দেবীগঞ্জে তালিকাভূক্ত মুক্তিযোদ্ধা ১০৩ ভাতা নিচ্ছেন ১৪১জন

প্রকাশ : 2024-09-20 18:23:17১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

দেবীগঞ্জে তালিকাভূক্ত মুক্তিযোদ্ধা ১০৩ ভাতা নিচ্ছেন ১৪১জন

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে উপজেলায় সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমন্ডারের বিরুদ্ধে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানানো ও মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নিয়েও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে শহরের বিজয়চত্বর এলাকায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ তোলেন যুদ্ধকালীন কোম্পানি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে ভুঁইযা।সংবাদ সম্মেলনে চিহ্নিত ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বাতিলসহ আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান সাংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দের একাংশ। সংবাদ সম্মেলনে দেবীগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ও যুদ্ধকালীন কোম্পানী কমান্ডার এ.কে ভুইয়া মূল বক্তব্য উপস্থাপনা করেন।

বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা এ. কে ভুঁইয়া বলেন, ১৯৭৬ সালে দেবীগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা ছিল মাত্র সাতজন। তখন আমরা পুরো থানাতে মুক্তিযোদ্ধা খুঁজে পাইনি। এরপর আমি মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যক্রম থেকে সরে যাই। পরে অনিল চন্দ্র ৩০ বছরে একক ভাবে স্বদেশ চন্দ্র রায়কে সাথে নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ পরিচালনা করেন।তখন আমরা দেখতে পেলাম তিন জনকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও দুই জনকে পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকা ভুক্ত করা হয়। ওই পাঁচ জন মুক্তিযুদ্ধের সময় যুদ্ধে অংশগ্রহন করেনি। আমি তিন জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে তৎকালীন মন্ত্রী তাদের ভাতা বাতিল করে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেন। স্বদেশ চন্দ্র রায় তার দলবল নিয়ে অর্থের বিনিময়ে পুনরায় তিন জনকে তালিকাভুক্ত করেন। তাদের মধ্যে অক্ষয় চন্দ্র রায় নামের একজন ১৯৭৪ সালে নিজ বাড়িতে অসুস্থ হয়ে মারা যান।

তিনি আরও বলেন, দেবীগঞ্জ উপজেলায় বর্তমানে ১০৩ জন তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে। তার মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার ভাতা পাচ্ছেন ১৪১ জন মুক্তিযোদ্ধা। বাকি ৩৮ জন মুক্তিযোদ্ধা ২০০৫ সালেও তারা গেজেট ভুক্ত হতে পারেনি। এই ৩৮ জন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা অর্থের বিনিময়ে অনলাইনে নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে। কিন্তু ভুয়া হওয়ার কারনে তারা আজ পর্যন্ত গেজেট ভুক্ত হতে পারেনি। ভুয়া হয়েও তারা সরকারি ভাতা, বোনাস নিচ্ছেন এবং সরকারি সব সুযোগ সুবিধা নিচ্ছেন এবং ছেলে মেয়েদের সরকারি চাকুরি নিয়ে দিচ্ছেন।

কোম্পানি কমান্ডার ভুইয়া আরও বলেন, স্বদেশ চন্দ্র রায় আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার থাকাকালে মুক্তিযোদ্ধাদেরকে ১০ লক্ষ টাকা করে ঋন নিয়ে দিয়েছেন। তাদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে নিয়েছেন। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকেও তিনি অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের দায়িত্ব থাকাকালে এবং দায়িত্বে না থেকেও তিনি লক্ষ লক্ষ টাকা কামিয়েছেন। তিনি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, দেবীগঞ্জের ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বাতিল করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন দেবীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির আবুল বাশার বসুনিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমান প্রমুখ।