পুলিশের সঙ্গে সমঝোতায় চলছে বাড্ডার অবৈধ মেলা
প্রকাশ : 2023-07-24 17:47:11১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
পুলিশের সঙ্গে বিশেষ সমঝোতার মাধ্যমে রাজধানীর বাড্ডায় একটি অবৈধ বাণিজ্য মেলা গত ১২ দিন ধরে চলমান রয়েছে। সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ওই মেলা থেকে আয়োজক হুমায়ুন কবির ও তার সহযোগীরা লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
মেলার আয়োজক হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে আবু তাহের নামের একজন বয়োবৃদ্ধ প্রতিবন্ধী এমন অভিযোগ করেছেন।
প্রতিবন্ধী আবু তাহের হুমায়ুনের বিরুদ্ধে মেলার জন্য বৈধ অনুমতির তোয়াক্কা না করা, বিশ্বাস ভঙ্গ, প্রতারণা এবং প্যাড জালিয়াতির মত গুরুতর অপরাধের অভিযোগ এনে মেলাটি বন্ধের দাবিসহ প্রতারণার প্রতিকার প্রার্থনায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের নিকট গত ১৯ জুলাই একটি আবেদন করেন। সেই আবেদনের ৬ দিন পেরিয়ে গেলেও যথাযথ কতৃর্পক্ষের অনুমতিবিহীন ওই অবৈধ মেলাটি বন্ধ হয়নি। এ কারণে প্রশ্ন উঠেছে হুমায়ুনের খুঁটির জোর কোথায়?
পুলিশ কমিশনারের নিকট করা অভিযোগপত্রে বয়োবৃদ্ধ দুঃস্থ প্রতিবন্ধী আবু তাহের বলেন, “উত্তর বাড্ডার পূর্বাঞ্চলে ২৫নং লাইনের বালুর মাঠে এধরনের একটি মেলা করতে গিয়ে আমি হুমায়ূন নামের এক ব্যক্তির মারাত্মক প্রতারণার শিকার হয়েছি। ওই ব্যক্তি অসুস্থ আমাকে মীরপুরের বাসা থেকে বাড্ডার মেলার ওয়ার্কিং পার্টনার হওয়ার জন্য ডেকে আনেন। মেলা করার জন্য তার প্রয়োজনীয় প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা না থাকায় তিনি লভ্যাংশের সম অংশীদারত্ব প্রদানের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমার নিকট থেকে আমাদের দুস্থ প্রতিবন্ধী প্রতিষ্ঠানের প্যাডটি হাতিয়ে নেন। উদ্দেশ্য প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতি মানুষের সহজাত সহানুভূতিকে কাজে লাগিয়ে মেলার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে সহজে অনুমতি লাভ। তার প্রস্তাব মতো আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার আশায় আমি মেলার বৈধ অনুমতির জন্য আমাদের প্রতিবন্ধী সংগঠনের প্যাডে আপনার বরাবরে একটি আবেদনপত্র তৈরি করে তাতে স্বাক্ষর দিয়ে হুমায়ুন নামের ওই ব্যক্তিকে প্রদান করি। একই সঙ্গে মেলার মাঠে দোকান ও বিনোদন প্রাপ্তির জন্য বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট তদ্বির করি। আমার প্রতি সহানুভূতি এবং দুস্থ প্রতিবন্ধীদের মেলা নির্ঝঞ্চাট হবে আস্থা ও বিবেচনায় অনেকেই স্টল/বিনোদন সামগ্রী নিয়ে সেখানে আসেন। অসুস্থ শরীর নিয়েই পেটের দায়ে আমি সেখানে টানা কয়েক দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করি। মেলার পারমিশন নিয়ে আসার দায়িত্ব ছিল তার। দু'দিন বাদেই মেলা আনুষ্ঠানিক শুরু। মাঠে দোকানপাট বসছে। পারমিশন নেই। খবর পেয়ে বাড্ডা থানা পুলিশ এসে হুমায়ূনকে নিয়ে যায়। সেখান থেকে ফিরে এসে তিনি আমাকে বলেন, 'ওসির সঙ্গে সমঝোতা হয়ে গেছে, আর কোনো সমস্যা নেই। আপনার প্যাডটি হারিয়ে গেছে, ওটার আর কোনো প্রয়োজনও নেই। কমিশনারের কাগজ নিছি, মেলা এমনিতেই হবে'। এরপর আমাকে বিদায় করা হয়। লাভের আশায় কয়েকদিনের অক্লান্ত পরিশ্রমের পর এভাবে তার দ্বারা প্রতারিত হবো ভাবতে পারিনি। আমি সেখান থেকে চোখে পানি নিয়ে ফিরে আসি। দু'দিন বাদে মেলাটি শুরু হয়। আমি জানি ওই মেলার কোনো অনুমতি হয়নি। অথচ মেলাটি চলছে।”