প্রধানমন্ত্রীকে ডা. জাফরুল্লাহর চিঠি, ড. ইউনূসকে ‘বিশেষ দূত’ করাসহ ১১ পরামর্শ
প্রকাশ : 2021-04-19 15:22:41১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি লিখেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। জাফরুল্লাহ চৌধুরীর উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর হোসেন মিন্টু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সোমবার (১৯ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু জাফরুল্লাহ চৌধুরীর চিঠি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছে দেন।
চিঠিতে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন এবং তিনি দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে ১১টি পরামর্শ দেন।
>> অক্সিজেন, ওষুধ, মেডিকেল যন্ত্রপাতি ও সামগ্রী থেকে বিশেষ এসআরও’র মাধ্যমে সকল প্রকার শুল্ক, অগ্রিম আয়কর, মূসক প্রভৃতি প্রত্যাহার করা;
>> আইসিইউ পরিচালনার জন্য জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসক ও নার্স প্যারামেডিকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা; ২০০ জন চিকিৎসক ও ৫০০ জন নার্স টেকনিশিয়ানকে আইসিইউতে দ্রুত অক্সিজেন প্রদান, নন-ইনভেসিব শ্বাসপ্রশ্বাস প্রক্রিয়া, শ্বাসতন্ত্রে টিউব মারফত অক্সিজেন সরবরাহ, অন্যান্য নিয়ন্ত্রিত শ্বাসপ্রশ্বাস ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া এবং শ্বাসনালী ট্যাকিয়া ছিদ্র করে দ্রুত অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য এক মাসের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা;
>> সকল ওষুধের মূল্য এবং রোগ পরীক্ষার পদ্ধতিসমূহের চার্জ সরকার কর্তৃক নির্ধারণ করে দেয়া;
>> কারাগারে আবদ্ধ সকল ব্যক্তিকে দ্রুত টিকা দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া এবং খুনের দায় ও দুর্নীতির কারণে দণ্ডিত অভিযুক্ত ছাড়া অন্য সবাইকে জামিনে মুক্তি দেয়া;
>> সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে প্রতি বছর ২০ হাজার ছাত্র ভর্তি করা এবং এমবিবিএস পাশের পর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে এক বছর বাধ্যতামূলক ইন্টার্নশিপ করানো;
>> আগামী বাজেটে সকল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের নিরাপত্তা বেষ্টনী সংস্কার, গভীর নলকূপ ও বিদ্যুতায়ন ব্যবস্থার উন্নয়ন, মেডিকেল, নার্সিং, ফিজিওথেরাপি ও টেকনিশিয়ানদের জন্য ডরমিটরি, ক্লাসরুম, লাইব্রেরি, ডাইনিং রুম এবং পাঁচজন চিকিৎসক ও ১০ জন নার্সিং, ফিজিওথেরাপি ও টেকনিশিয়ান প্রধানদের জন্য ৬০০-৭০০ বর্গফুটের বাসস্থান, বহিঃবিভাগসহ ৩০ শয্যার হাসপাতাল, ল্যাবরেটরি ও অপারেশন থিয়েটার নির্মাণের জন্য ছয় কোটি টাকা এবং অপারেশন থিয়েটার, এক্সরে আলট্রাসনোলজি, চক্ষু ও বিভিন্ন ল্যাবরেটরির যন্ত্রপাতির জন্য অন্যূন চার কোটি টাকা বরাদ্দের ব্যবস্থা নিন। এরূপ উন্নয়নে ইউনিয়নের প্রায় এক লাখ জনগণের জন্য আধুনিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে।
>> লকডাউন কার্যকরে দরিদ্র ও নিম্নবিত্ত পরিবারদের সরাসরি আর্থিক প্রণোদনার পরিবর্তে বিনামূল্যে মাসিক রেশন চালু করে চাল, ডাল, আটা, আলু, তেল, চিনি, পেঁয়াজ, রসুন প্রভৃতি দিতে হবে। রেশন বিতরণের জন্য সামরিক বাহিনী, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং এনজিওকর্মীদের ব্যবহার সুফল দেবে;
>> ট্রিপসের বাধ্যতামূলক লাইসেন্সের মাধ্যমে ভ্যাকসিন উৎপাদন সুবিধা সৃষ্টির জন্য নোবেল লরিয়েট ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আপনার বিশেষ দূত করে ইউরোপে পাঠান;
>> ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য ০.৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করুন, সুফল পাবেন;
>> গত বছর দ্রুত সিনোজাকের ট্রায়াল অনুমোদন না দিয়ে যে ভুল করা হয়েছিল, তার পুনরাবৃত্তি কাম্য নয়;
>> গণস্বাস্থ্য উদ্ভাবিত এন্টিবডি এন্টিজেনের অনুমোদন এক বছরেও হয়নি। ড. বিজন কুমার শীলের ভিসা না হওয়ায় বাংলাদেশে ফিরতে পারছেন না। ছয় মাস আগে চার বিজ্ঞানীর তত্ত্বাবধানে রিয়েল টাইম পিসিআর ল্যাবরেটরি স্থাপিত হলেও ব্যবহার শুরু করার জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতর আজ পর্যন্ত অনুমতি দেয়নি। ক্ষতি হচ্ছে দেশের, বিষয়টি আপনাকে পুনরায় অবগত করলাম।
চিঠিতে তিনি ‘দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণে জাতির কঠিন সমস্যা থেকে মুক্তির সম্ভাবনা অনেক বেশি’ বলে উল্লেখ করেন এবং প্রধানমন্ত্রীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।