পঞ্চগড়ে নববধূকে হত্যার অভিযোগে ছয় মাস পর স্বামী গ্রেপ্তার
প্রকাশ : 2024-02-01 10:48:37১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলায় এক নববধূকে হত্যার ছয় মাস পর অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সন্ধার দিকে আটোয়ারী উপজেলার তোড়িয়া সুখ্যাতি এলাকায় একটি মাঠ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বুধবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়। সে সময় ওই নববধূ ডায়রিয়ায় মারা গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছিলেন স্বামীর বাড়ির লোকজন।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার জানায়, গত বছরের ৩ জুলাই পঞ্চগড় উপজেলা সদরের মীরগড় মোমিনপাড়া এলাকার জাফরুল্লাহর মেয়ে নিহত সুফিয়া আক্তারের (২২) সাথে আটোয়ারী উপজেলার তোড়িয়া ইউনিয়নের সুখ্যাতি গ্রামের ছুটু মোহাম্মেদের ছেলে শামসুল আলমের বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক দিনের মধ্যেই পারিবারিক কলহে বাবার বাড়ি চলে যান নববধূ সুফিয়া আক্তার। পরে পারিবারিক সালিস বৈঠকের মাধ্যমে সুফিয়াকে ফিরিয়ে আনেন স্বামী শামছুল আলম। এরপর গত ৬ আগস্ট রাতে নববধূ সুফিয়া ডায়েরিয়ায় অসুস্থ্য বলে তার বাবা বাড়ির লোকজনদের জানান স্বামী শাসসুলের পরিবারের লোকজন। পরদিন তাকে দেখতে যাওয়ার পর সে বমি ও পাতলা পায়খানায় মারা গেছেন বলে জানান স্বামীসহ পরিবারের লোকজন।
এদিকে বিয়ের ৩৪ দিনের মাথায় নববধূ সুফিয়ার হঠাৎ মৃত্যুর ঘটনাটি সন্দেহ হলে পরিবারের পক্ষ থেকে –পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে প্রাথমিক সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় এবং আটোয়ারী থানায় একটি ইউডি (অপমৃত্যু) মামলা করে। এ ঘটনার এক সপ্তাহের মাথায় (১৪ আগস্ট) নববধূর বাবা জাফরুল্লাহ পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে শামসুলসহ ১১ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলাও দায়ের করেন।
অন্যদিকে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর জানা যায় ডায়েরিয়ায় নয়, সুফিয়া আক্তারকে নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে। এ নিয়ে গত ১৫ জানুয়ারি ময়নাতদন্তের রিপোর্টসহ আদালতে একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন আটোয়ারী থানা পুলিশের এসআই ছাইফুল ইসলাম। প্রতিবেদন পাওয়ার পর আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে নেওয়ার জন্য আটোয়ারী থানার ওসিকে আদেশ দেন। মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী জালাল উদ্দিন আহাম্মেদ মোবাইল ফোনে বলেন, গত বছরের ১৪ আগস্ট সুফিয়ার বাবা জাফরুল্লাহ বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে শামসুল আলমসহ ১১ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
প্রথম দিকে স্বামীর বাড়ির লোকজন জানিয়েছিলেন, সুফিয়া ডায়েরিয়ায় মারা গেছে। কিন্ত তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট থেকে প্রাতমিকভাবে জানা যায়। পুলিশের এই রিপোর্ট পাওয়ার পর বিজ্ঞ আদালত মামলা এজাহার হিসেবে নিতে আটোয়ারী থানাকে আদেশ দেন।
আটোয়ারী থানা পুলিশে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসির দায়িত্ব) এসআই সোয়েল রানা বলেন, ঘটনার পর আমরা থানায় ইউডি মামলা দায়ের করা হয়। এরপর ময়নাতদন্তের রিপোর্টসহ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হলে নিহতের বাবার দায়ের করা নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহনের আদেশ দেন আদালত। এরপর মঙ্গলবার সন্ধার দিকে প্রধান আসামী শামসুলের বাড়ির পাশে একটি মাঠ থেকে বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অন্য আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের আওয়াতায় আনা হবে বলে জানান এসআই সোহেল রানা।
সান