসিকভাবে বিকৃত, জেন্ডার পরিবর্তন করার পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান কি? তারা আরও বলেন, দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের পক্ষে কথা বলা যদি অন্যায় হয় তাহলে আমরা শিক্ষার্থীরা সে অন্যায়কে প্রশ্রয় দিতে পারি না। অবিলম্বে শিক্ষক মহতাবকে স্বপদে ফিরত আনতে হবে। একইসঙ্গে সমকামী ইস্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুনতাসীর মামুন বলেন, ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুটা ধর্মীয় দিক থেকে অনেক সংবেদনশীল। এ ইস্যুতে কথা বলা সবারই দরকার মনে করছে। একজন শিক্ষক কোনো একটা ইস্যুতে প্রতিবাদ করতে পারে। বহিষ্কার ইস্যুটা নিয়েও আজকে রাস্তায় দাঁড়িয়েছি। ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুতে আমরা আমাদের প্রতিবাদ চালিয়ে যাব।
তারা আরও বলেন, তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর প্রতি আমাদের সহানুভূতি আছে। তাই বলে তাদেরকে পাঠ্যপুস্তকে এনে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ওপর চাপিয়ে দেওয়া এটা মানব না। পশ্চিমরা বাংলাদেশে তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর নামে সমকামী সংস্কৃতি চালু করার অপচেষ্টা আমরা মানব না।
এদিকে সোশ্যাল মিডিয়াতে ঝড় উঠেছে এর পক্ষে বিপক্ষের যুক্তিতে। অনেকের মতে শিক্ষক হয়ে বই ছিঁড়ে ফেলা অনেক বড় অন্যায় কাজ। তারা বলছেন, 'বাংলাদেশেরই একজন শিক্ষক, বাংলাদেশের শিক্ষাবোর্ডের একটি বই এর পাতা জনসম্মুখে নিজে ছিড়ে অন্যদেরও উৎসাহ দিচ্ছেন৷ এটা বড় ধরনের অন্যায় । আপনার বই এর লেখা নিয়ে সমস্যা, আপনি প্রতিবাদ করুন, মানববন্ধন করুন, প্রবন্ধ লিখুন, আরও অনেক উপায় আছে মানুষকে সচেতন করার। অভিভাবকদের নিয়ে আন্দোলন করুন। মানুষকে সচেতন করুন। '
আবার অনেকেই বলছেন এখানেও তথ্য গোপন করা হচ্ছে। কেবল একটি মাত্র ক্লাস করেই তিনি শিক্ষক পদ থেকে বহিস্কার হওয়ার কথা জানিয়েছেন, যেখানে তিনি ছিলেন কারিকুলাম ইটিসি পেপার ওয়ার্কার।
২০১৩ সালের নভেম্বরে সমাজের মূলধারায় সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে হিজড়া জনগোষ্ঠীকে তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় সরকার। ২০১৪ সালের ২৬ জানুয়ারি হিজড়াদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে গেজেট প্রকাশ করা হয়। মূলত সপ্তম শ্রেণির এই পাঠ্যবইয়ে হিজড়া জনগোষ্ঠীর প্রতিবন্ধকতা থাকলে সমাজে এগিয়ে যাচ্ছে বলে আলোচনা করা হয়েছে। যদিও সেখানে তাদের বেড়ে উঠা, সামাজিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত, শিক্ষাগ্রহণের সুযোগ না থাকা ইত্যাদি উঠে এসেছে এই অধ্যায়ে। সম্পূর্ণ অধ্যায় নিয়ে আলোচনা না করেই একদল ইস্যু তৈরি করছে বলে দাবি করছে অনেকে। বইয়ে ট্রান্সজেন্ডার অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে পাঠ্যপুস্তক ছিড়লেন শিক্ষক
সা/ই