প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা ছিল পরিকল্পিত, সরকারের একটি অংশের হাত রয়েছে নাহিদ

প্রকাশ : 2025-12-22 17:09:05১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা ছিল পরিকল্পিত, সরকারের একটি অংশের হাত রয়েছে নাহিদ

যারা প্রথম আলো, ডেইলি স্টারসহ সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়েছে, তারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্লোগানকেই ব্যবহার করেছে। শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুকেই ব্যবহার করেছে। আমাদের স্লোগানগুলোকে ব্যবহার করে সেখানে আক্রমণ করেছে এবং সেটার পক্ষে সম্মতি তৈরি করেছে। এই ঘটনার পরে আমরা বলেছি, এটার মধ্যে সরকারের ভেতরের একটা অংশের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে, সমাজে অনেকদিন ধরে সম্মতি তৈরি করা হয়েছে। এটার সঙ্গে রাজনৈতিক ব্যাকআপও আছে। এই তিনটা ঘটনা একসঙ্গে না ঘটলে এত বড় সাহস সেই রাতে করা সম্ভব হতো না। কয়েক হাজার মানুষ এটা ঘটিয়েছে তেমনও না। ফলে পুরো ঘটনাই পরিকল্পিত ছিলো বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি আহ্বায়ক (এনসিপি)।

সোমবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে সম্পাদক পরিষদ ও নোয়াব আয়োজিত যৌথ প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন। নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, আজকের প্রতিবাদ সভায় সংহতি প্রকাশ করছি। আজকে আমরা এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়েছি- এটা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক। এই পুরো সময়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে যে পরিবেশ ও বাংলাদেশ প্রত্যাশা করেছিলাম সেই পথে আগাচ্ছি না।

তিনি বলেন, শরিফ ওসমান হাদির একটি এক্সিডেন্ট হতে পারে এবং এরপরে কী কী ঘটনা ঘটানো হবে বাংলাদেশে এটার একটি চক্রান্ত, পরিকল্পনা আগে থেকেই করা হয়েছে। ঘটনাগুলো দেখে আমাদের কাছে এমনই মনে হয়েছে। ফলে এজন্যই বলেছি, আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক যে, জুলাইয়ের নাম বা শরিফ ওসমান হাদিকে ব্যবহার করে এই ঘটনাগুলো ঘটানো হলো। আমরা মনে করি আমদের সবারই এর পেছনে দায় আছে। আমাদের অনেক বেশি দায় আছে, আমরা যারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছিলাম। ব্যক্তিগতভাবে আমি তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলাম।

এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, আমাদের জন্য আরও দুর্ভাগ্যজনক- মব ভায়োলেন্স যে শব্দটা ব্যবহার করছি, এই শব্দটার সঙ্গে প্রথম দিকে আমি একমত হতাম না, এই শব্দটার বিরোধীতা করতাম। কারণ আমরা যাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলাম তাদের পক্ষ থেকেই বলা হয়েছিল জুলাই গণঅভ্যুত্থান মবোক্রেসি। ফলে আমরা বলেছি, এটা মবোক্রেসি না। আমরা অনেক কিছু বলেছি, গণঅভ্যুত্থান-বিপ্লবের পর অনেক কিছু হয়, পুলিশ নেই, মানুষের ১৬ বছরের অনেক ক্ষোভ। কিন্তু দেড় বছর পার হয়ে গেছে এখন এটা একটি পরিকল্পিত অপরাধ হচ্ছে। এটা পুরো দেশের রাজনীতি, নির্বাচন সেটাকে একদিকে নিয়ে যাওয়ার জন্যই এই পরিকল্পনা, চক্রান্ত। আমি মনে করি আমাদের সবারই এই জায়গা থেকে দায়িত্ব নেয়া উচিত। এই ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তারা খুবই স্পষ্ট, কারা এটার পক্ষে সম্মতি তৈরি করেছে। কারা সে রাতে সেখানে গিয়েছে, লেখালেখি করেছে। সবাই মিলে সরকারকে বাধ্য করতে হবে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারে। একইসঙ্গে শরিফ ওসমান হাদিকে যারা এইভাবে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলিবিদ্ধ করলো, সেই বিষয়টাকে সুরাহা করতে হবে।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখসারির এই নেতা বলেন, সেই রাতে ঘটনা ঘটানোর পরে আমার মনে হয়েছে দেশে ৫০০ মানুষ নাই, যে সেখানে ওই বিল্ডিংয়ের সামনে গিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করতে পারে। এটা আমাদের জন্য আরও দুর্ভাগ্যজনক মনে হয়েছে। আমরা যদি সাথে সাথে রেসপন্স করতে পারতাম! সবার প্রতি আহ্বান থাকবে- জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নামে কোনোকিছু আমরা বিন্দুমাত্র অ্যালাউ করবো না। মিডিয়ার উপর আক্রমণ, প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর, যেটা আইনের শাসনকে ব্যাহত করবে- কোনোকিছুর পক্ষে সম্মতি তৈরি করবে; তাদের বিরুদ্ধে আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে।