পঞ্চগড়ে পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে বন্ধুদের হাতে যুবকের মৃত্যু !  

প্রকাশ : 2025-02-23 18:35:28১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

পঞ্চগড়ে পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে বন্ধুদের হাতে যুবকের মৃত্যু !  

পঞ্চগড়ে পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে বন্ধুদের মারধরে রবিউল ইসলাম (১৮) নামে এক যুকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার রাতে  সদর উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের নয়নীবুরুজ উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে ঝলইহাট-কালিয়াগঞ্জ সড়কে মারধরের ঘটনাটি ঘটে। এসময় রবিউলকে তার বন্ধুরা এলোপাথারি মারধর করে তার বাম চোখে ইট দিয়ে আঘাত করে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে পালিয়ে যায়। পরে তাকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বৃহস্পতিবার বিকেলে গুরুতর আহত রবিউলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পঞ্চগড় জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক রংপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন। পরে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলা শহর এলাকায় পৌঁছালে তার শারিরীক অবস্থার আরো অবনতি হয়। পরে দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের দাফনকাজ সম্পন্ন করে পরিবারের সদস্যরা। এঘটনায় নিহতের মামা জয়নাল ইসলাম গত শুক্রবার রাতে রবিউলের পাঁচ বন্ধুর না উল্লেখ সহ অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামী করে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এঘটনায় আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানা গেছে।নিহত রবিউল সদর উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের দামুকা পাড়া এলাকার জহিরুল ইসলামের ছেলে।

মামলার আসামীরা হলেন, নতুনহাট এলাকার মোতালেবের ছেলে জিসান ইসলাম রহমত (২২), একই এলাকার মোতালেব (৫৫), কাজী পাড়া এলাকার হাবেজ আলীর ছেলে আব্দুল্লাহ (১৮), তারজেন ইসলামের ছেলে সবুজ (২৩), রফিকুল ইসলামের ছেলে বক্কর (২০)।মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, বেশ কিছুদিন আগে রবিউলের কাছে ৬০০ টাকা ধার করে নেন তার বন্ধু জিসান ইসলাম রহমত। বেশ কিছুদিন ধরে রবিউল পাওনা টাকা চাইলে গেলে জিসান রেগে যেত। এনিয়ে তাদের বিরোধ তৈরী হয়। পরে গত বুধবার রাতে সদর উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের দামুকা পাড়া এলাকার নিজ বাড়ি থেকে ঝলই বাজারে আসছিলেন রবিউল। এসময় মাগুড়া ইউনিয়নের নয়নীবুরুজ উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে ঝলইহাট-কালিয়াগঞ্জ সড়কে রবিউলের পথরোধ করেন জিসান সহ অন্য আসামীরা। এসময় তাকে এলোপাথারি মারধর শুরু করে তারা। একপর্যায়ে রবিউলের বাম চোখে জিসান ইট দিয়ে আঘাত করলে মাটিতে পড়ে যায় সে। পরে তাকে শ্বাসরোধে হত্যার জন্য গলা চিপে ধরেন আসামীরা। পরে মৃত ভেবে তাকে ফেলে পালিয়ে যান তারা। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বাসায় পাঠিয়ে দেন। পরে রাতে তার শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে বৃহস্পতিবার বিকেলে রবিউলের শারিরীক অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক রংপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন। এসময় দেবীগঞ্জ পৌঁছালে রবিউলের শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়লে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাকে নিয়ে গেলে জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন। 

মামলার বাদী ও নিহত রবিউলের মামা জয়নাল ইসলাম বলেন, পাওনা ৬০০ টাকা চাইতে গিয়ে জিসান ও তার সহযোগীদের হাতে আমার ভাগিনাকে মারধরে হত্যা করা হলো। রবিউলের বাবা ছেলেকে হারিয়ে পাগল প্রায়। দিনমজুর পরিবারের সংসারে নিজেরাই কষ্টে দিনাতিপাত করতো। পরিবারের উপার্জনক্ষম একটা ছেলে আজ নাই। পরিবারটি কিভাবে শোক সামলাবে। রবিউলকে হত্যার তিনদিন হয়ে গেলেও আসামীদের ধরতে পুলিশের কোন পদক্ষেপ নাই। আমরা দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। আসামীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি ফাঁসি চাই আমরা। পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাসুদ পারভেজ বলেন, আসামীরা ঘটনার পরপরই পালিয়ে গেছে। তবে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আসামীদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।