জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতা, এনসিপিকে সতর্ক করলেন সামান্তা  

 

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সম্ভাব্য আসন সমঝোতা নিয়ে দলটির ভেতরে তীব্র মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। জামায়াতকে ‘অনির্ভরযোগ্য মিত্র’ আখ্যা দিয়ে এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন সতর্ক করেছেন যে, দলটির সঙ্গে কোনো ধরনের সমঝোতায় গেলে এনসিপিকে ভবিষ্যতে কঠিন মূল্য চুকাতে হবে। 

রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া পোস্টে তিনি এই কড়া প্রতিক্রিয়া জানান। 

ফেসবুক পোস্টে সামান্তা বলেন, “জামায়াতে ইসলামীর দায়িত্বশীল নেতারা মন্তব্য করেছিলেন, জামায়াতের জুলাইয়ের স্পিরিট, বাংলাদেশের নিয়ে পরিকল্পনা নিয়ে একমত হলে দলটির সাথে জোট করতে আসতে পারে যে-কোনও দল। জাতীয় নাগরিক পার্টির এতদিনের অবস্থান অনুযায়ী তার মূলনীতি, রাষ্ট্রকল্প জামায়াত থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। বিচার, সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচন তথা সেকেন্ড রিপাবলিককে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা দল এনসিপি। ফলে এই তিনটি বিষয়ে অভিন্ন অবস্থান যে-কোনও রাজনৈতিক মিত্রতার পূর্বশর্ত। 

তিনি বলেন, “আমার বর্তমান অবস্থান এনসিপির গত দেড় বছরের অবস্থানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। নিম্নকক্ষে পিআর আওয়াজ তুলে সংস্কারকে ব্যাহত করায় লিপ্ত হয়েছিল জামায়াত। ফলত এনসিপির আহ্বায়ক বলেছিলেন, ‘যারা সংস্কারের পক্ষে নয় তাদের সাথে জোটও সম্ভব নয়।’ তাই জুলাই পদযাত্রার পর থেকে ‘৩০০’ আসনে একক প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়, আহ্বায়কসহ একাধিক বরাতে এবং স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করবে এনসিপি— এই মর্মে সারাদেশ থেকে প্রার্থীদের আহ্বান করা হয়।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, “জামায়াতের সঙ্গে জোট করার সমস্যাসমূহ তুলে ধরা মানেই বিএনপির পক্ষে অবস্থান বোঝায় না। বরং বিভিন্ন বিষয়ে এতদিন ধরে প্রকাশিত ও নানান মহলে প্রশংসিত এনসিপির অবস্থান আমি সঠিক মনে করি ও নিজেকে এই আদর্শের সৈনিক মনে করি। বিএনপি-জামায়াতের যেকোনোটির সঙ্গে জোট এনসিপির সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক পলিসি থেকে সরে গিয়ে তৈরি হচ্ছে।” 

উল্লেখ্য, এর আগে অক্টোবরে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ফেসবুক পোস্টে পিআর বা আনুপাতিক নির্বাচনের দাবিতে জামায়াতে ইসলামীর আন্দোলনকে ‘সুচিন্তিত রাজনৈতিক প্রতারণা’ বলে যে মন্তব্য করেছিলেন, সেটিও সংযুক্ত করে দেন। 

এনসিপি সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জামায়াতের সাথে আসন সমঝোতার এই উদ্যোগে দলের অন্তত ৩০ জন কেন্দ্রীয় নেতা ইতোমধ্যেই লিখিত আপত্তি জানিয়েছেন। এমনকি এই ইস্যুতে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা দল থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। 

কা/আ