পাহাড়ে শান্তি ফিরে আসবে, সন্ত্রাসীদের জায়গা বাংলাদেশে নেই: হুঁশিয়ারি সেনাপ্রধানের
প্রকাশ : 2024-04-07 16:05:33১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে দুটি ব্যাংকের তিনটি শাখায় ডাকাতির ঘটনায় নতুন করে আলোচনায় আসা সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফকে আর ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সেনাপ্রধান এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, শান্তি আলোচনা শুরুর পর তাদের বিশ্বাস করেছিলাম। কিন্তু সন্ত্রাসীরা বিশ্বাস ভঙ্গ করেছে। সুতরাং তাদের আর ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। ইনশাল্লাহ জনগণের মধ্যে শান্তি ফিরে আসবে। সন্ত্রাসীদের জায়গা বাংলাদেশে নেই।
ব্যাংকে সন্ত্রাসী হামলা ও ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণের ঘটনায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে রোববার (৭ এপ্রিল) বান্দরবানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান চালিয়ে কয়েকজন সন্ত্রাসীকে আটক করেছে জানিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, ‘আপনারা হয়তো জেনেছেন গতকাল রাতে কিছু সন্ত্রাসীকে ধরতে সক্ষম হয়েছে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কিছু অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে। একটা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’
শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘দৃশ্যমান কিছু কার্যক্রম আপনারা দেখতে পাবেন। এর ফল আপনারা সময়মতো পাবেন। আমি আপনাদের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে চাই, আমার কাছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা খুবই পরিষ্কার। বাংলাদেশের জনগণের শান্তির জন্য, দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য যা করণীয়, প্রধানমন্ত্রীর কড়া নির্দেশ সেটাই করতে হবে। সেটা বাস্তবায়নে আমরা সক্ষম হব বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করছি।’
সেনাপ্রধান বলেন, ‘শুধুতে আমরা তাদের (কেএনএফ) বিশ্বাস করেছিলাম যে শান্তি আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু এর মধ্যে অশান্তির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এর জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ইনশাল্লাহ জনগণের মধ্যে শান্তি ফিরে আসবে। তারা দেখতে পারবে যে সন্ত্রাসীদের কোনো জায়গা বাংলাদেশে নাই। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সম্পূর্ণভাবে সক্ষম।’
শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান রয়েছে। এটা একটা সমন্বিত প্রচেষ্টা। গোয়েন্দারা তাদের জায়গা থেকে যা করণীয় করছে। বিজিবি তাদের কাজ করছে। র্যাব–পুলিশের যেটা করণীয় সেটা তারা করছে। সেনাবাহিনীও তাদের করণীয় করছে। সবকিছু আমরা সমন্বয় করছি একসাথে। এটা কোনো আইসোলেটেড অপারেশন হচ্ছে না। এখানে আমরা গভর্নমেন্ট যেটা চাচ্ছে, সেই স্ট্যাটেজির মধ্যে থেকেই আমরা আমাদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে পারব বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।’
গত মঙ্গলবার রাতে তারাবি নামাজের সময় বান্দরবানের রুমা শাখা সোনালী ব্যাংক ও আশপাশের এলাকা ঘিরে ফেলে শতাধিক সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা। তারা মসজিদ থেকে সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে ধরে নিয়ে ব্যাংকের ভেতরে মারধর করে। পরে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
এ সময় ব্যাংকের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ১০ পুলিশ ও ৪ আনসার সদস্যকে নিরস্ত্র করে ৮টি চাইনিজ অটোমেটিক রাইফেল, ২টি এসএমজি, ৪টি শটগান ও ৪১৫ রাউন্ড গুলি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় ২ পুলিশ সদস্য আহত হন। এ ঘটনার ১৬ ঘণ্টা পর থানচিতে আরও দুটি ব্যাংকে ডাকাতি হয়।
বৃহস্পতিবার রাতে অপহৃত সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা নেজাম উদ্দিনকে রুমা বাজার থেকে উদ্ধার করে র্যাব। এর পরপরই থানচি থানা থেকে গোলাগুলির শব্দ শোনেন স্থানীয়রা। এর রেশ কাটতে না কাটতেই মধ্যরাতে আলীকদমের ২৬ মাইল ডিম পাহাড় এলাকায় যৌথবাহিনীর চেক পোস্টে হামলা হয়। সবগুলো ঘটনার সঙ্গেই কেএনএফ জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে।