গুমের দুই মামলায় হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রীয় খরচে আইনজীবী আমীর হোসেন
প্রকাশ : 2025-12-03 14:09:49১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
গুম-নির্যাতনের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক দুই মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রীয় খরচে (স্টেট ডিফেন্স) নিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে অ্যাডভোকেট আমীর হোসেনকে নিয়োগ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর ) ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক প্যানেলে এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এর আগে, গত ২৩ নভেম্বর গুম-নির্যাতনের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক দুই মামলায় শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রীয় খরচে (স্টেট ডিফেন্স) আইনজীবী হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্নাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি এই মামলায় শেখ হাসিনার পক্ষে লড়বেন না বলে জানানোর পর আদালত এই আদেশ দেন।
এদিকে, মামলার শুনানির নির্ধারিত দিনে আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় জেড আই খান পান্নাকে তলব করেছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। যদিও এর আগে তিনি তার ফেসবুকে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়বেন না বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। নিয়ম অনুযায়ী আদালতে এসে মামলায় আইনজীবী হিসেবে না থাকার বিষয়ে জানানোর কথা থাকলেও তিনি সেটি করেননি। তাই তাকে তলব করা হয়েছিল।
তলবের পরিপ্রেক্ষিতে, প্রায় ২০ মিনিট পরেই সুপ্রিম কোর্ট থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সরাসরি উপস্থিত হন পান্না।
আদালতে জেড আই খান পান্নার বিষয়ে শুনানি শুরু হলে তিনি ট্রাইব্যুনালের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এ সময় আদালত বলেন, আপনি একজন সিনিয়র আইনজীবী। গুমের ঘটনায় দায়ের হওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা মামলায় একবার বলেন থাকবেন আবার বলেন থাকবেন না, আপনার মতো সিনিয়র আইনজীবীর কাছে এমনটি প্রত্যাশা না। গুরুত্বপূর্ণ মামলা হিসেবে আপনি কাজটি ঠিক করেননি। এর পর আদালত আইনজীবী আমির হোসেনকে এই মামলায় নিয়োগ দেন।
টাস্কফোর্স ফর ইন্টারোগেশন সেলে (টিএফআই সেল) গুম করে রাখার ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় শেখ হাসিনাসহ মোট ১৭ জন আসামি। এর মধ্যে ১০ জন গ্রেফতার আছেন। তারা হলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে), লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম।
আসামিদের প্রথম সাতজন আওয়ামী লীগের শাসনামলে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক হিসেবে এবং শেষের তিনজন র্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাদের আজ সকাল সোয়া ১০টার দিকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়।
এ মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ সাত আসামি পলাতক।
অন্যদিকে জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে (জেআইসি) গুম করে রাখার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের আরেকটি মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন আসামি গ্রেফতার রয়েছেন। তারা হলেন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সাবেক তিন পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী। এ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ ১০ আসামি পলাতক।
কা/আ