খালেদা জিয়া জাতির একজন অবিসংবাদিত নেতা: ফখরুল
প্রকাশ : 2021-12-13 15:21:51১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া জাতির একজন অবিসংবাদিত নেতা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ১৯৭১ সাল থেকেই বেগম খালেদা জিয়া এদেশের মানুষের প্রতি দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসনের মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে আয়োজিত সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদ এক মানববন্ধনে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশের শত্রুরা যখন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে হত্যা করেছিল তখন আওয়ামী লীগসহ বিএনপির শত্রুরা মনে করেছিল বোধহয় বিএনপি শেষ হয়ে গেল। বোধহয় এদেশের স্বাধীনতাকামী মানুষেরা শেষ হয়ে গেল। বোধহয় যারা সত্যিকার অর্থে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ দেখতে চায় তাদের সেই স্বপ্ন ধ্বংস হয়ে গেল। কিন্তু দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সেদিন জিয়াউর রহমানের হাত থেকে এই পতাকা তুলে নিয়েছিলেন। সেই পতাকা হাতে নিয়ে বাংলাদেশের পথে-প্রান্তরে, গ্রামগঞ্জে গণতন্ত্রের গান গেয়ে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছেন। তিনি তখন মানুষকে জাগিয়ে তুলে দীর্ঘ নয় বছর সংগ্রাম করে স্বৈরাচার এরশাদের পতন ঘটিয়ে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তারপরে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার জন্য তিনি সংসদীয় গণতন্ত্র চালু করেছিলেন। তারও পরে এদেশের শত্রুরা বাংলাদেশকে আবারো অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করেছে এবং ১৭৩ দিন হরতাল করেছে। তখন জনগণের মনের ভাষা ও বাস্তবতাকে বুঝতে পেরে তাদের সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া মঈন উদ্দিন- ফখরুদ্দীনের সময়ও গণতন্ত্রের জন্য নীরবে সংগ্রাম করেছেন। সেদিন শেখ হাসিনার মুক্তির জন্য তিনি বিবৃতি দিয়েছেন। সেই নেত্রীকে আজকে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাকে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে তাকে আটক রাখা হয়েছে। আমি এর আগেও বলেছি এই আটক করে রাখাটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা না। এটা সামগ্রিক চক্রান্তের একটি বহিঃপ্রকাশ। ১/১১ তে বিরাজনীতিকরণের যে চক্রান্ত হয়েছিল সেই পরিকল্পনাকে বাস্তবায়ন করতে তারা এগিয়ে যাচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে দেশনেত্রী অত্যন্ত অসুস্থ। এত অসুস্থ যে ডাক্তাররা বলছেন, তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। এখন যে চিকিৎসা করলে আল্লাহ তায়লা আবার তাকে ফিরিয়ে দিতে পারেন সেই চিকিৎসা এই দেশে নেই। তাকে বিদেশে পাঠানো দরকার। কিন্তু এই সরকার তাদের জনগণের সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। সরকার জনগণ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তারা বেগম জিয়াকে বাইরে যেতে দিতে চায় না। একটি আদেশ দিয়েছে যেটিতে শর্তসাপেক্ষে তাকে বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিতে বলা হয়েছে। এটি সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। সে কারণেই সরকার তাকে বাইরে চিকিৎসার জন্য যেতে দিতে চায় না।
তিনি বলেন, আমরা প্রায় এক মাসের বেশি সময় ধরে আন্দোলন করছি। আমরা গণঅনশন করেছি, রাজপথে সমাবেশ করেছি। আমরা প্রতিদিন সারাদেশে বিভিন্ন বিভাগীয় শহরগুলোতে সমাবেশ করেছি। আজকে পেশাজীবিদের আমি ধন্যবাদ জানাই। আমি তাদের বলতে চাই আপনাদের হাত ধরেই পরিবর্তন সম্ভব।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আর বিলম্ব নয়, জনগণ বেরিয়ে আসছে। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এ সরকারকে বাধ্য করতে হবে। আজকের আন্দোলন শুধু খালেদার মুক্তির জন্য নয়, জাতির মুক্তির আন্দোলন। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সব রাজনৈতিক দলের ঐক্যের মধ্য দিয়ে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করবো।’
বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শওকত মাহমুদের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, গণশিক্ষা-বিষয়ক সম্পাদক সেলিম ভূঁইয়া, সহ-তথ্যবিষয়ক সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী, সহ-প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম বক্তব্য দেন।