চোরাচালানী চক্রের অত্যাচারে বিপাকে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ট্রেন যাত্রীরা
প্রকাশ : 2024-05-30 19:11:34১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
ট্রেনপথে চোরাচালান ব্যাপকহারে বেড়ে যাওয়ায় চোরাচালানীদের অত্যাচারে চরম বিপাকে পড়েছেন ট্রেন যাত্রীরা। ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেন সহ সকল প্রকার ট্রেন এখন চোরাচালানীদের দখলে। চোরাচালানীদের পাশাপাশি দলবদ্ধ হিজরাদের কবলে পড়ে প্রতিদিন নাজেহাল হচ্ছেন ঢাকাগামী ট্রেন যাত্রীরা।
সরেজমিন ট্রেনগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে,ঈশ্বরর্দী, নাটোর ও সান্তাহার জংশন শহর থেকে প্রতিদিন কয়েকশত চোরাচালানী দিনাজপুরের হিলি ষ্টেশন সহ আশেপাশের কয়েকটি ষ্টেশনে যাতায়াত করে এবং ওই ষ্টেশন গুলো থেকে ভারতীয় পন্য নিয়ে আসে। এ সকল পন্যের মধ্যে রয়েছে জিরা সহ বিভিন্ন মসলা, শাড়ি ও ফেনিাসডিল, হেরোইন জাতীয় মাদক দ্রব্য। মালামাল আনতে যাওয়ার সময় বিভিন্ন ষ্টেশন থেকে ট্রেনে উঠার পর চোরাচালানী দলের সদস্যরা বৈধ যাত্রীদের আসন দখল করে নেয়। দিনাজপুর, নীলফামারী, সৈয়দপুর ও পার্বতীপুর থেকে ঢাকা,রাজশাহী এবং খুলনাগামী আন্তঃনগর ও মেইল ট্রেন গুলো হিলি ষ্টেশনের পাশের ষ্টেশন গুলোতে আসা মাত্র শত শত চোরাচালানী বস্তা বোঝাই করে বিভিন্ন ভারতীয় মালামাল নিয়ে ট্রেনে উঠে যাত্রীদের বসার আসন, আসনের নিচের অংশ, মালামাল রাখার জায়গা দখল করে নেয়। হিলি ষ্টেশনে দক্ষিন দিকে লোকাল ট্রেন থামিয়ে দেয় ট্রেনের চালকরা। এ সময় বিজিবি’র উপস্থিতিতে ভারতীয় কালোবাজারী চক্র বাংলাদেশের সীমানায় ঢুকে ট্রেনের পাশে দাড়িয়ে থাকা বাংলাদেশী চোরাচালানদের নিকট মালামাল পৌঁছে দিয়ে যায়। বিজিবি বা জিআরপি পুলিশকে ভারতীয় কালোবাজারীদের কোন প্রকার বাধা দিতে দেখা যায় না। রাজশাহীগামী আন্তঃনগর তিতুমীর ্এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী বকুল জানান,তিনি পার্বতীপুর থেকে সান্তাহার আসছিলেন, ট্রেনটি জামালগঞ্জ ষ্টেশনে থামা মাত্র শতাধিক বস্তা মালামাল নিয়ে চোরাচালানীর দল ট্রেনের বিভিন্ন কামড়ায় উঠে সমস্ত ট্রেন তাদের দখলে নেয়। ট্রেনের আসন থেকে শুরু করে টয়লেট,গেট বস্তা দিয়ে ভরাট করে ফেলে। পরে বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি (লাইনম্যান) একের পর এক এসে চোরাচালানীদের কাছে থেকে টাকা তুলে নিয়ে যায়। প্রতিদিন শত শত চোরাচালানী সদস্য মালামাল নিয়ে ট্রেনে চলাচল করলেও এদের কোন টিকিট কাটতে হয়না। ট্রেন যাত্রীদের নিরবে এ সব দৃশ্য দেখা ছাড়া কিছুই করার থাকেনা। চোরাচালানীদের পাশাপশি ঢাকাগামী সবগুলো ট্রেনে বেড়েছে হিজরাদের চাঁদাবাজী। ঢাকাগামী একতা, দ্রুতযান, নীলসাগর, রংপুর ও লালমনি আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেনে হিজরাদের বেপরোয়া চাঁদাবাজীর কবলে পড়ে যাত্রীদের চরম বিপাকে পড়তে হয়। দ্রুতযান ট্রেনের যাত্রী মিজানুর রহমান বলেন, হিজরারা ৭/৮ জনের দলবদ্ধ হয়ে ট্রেনে উঠে। এরপর তারা বিভিন্ন নোংরা অঙ্গভঙ্গি করে চাঁদা দাবী করে। চাঁদা না দিলে তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এ সকল কাজে পুলিশ বা নিরাপত্তা তাদের কোন বাধা দেয়না। রেলওয়ে পুলিশের এবিষয় গুলো নজর দেয়া প্রয়োজন বলে ট্রেন যাত্রীরা মনে করেন।