পঞ্চগড় আমতলা সীমান্ত রেখায় পাথর বালু উত্তোলন                            

প্রকাশ : 2024-01-29 19:29:23১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

পঞ্চগড় আমতলা সীমান্ত রেখায় পাথর বালু উত্তোলন                            

করতোয়া নদী ঘেঁষে ভারতের ভূখন্ড। চলছে পাথর বালু উত্তোলন। পাশে বনবিভাগের বিশাল বনভূমি। যা পঞ্চগড় সদর উপজেলার মীরগড় নামক বাজারের উত্তর পাশে অবস্থিত। যার নাম মীরগড় আমতলা ফরেস্ট। পাশে রয়েছে বিজিবি’র সীমান্ত ক্যাম্প।

তারপাশে নব্যতা হারিয়ে শুকনো হয়ে বয়ে গেছে করতোয়া নদী। বহমান করতোয়া নদী ভারতের উজান থেকে আসা। হাজার বছরের ঐতিহ্য নিয়ে করতোয়া বিধৌত নদীটি আজ কালের গর্ভে হারিয়েছে তার জীব বৈচিত্র্য।

আমতলা ফরেষ্টে যুগ যুগ ধরে  শ শ বিঘা জমিতে বন বিভাগের বৃক্ষাদি। সেই জমিতে দাঁড়ানো আছে পরিবেশ বান্ধব নানা গাছ।এটি পঞ্চগড় সদর বন বিভাগের আওতায় রোপিত গাছের বাগান।শহর থেকে মাত্র তিন কিলোমিটারের মতো দুরত্ব। পায়ে পায়ে হেটে গেলেই  ভারত ভূখন্ড। ওই সীমানায় রয়েছে তিনটি সীমানা পিলার । পিলার নম্বর, ৪২১ ও ৪২২।

সরজমিনে গেলে দেখা যায় বন বিভাগের এক তৃতীয়াংশ নদীতে মিশে যাওয়ার উপক্রম। ওই বাগানের পশ্চিম পাশে প্রায় ৫০০ মিটার জমি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।পাথর আর বালু তোলার কারনে হারিয়েছে নদীটির নব্যতা। নেই  বন বিভাগের অনেক গাছ। গাছের শেকড় পর্যন্ত তুলে ফেলে পাথর আর বালুর বড় বড় গর্ত করা হয়েছে।

এলাকাবাসি জানায় পাশেই ভারতের ডাসপাড়া এলাকা। রয়েছে বিএস এফ’র তিনটি ক্যাম্প। ক্যাম্পগুলোর নাম চান্দাপাড়া, গোয়ালগছ ও বর্মণ বস্তি।ঘুরে ঘুরে দেখা যায় অনেক যায় এমন অবস্থা হলে সীমানা পিলার মিশে গিয়ে হয়তো জমিগুলো ভারতের হয়ে যেতে পারে। কোনমতে দাঁিড়য়ে আছে তিনটি সীমানা পিলার। যা দেখার কেউ নেই।

বন বিভাগের উত্তর-পশ্চিমে পাথর আর বালু তোলার ফলে বাগানটির প্রায় ২০০ মিটার জমি নদীতে মিশে গেছে। পড়ে আছে গাছ বা অর্ধ গাছের ডাল-পালা। রয়েছে শেকড়। বনের জমিটি এলামেলো হয়ে মূল চিহ্ন যেনো হারিয়ে গেছে। এরপরেও দেখার কেউ না থাকায় চেষ্টা চলছে এসব গাছ কেটে ফেলারও। সেক্ষেত্রে প্রমাণ বহন করছে পড়ে যাওয়া গাছগুলো।বিস্তৃর্ণ জমিটি ঘুরে দেখা যায় বাগানের মাঝে মাঝে অনেক গাছ কেবা কারা কেটে নিয়ে গেছে।

ওই করতোয়া নদীর ভারত সীমানায় পাথর বালু তুলতে দেখা গেছে ২০ থেকে ৩০ জন শ্রমিককে। ওপারে বিএসএফ সদস্যরা দাঁড়িয়ে নীরব ভূমিকা পালন করছে। কয়েকজন শ্রমিক জানান, ওনারা (বিএসএফ) বলেন নদীতে পাথর তোলো। তবে তারা পাহারা দেন যেনো নদীর কিনার (ভারত ভূখন্ড) ভাঙ্গা না হয়।

এছাড়া মীরগড়ের স্থায়ী বাসিন্দা হাজী শিশার উদ্দীন বলেন ‘ আমরা সীমান্ত ঘেঁষা দুই একর চা বাগান আছে। নদীতে পাথর তুলতে তুলতে আমার জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। কি করবো বুঝতেছিনা।  সাইদুল ইসলাম বলেন , এখানে কবরস্থান আছে। পাশে রয়েছে আমার গাছের বাগান। ফাথর তুলতে গিয়ে আমার জমি এখন ভেঙ্গে পড়ার ঝূঁঁকিতে পড়েছে।

অবৈধ ভাবে পাথর  ও বালু উত্তোলনের বিষয়ে ওই আমতলা ফরেষ্ট বাগানে এ সব বিষয়ে সরজমিন ঘুরে দেখা হলে নানা অসঙ্গতি দেখা যায়। নিয়মনীতি উপেক্ষা করে নদী ও বন বিভাগের জমির পাথর বালু তুলে নিচ্ছে একটি চক্র।

অভিযোগ রয়েছে মীরগড় এলাকার  জবেদ আলির পূত্র নুর আলমের নেতৃত্বে , বাধঁন পিতা- রফি ও আজাদ পিতা- দীন আলি নামে তিন জন প্রভাব খাঁটিয়ে শ্রমিক দিয়ে পাথর ও বালু উত্তোলন করে নিচ্ছেন। তবে নুর আলমের মুঠো ফোনে একাধিকবার কল দিলে ও তিনি তা রিসিভ করেননি।

তবে পঞ্চগড় সদর বনবিভাগের রেঞ্জার মধু  সদন বর্মণ জানান, আমরা বন বিভাগ থেকে  এ বিষয়ে গত ২৩/১২/২৩ ইং তারিখে ৩৫৬, ৩৫৭,৩৫৮,৩৫৯, ৩৬০. ৩৬১,৩৬২,৩৬৩,৩৬৪,৩৬৭ ষ।ভঅরকে ৯ জনকে নোটিশ প্রদান করেছি। এদের নাম জাহাঙ্গীর পিতা- লাল্টু মনির পিতা- খোকা সাদিকুল পিতা- কুদ্দস, জালাল পিতা- মঙ্গলু জলিল পিতা-মঙ্গলু , হামিদুল পিতা- মেয়কেন্দু(কেন্দু) মোহসাফ পিতা- সাদু . রকেট পিতা- জব্বার ও মিলন পিতা-টেপরা। রেঞ্জার মধু সদন বর্মণ জানান, নুর আলম আমাকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করে। কিন্তু তা আমি করিনি। এদের নামে  কোর্টে মামলা হবে। আপনারা এ জন্য সহযোগিতা করুন।

 ওই এলাকার নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন এই তিনজনের  নির্দেশে এই অবৈধ পাথর বালু উত্তোলন করা হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। তারা অত্র এলাকায় কর্তৃত্ব বিস্তার করে বিজিবি ও বন বিভাগের নামে প্রতিদিন নিদিষ্ট হারে টাকা তোলা হয়। 

এ বিষয়ে মীরগড় কোম্পানি কমান্ডার ফিরোজ খান মুঠো ফোনে জানান , আমাদের নামে টাকা তুলবে এমন কোনো স্কোপ নাই। এ বিষয়ে উপজেলা আইশৃক্সখলা মিটিং এ একাধিকবার ইউএনও সাহেব কে বলেছি। কয়েকমাস আগে জেলা আইনশৃক্সখলা মিটিং ও বলেছি। আমাদের দায়িত্ব চোরাকারবারি রোধ করা। আমরা ধৈর্য ধরতে পারতেছি না। মামলা দেওয়ার বিষয়ে বলেন ‘এখানেই একটু দূর্বল। তাদের ধরতে পারতেছিনা।তিনি বলেন তাদের কারনে বিএসএফরা আমাদের অভিযোগ দেয়।