দুই বছর পর বসেছিল ঐতিহ্যবাহী আদমদীঘির চড়ক মেলা
প্রকাশ : 2022-04-15 20:06:45১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
চৈত্র মাসের অন্যতম প্রধান উৎসব চড়ক। বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা সদরের মাঝিপাড়া গ্রামে প্রায় ৭ শত বছর পূর্ব থেকে চৈত্র সংক্রান্তিতে মানুষের পিঠে বড়শি ফুটিয়ে চড়ক ঘুরানো হয়ে আসছে। এবার হিন্দু ধর্ম মতে চৈত্র সংকান্তি উপল¶ে দুই বছর পর গত বৃহস্পতিবার মাঝিপাড়া গ্রামে চরকতলায় চড়ক মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। করোনা বিধি নিষেধের কারনে বিগত দুই বছর এই মেলা বসতে পারেনি। তবে দুই বছর পর মেলা বসায় হিন্দু সম্প্রদায় মানুষের মাঝে প্রাণ ফিরে পেয়েছে এবং জমে উঠেছিল ঐতিহ্যবাহী চড়ক মেলা।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে মেলা প্রঙ্গনে গিয়ে দেখা যায়, মন্দির প্রাঙ্গনের মেলার মাঠে দোকান বসিয়ে মিষ্টি ব্যবসায়ীরা রাজভোগ, রসমঞ্জুরি, সন্দেশ, জিলাপী, বাসাতা, কদমাসহ নানান পদের মিঠাই মিস্টান্ন তৈরি করে সাজিয়ে রেখেছেন থরে থরে, একই ভাবে চালের আটা দিয়ে তৈরি করা মুখরোচক হুরুম ভাজার দোকান, শিশুদের খেলনা টরটরি গাড়ীসহ নানা রকমের খেলনা সামগ্রীর দোকান, মাটির তৈরি রংবেরংয়ের ব্যাংকসহ নানা সামগ্রী এবং চুড়ি ফিতার ডজন খানেক দোকান বসিয়ে পসরা সাজিয়েছিল। মেলায় বিকেলে বেলা বাড়ার সাথে সাথে যেখানে বাড়তে থাকে দর্শনার্থীর ঢল, ওই সব পণ্যের দোকানিদের দর্শনার্থীর ভরপুর হতে দেখা গেছে এবং জিনিসপত্র ব্যাপক বিক্রি হতে দেখা গেছে। চড়ক মেলার প্রধান আকর্ষন চড়ক মানব ঘোড়ানোর সময় (সন্ধা) ভক্ত ও দর্শনার্থীদের ভীড় আরোও বাড়তে থাকার সাথে সাথে কেনা-বেচা বেড়ে গিয়ে জমে উঠেছিল ৭শত বছরের ঐতিহ্যবাহী চড়ক মেলা।
আদমদীঘি উপজেলা সদরের মাঝিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বিকাশ চন্দ্র বলেন, গত দুই বছর করোনা কারনে মেলা বসতে না পারার কারনে এ বছর মেলা বসায় আমরা নতুন করে প্রাণ ফিরে পেয়েছি। দীর্ঘদিন পর মেলা দেখে বেশ ভালো লাগছে। চড়ক মেলা দেখতে আসা সুমন সরকার বলেন, মানুষের পিঠে বড়শি ফুটিয়ে চড়ক ঘুরানো দেখতে আমি প্রতি বছর স্ব-পরিবার নিয়ে এই মেলায় ঘুরতে আসি। এই মেলা উপলক্ষে আদমদীঘির মাঝিপাড়া গ্রাম সহ আশপাশের গ্রামগুলোতে জামাই-মেয়ে সহ আত্নীস্বজনের ব্যাপক সমাগম ঘটে। চড়ক পূজা ও মেলা উদযাপন কমিটির সাধারন সম্পাদক মিহির কুমার সরকার জানান, সরকারি পঞ্জিকা হিসাবে ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ হলেও সনাতন ধর্মের পঞ্জিকা হিসাবে এদিন ৩০ চৈত্র বা চৈত্র সংক্রান্তি। চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে চড়ক পুজা করা হয়েছে। পুজা শেষে সন্ধা লগ্নে, গাছের লম্বা খুঁটির মাথা বাঁশ বেঁধে দড়ি ঝুলিয়ে চড়ক গাছ তৈরী এবং জীবন্ত মানুষের পিঠে বড়শি ফুটিয়ে চড়ক ঘুরানো হয়। পিঠে বড়শি ফুটানোসহ তান্ত্রিক মন্ত্র পরিচালনা করেন ওই গ্রামের বাসিন্দা সন্যাসী মদন বিশ্বাস। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও চড়ক মানব হয়েছিল তালশন গ্রামের মাঝিপাড়ার খোকন বিশ্বাস।