পূর্বাচল থেকে সোহরাওয়ার্দী আসলেন, একটু এগিয়ে এবার পল্টনে আসুন
প্রকাশ : 2022-11-26 18:53:18১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
বিএনপি মহাসচিব কুমিল্লার গণসমাবেশের মঞ্চে উঠেই উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বলেন, ‘গোমতী নাকি কুমিল্লা চান’? এতে উপস্থিত জনতা কুমিল্লা বলে জবাব দেন।
এরপর বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজ যেখানে আপনারা দাঁড়িয়ে আছেন, এই সমাবেশের জন্যই নয়ন খুন হয়েছে। নয়নের বুকে জ্বলা আগুন এই সমাবেশ। সরকার ভাতে মারছে, গুলিতে মারছে। আর তারা বলছে, ‘আমরা কি রিজার্ভ চিবিয়ে খেয়েছি?’’ আমরা বলবো, রিজার্ভ আপনারা গিলে খেয়েছেন। আপনার মন্ত্রীরা মিলে গিলে খেয়ে মোটা তাজা হয়েছেন। আপনারা দেখেছেন, তারা (এমপি-মন্ত্রীরা) দিন দিন কী মোটা হচ্ছে। ১০ তলা বাড়ি থেকে ২০ তলা বাড়ি হচ্ছে তাদের। কিন্তু দেশের কী হচ্ছে? সময় থাকতে কেটে পড়েন- না হলে পালানোর জায়গা পাবেন না’
১০ তারিখে অনুষ্ঠিতব্য ঢাকার মহাসমাবেশ বন্ধ করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তারা আগে বলেছিল, ঢাকায় সমাবেশ করা যাবে না।এরপর পূর্বাচল থেকে সোহরাওয়ার্দী আসলেন। একটু এগিয়ে এবার পল্টনে আসুন।
শনিবার কুমিল্লা টাউন হল প্রাঙ্গণে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ঢাকার সমাবেশ হবে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ১০ তারিখের সমাবেশ বন্ধ করার জন্য ঘরে ঘরে মামলা দিচ্ছে। রেইড দিচ্ছে। কিন্তু ঢাকার সমাবেশ বন্ধ করা যাবে না। যেমনটা আগের সমাবেশ বন্ধ করা যায়নি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘২০১৮ সালের রাতের ভোট এবার কি আপনারা চান? না চাইলে ১০ ডিসেম্বর আসুন। আমরা নির্দলীয় সরকার ছাড়া কোনও নির্বাচনে যাচ্ছি না। নির্বাচন হবে কেয়ারটেকার (তত্ত্বাবধায়ক) সরকারের হাতে। আপনার মন্ত্রীরা মন্ত্রী থাকবে, আপনি প্রধানমন্ত্রী থাকবেন- আর নির্বাচন দেবেন, তামাশা পেয়েছেন?’
তিনি বলেন, ‘এখন মানুষ বলে আগে জানলে ভাঙা নৌকায় উঠতাম না। মানুষ নৌকায় উঠে ভুলের মাশুল দিচ্ছে। চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ সব কিছুর আকাশ ছোঁয়া দাম। এই সরকার মানুষের স্বপ্ন লুটে খেয়েছে। এ জন্য বলি, মানুষ না খেতে পেরে রাস্তায় নেমেছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, কেউ ন্যায় বিচার পায় না। সবার বিরুদ্ধে মামলা। যেভাবে খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। তারা এ দেশের কারান্তরীণ করে রেখেছে। আমরা বলতে চাই, নতুন কমিশন গঠন করে নির্বাচন দিতে হবে। নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া কেউ নির্বাচনে যাব না।
ফখরুল ইসলাম আরও বলেন, তারেক রহমান বলেছেন, টেক ব্যাক বাংলাদেশ। কোন বাংলাদেশ? যে বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা একাত্তরে দেখেছি।
সমাবেশে বাবার খোঁজ চান গুম হওয়া সাইফুল ইসলাম হিরুর ছেলে রাফসান ইসলাম ও হুমায়ূনের ছেলে শাহরিয়ার হোসেন। সন্তান হত্যার বিচার চাইলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশের গুলিতে নিহত ছাত্রদল নেতা নয়নের বাবা।
এসব ঘটনার বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি দুঃখ ভারাক্রান্তে বলছি, বিনা কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তারা আমাদের ভাই, ছেলেকে হত্যা করেছে। এরা এত ভয়ংকর। তারা পাশবিক হয়ে গেছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘স্বাধীন হতে ৭১ সনে একবার যুদ্ধ করেছি। এখন আবার যুদ্ধ করতে হচ্ছে ভোটের অধিকারের জন্য। আমরা আরেকটা ৭১ আনবো। এবারের যুদ্ধ হবে ভোট চোর, কম্বল চোরের বিরুদ্ধে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘অনেক মন্ত্রীরা দেখি, কী কী জানি বলে। আপনারা বলেন, আওয়ামী লীগ নির্দলীয় সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন করলে কী জামানত থাকবে? শোনেন, এই সাধারণ মানুষকে নিয়ে যেমন খুশি তেমন আর করার সুযোগ নেই।’
তিনি বলেন, ‘শুনেছি, ১৫ দিনে নাকি রাজশাহীতে ৩৫ মামলা হয়েছে। সব গায়েবি মামলা। ১০ ডিসেম্বরের আগে এমন বহু গায়েবি মামলা হবে। এদের (সরকারের) চামড়া গণ্ডারের মত। সব করে তারা দোষ দেয় বিএনপির। তারা বলে, আমরা নাকি অগ্নিসন্ত্রাস করবো। শুনুন, অগ্নিসন্ত্রাস করতে গিয়ে চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের ক্যাডাররা ধরা খেয়েছে বিএনপি নয়।’
ফখরুল বলেন, ‘১০ বছরের এই লুটেরা সরকার খেয়েছে ৮৬ লাখ কোটি টাকা। আর এক বছরে বিদ্যুতের নামে খেয়েছে ৭৮ হাজার কোটি টাকা। এগুলা কে খেয়েছে? বিএনপি? শোনেন পত্রিকায় দেখলাম, গণসমাবেশে সাধারণ মানুষ যাচ্ছে। আচ্ছা এটা কী অস্বাভাবিক কিছু? মানুষ এখন নিরুপায়। তারা নাকি আমাদের পূর্বাচলে পাঠাবে, তারপর আরেকটু এগিয়ে আসলেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। আমরা বলি, আরেকটু এগিয়ে আসুন। তাছাড়া উপায় নাই। এগিয়ে আসতেই হবে। ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ পল্টনেই হবে। সব ফয়সালা রাজপথে হবে। গুম, খুন হত্যা, নির্যাতন সব কিছুর বিচার হবে- বাংলার মাটিতেই হবে। এ দেশের মানুষ করবে।’