জয় শাহ যেন ‘আইসিসিকে ভারতের কবজায় না নেয়’
প্রকাশ : 2024-12-05 14:11:39১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
আইসিসির চেয়ারম্যান হিসেবে চার বছর দায়িত্ব পালন করেছেন গ্রেগ বার্কলে। নিউজিল্যান্ডের এই ক্রীড়া প্রশাসকের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ৩০ নভেম্বর।
বার্কলের জায়গায় ১ ডিসেম্বর নতুন দায়িত্বে এসেছেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের [বিসিসিআই) সদ্য সাবেক সচিব জয় শাহ। ৩৬ বছর বয়সী জয় শাহই বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থার ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ চেয়ারম্যান।
বিশ্ব ক্রিকেটে ভারতের প্রভাব–প্রতিপত্তি কেমন, তা কারও অজানা নয়। জয় শাহ শীর্ষ পদে আসীন হওয়ায় আইসিসিতে ভারতের একচ্ছত্র আধিপত্য আরও বাড়বে, কেউ কেউ এমন ধারণাও করছেন।
যদিও বিদায়ী চেয়ারম্যান বার্কলে মনে করেন, বিশ্ব ক্রিকেটকে ভালোভাবে সামলানোর বড় সুযোগ জয় শাহর সামনে। কিন্তু তিনি যদি প্রভাব খাটিয়ে আইসিসিকে ভারতের কবজায় নিয়ে নেন, তা ক্রিকেটের জন্য সহায়ক হবে না। বিদায়বেলায় বার্কলে জানিয়েছেন, বিশ্বজুড়ে এখন এত খেলা হয় যে কখন–কোথায়–কোন দলের ম্যাচ চলছে, তা বিশ্ব ক্রিকেটের শীর্ষ পদে থেকেও নিয়মিত খোঁজ রাখতে পারেননি।
সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বার্কলে। সাক্ষাৎকারে ৬৩ বছর বয়সী এই ক্রিকেট সংগঠক আইসিসিতে জয় শাহর নেতৃত্ব ক্রিকেটকে কীভাবে সুবিধা দিতে পারে তা যেমন বলেছেন, তেমনি দিয়েছেন সতর্কবার্তাও, ‘সে যে ভিত্তি পেয়েছে, আমি মনে করি, সেখান থেকে তার সামনে খেলাটিকে অন্য স্তরে নিয়ে যাওয়ার বড় সুযোগ। কিন্তু খেলাটিকে ভারতের কবজায় নিয়ে গেলে চলবে না। আমরা সত্যিই ভাগ্যবান যে সব দিক থেকেই ভারত খেলাটির জন্য বিশাল অবদান রাখছে। অন্যদিকে একটা দেশের এত ক্ষমতা ও প্রভাব অন্য অনেক অর্জনকে নষ্ট করে দিতে পারে, যা খেলাটিকে বৈশ্বিকভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার দিক থেকে সহায়ক নয়।’
বিদায়ী চেয়ারম্যান বার্কলে আরও বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক মহলে ভারতকে আরও বেশি সম্পৃক্ত করার ক্ষমতা জয় শাহর আছে। সবাইকে একত্র করতে এবং ক্রিকেটকে আরও বিকশিত করতে ভারত সাহায্য করতে পারে, এমন অনেক বিষয় রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ—কম কর বা খরচের সুবিধা নিতে বিদেশে তারা একটি বাণিজ্যিক কার্যক্রম স্থানান্তর করতে পারে, তাদের দলগুলোকে ছোট ও উদীয়মান দলের বিপক্ষে [আরও বেশি) খেলার সুযোগ করে দিতে পারে, এ ছাড়া [আইসিসির) সদস্য দেশগুলোকে লাভবান করে তুলতে তাদের প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে আইসিসির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে পারে এবং [ক্রিকেটের) নতুন অঞ্চল ও বাজার খুলতে পারে।’
বিশ্বজুড়ে এখন ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি লিগের দাপট। বছরের বড় একটি অংশ নিয়ে নিচ্ছে এসব লিগ। বার্কলের সময়েই আরও তিনটি টি-টোয়েন্টি লিগ আইসিসির স্বীকৃতি পেয়েছে—যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ ক্রিকেট [এমএলসি), সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইন্টারন্যাশনাল লিগ টি-টোয়েন্টি [আইএলটি২০) ও দক্ষিণ আফ্রিকার এসএ২০।
এত এত টুর্নামেন্ট আর ঠাসা সূচির জন্য বার্কলে সদস্য দেশগুলোর স্বার্থকে দায়ী করেছেন, ‘জানি, আমি [আইসিসির) শীর্ষে পদে আছি। কিন্তু আমি আপনাকে বলতে পারব না কে কার সঙ্গে খেলছে। এমনকি [ডারবান টেস্টে) মার্কো ইয়ানসেনের ৭ উইকেটের খবর সকালে পড়ার আগে আমি জানতামই না শ্রীলঙ্কা দল দক্ষিণ আফ্রিকায় খেলতে গেছে। এর অর্থ ক্রিকেটের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি যেমন ছিল, তা হারিয়ে ফেলেছি। এটা খেলাটির জন্য মোটেও ভালো ব্যাপার নয়। এটা একধরনের জগাখিচুড়ি। সবার স্বার্থের কারণে এমন ঠাসা সূচিতে খেলা চলছে। এই জটলা ছাড়ানো প্রায় অসম্ভব।’