বন্ধ হয়ে যেতে পারে গাজায় ত্রাণ কার্যক্রম
প্রকাশ : 2024-04-04 14:03:10১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা অব্যাহত থাকার কারণে সেখানে ত্রাণ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সম্প্রতি গাজায় ইসরায়েলি সৈন্যদের হামলায় ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের (ডব্লিউসিকে) সাতজন সাহায্য কর্মী নিহত হয়েছেন। এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে সংস্থাটি তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে অনেক ফিলিস্তিনিই এখন আশঙ্কায় আছেন যে, তারা কীভাবে তাদের পরিবারের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করবেন।
এই সংস্থাটির সঙ্গে কাজ করা অন্য একটি দাতব্য সংস্থা আনেরা। নিজেদের স্টাফ এবং তাদের পরিবারের লোকজনের জীবনের ঝুঁকি বাড়তে থাকায় আনেরাও জানিয়েছে যে, তারা তাদের কার্যক্রম বন্ধ করেছে।
ফিলিস্তিনজুড়ে সপ্তাহে ২০ লাখ মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করে থাকে এই দুই সংস্থা। জাতিসংঘ ইতোমধ্যেই সতর্ক করেছে যে, ইসরায়েলি নিষেধাজ্ঞা, চলমান আগ্রাসন এবং শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে গাজার অর্ধেক জনসংখ্যা চরম খাদ্য সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে।
এদিকে নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল সতর্ক করেছে যে, ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের সঙ্গে যা ঘটেছে তা পুরো ত্রাণ ব্যবস্থাকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।
এদিকে গাজায় ত্রাণ সংস্থার কর্মীদের প্রতিটি গাড়িকে সুপরিকল্পিতভাবে লক্ষ্যবস্তু করার জন্য ইসরায়েলি বাহিনীকে অভিযুক্ত করেছেন ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের (ডব্লিউসিকে) প্রতিষ্ঠাতা হোসে আন্দ্রেজ।
সোমবারের হামলায় সংস্থাটির সাত কর্মীকে হত্যার ঘটনা সাধারণ কোনো ভুল ছিল না দাবি করে তিনি বলেন, ইসরায়েলি বাহিনীকে বারবার তাদের গতিপথ সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। ডব্লিউসিকের ফিলিস্তিনি কর্মীদের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, পোল্যান্ড, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মীরাও ইসরায়েলের এ হামলায় নিহত হয়েছে।
ইসরায়েল অবশ্য বলছে, হামলার ঘটনাটি ছিল ‘মারাত্মক ভুল’ এবং এজন্য দেশটি দুঃখ প্রকাশ করেছে। একই সঙ্গে দেশটি এ ঘটনার একটি স্বাধীন তদন্ত পরিচালনার অঙ্গীকার করেছে।
ডব্লিউসিকের একটি বহর সোমবার রাতে দক্ষিণ দিকে যাত্রা করার সময় হামলার শিকার হয়। তারা দেইর আল-বালাহর একটি গুদাম থেকে ১০০ টনেরও বেশি খাবার নিয়ে যাত্রা করেছিল। তারা ইসরায়েলের নির্ধারণ করে দেওয়া উপকূলীয় রুট দিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু তারপরেও তাদের ওপর হামলা চালানো হয়।
সাহায্য সংস্থার বহরে তিনটি গাড়ি ছিল। এর মধ্যে দুটি ছিল সাঁজোয়া যান, যেখানে পরিষ্কারভাবে সাহায্য সংস্থার লোগো লাগানো ছিল। তিনটি গাড়ির ওপরই হামলা চালানো হয়। হোসে আন্দ্রেজ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ভাগ্য খারাপের মতো এমন কোনো পরিস্থিতি ছিল না যে.. আমরা ভুল জায়গায় বোমা ফেলেছি বলেই তারা পার পেয়ে যাবে।
ইসরায়েলের চ্যানেল ১২-এর সঙ্গে আরেক সাক্ষাৎকারে আন্দ্রেজ বলেন, এটা ছিল সত্যিকার অর্থেই সরাসরি একটি হামলা এবং তা ছিল পরিষ্কারভাবে চিহ্নিত যানবাহনের ওপর যেগুলোর গতিবিধি সম্পর্কে আইডিএফ (ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স) এর সবাই জানতো।
এদিকে ডব্লিউসিকের নিহত ছয় কর্মীর মৃতদেহ নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের জন্য গাজা থেকে মিশরে নেওয়া হয়েছে। এই হামলায় নিহত অপর এক ফিলিস্তিনি সহকর্মীকে তার নিজের শহর রাফাহতে দাফন করা হয়েছে।
ডব্লিউসিকে গাজার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ত্রাণ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। তারা কার্যক্রম স্থগিত করার পর গাজায় মানবিক সহায়তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এদিকে নিরাপত্তা পরিস্থিতি মূল্যায়নের জন্য রাত্রিকালীন চলাচল অন্তত ৪৮ ঘণ্টার জন্য স্থগিত করেছে জাতিসংঘ।
সান